শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৫১ পূর্বাহ্ন

বাজেটের স্বচ্ছতায় বাংলাদেশের অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ায়ও সর্বনিম্নে

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০

আন্তর্জাতিক সংস্থার জরিপ
স্বচ্ছতা, জনসাধারণের অংশগ্রহণ ও তদারকি-এ তিনটি স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে গণতান্ত্রিক একটি সরকারের বাজেটের জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয়। আন্তর্জাতিক সমীক্ষা বলছে, বাজেটের জবাবদিহিতা নিশ্চিতে বাংলাদেশের অবস্থান একেবারেই তলানিতে। এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যেও বাংলাদেশের স্কোর সবচেয়ে কম।
২০০৬ সাল থেকেই বিশ্বের শতাধিক দেশের বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন নিয়ে জরিপ চালিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইন্টান্যাশনাল বাজেট পার্টনারশিপ। বিশ্বের ১১৭টি দেশের বাজেটের ওপর ‘ওপেন বাজেট সার্ভে’ চালিয়ে প্রতিষ্ঠানটি যে ফলাফল দিয়েছে তা বাংলাদেশের জন্য খুবই হতাশার। এক্ষেত্রে ১১৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান হয়েছে ৭৯তম। এমনকি বাজেটের জবাবদিহিতা নিশ্চিতের মৌলিক তিনটি স্তম্ভের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্কোর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যেও সর্বনিম্ন। ২০১৯ সালে ১০০ স্কোরের মধ্যে বাংলাদেশ পেয়েছে মাত্র ৩৬। অথচ এক্ষেত্রে আফগানিস্তানের স্কোর ৫০। এক্ষেত্রে ভারতের স্কোর ৪৯, নেপালের ৪১, পাকিস্তানের ৪৪ এবং শ্রীলঙ্কার ৪৭। ওপেন বাজেট সার্ভের প্রাপ্ত স্কোরের দিক থেকে বাংলাদেশের স্কোর বৈশ্বিক গড়ের তুলনায়ও কম। এক্ষেত্রে বৈশ্বিক গড় স্কোর হলো ৪২। জরিপের ফলাফল বলছে গত কয়েক বছরে বাজেটের জবাবদিহিতা নিশ্চিতে বাংলাদেশের স্কোর ধারাবাহিকভাবে অবনমন হয়েছে। ২০১৫ সালে ওপেন বাজেট সার্ভেতে বাংলাদেশের স্কোর প্রাপ্ত স্কোর ছিল ৫৬। ২০১৭ সালে এ স্কোর ৪১ এ নেমে আসে। আর ২০১৯ সালে তা আরো কমে ৩৬ এ নেমে এসেছে।
প্রতি দুই বছর পরপর ওপেন বাজেট সার্ভের ফলাফল প্রকাশ করে ইন্টান্যাশনাল বাজেট পার্টনারশিপ। ২০১৯ সালে ছয়টি মহাদেশের ১১৭টি দেশের বাজেট ব্যবস্থার ওপর জরিপ চালানো হয়। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, একটি সরকারের বাজেটের স্বচ্ছতা আটটি সমায়োপযোগী ও বিস্তৃত দলীল প্রকাশের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়। এগুলো হলো, প্রাক-বাজেট বিবৃতি, নির্বাহীর বাজেট প্রস্তাব, প্রণীত বাজেট, নাগরিক বাজেট, বার্ষিক প্রতিবেদন, মধ্যমেয়াদী পর্যালোচনা, বছরের শেষ প্রতিবেদনএবং নিরীক্ষা প্রতিবেদন। এসব দলীলের উপর ভিত্তি করে একটি দেশের বাজেটের স্বচ্ছতা প্রকাশ পায়। এছাড়া বাজেটের তদারকী, আইনসভা, জাতীয় নিরীক্ষা অফিস এবং স্বতন্ত্র আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মতো আনুষ্ঠানিক তদারকি সংস্থাগুলোর ভুমিকা এবং কার্যকরিতার উপর ভিত্তি করেই বাজেটের জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয়। কোন পন্থায় জনগণ থেকে অর্থ সংগ্রহ করবে এবং কী পন্থায় সংগৃহীত অর্থ ব্যয় হবে, সেটি একটি গণতান্ত্রিক দেশের নাগরিকদের সঙ্গে রাষ্ট্রের সম্পর্ক নির্ধারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জনসম্পদ একত্রিকরণ ও ব্যয়ের প্রক্রিয়াই হলো বাজেট। আর বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের অন্যতম স্তম্ভ হলো জনগণের অংশগ্রহণ। এ প্যারামিটারে ২০১৯ সালে বাংলাদেশের বাজেট পেয়েছে ১০০ স্কোরের মধ্যে মাত্র ১৩। জনগণের অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে আছে নেপাল, এক্ষেত্রে দেশটির স্কোর ২২। শ্রীলঙ্কা ১৭ ও আফগানিস্তান ১৫ স্কোর পেয়েছে এক্ষেত্রে। তবে বাজেট প্রণয়নে জনগণের অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের চেয়েও খারাপ পরিস্থিতি ভারত ও পাকিস্তানের।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com