বগুড়া জেলার আদমদীঘি উপজেলার প্রায় সর্বত্র ও প্রতিটি বাড়ির আঙ্গিনায় সুমিষ্টি আম গাছের ডগায় ডগায় সমারোহ ঘটেছে মুকুলের। সেই মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে বাড়ীর সবার মনে দিয়েছে নতুন নতুন স্বপ্নের দোলা। আম গাছে আগাম মুকুল জানান দিচ্ছে মধু মাস সমাগত। আদমদীঘি কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক মাস আগেই আবহাওয়াগত ও জাতের কারণেই মূলত আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে। তবে দুই এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিটি গাছেই পুরোপুরি ভাবে মুকুল ফুটতে শুরু করবে বলে জানা গেছে। যে সব গাছে আগাম মুকুল আসতে শুরু করেছে তারা পরিচর্যাও শুরু করেছেন। বড় ধরণের কোনো প্রাকৃতিক দূর্যোগ না ঘটলে এ বছর আমের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন আম চাষি ও বাগান মালিকরা। আম বলতে এক সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহীকেই বোঝাত। এখন অবস্থা ভিন্ন। বগুড়ার পশ্চিমাঞ্চলে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে প্রায় সব জাতের আমের উৎপাদন হচ্ছে। লাভজনক হওয়া প্রতি বছর কৃষি জমিতে বাড়ছে আমের আবাদ।তবে আমের রাজার দেশ এখনও চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী। দেশ জুড়ে যত আম বাগান তার বেশি ভাগ আম বাগান রয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী। বর্তমান যে পরিমান আমের মুকুল আসছে তার কিছু নষ্ট হয়ে যায় তার কারন অতি খরা। প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করেই আম গাছকে টিকতে হয় ফলের জন্য। প্রবাদে ও লোক কথায় আছে“ আমের ক্ষয়, তেঁতুলের কিছু নয়” অর্থাৎ অতি খড়ায় মুকুল ঝরে যায়। তেঁতুলের কিছুই হয় না। তাই মুকুল যতই ঝরুক শেষ পর্যন্ত যত টুকু টিকে থাকে তাতেই আমের ভারই সইতে পারে না অনেক গাছ। আম বাগানে দেখা যায় অপূর্ব দৃশ্য। অনেক উঁচু গাছেরও মাটি থেকে ২/৩ ফুট ওপরেই ঝুলে থাকে থোকা থোকা আম। কখনও শাখায় বাঁশের ঠেকা দিতে হয়। হাতের নাগালের এই আম কেউ যেন ছেঁড়তে না পারে। আমের মুকুলই জানান দেয় ফলন কেমন হবে। আদমদীঘি উপজেলার আনোয়ার হোসেন মন্ডল নামের এক আম বাগানের মালিক জানান, ঝড় ও শিলা বৃষ্টি না হলে আশা করা যাচ্ছে এবারও আমের ফলন ভালই হবে, আমের মুকুল ভালো এসেছে বাগানে। আম্রমঞ্জুরির শুভ বার্তা বয়ে আনবে সবারই মনে। খনার বচনে আছে “আমে ধান, তেঁতুলে বান”। প্রকৃতির এই আম্রমঞ্জরি বলে দেবে কেমন যাবে এ বছর। এ বিষয়ে উপজেলার কৃষি অফিসার মিঠুচন্দ্র অধিকারী জানান, মুকুল আসার সাথে এবং মুকুল ধরার সময় প্রয়োজনীয় স্প্রে করা গেলে আমের মুকুল সংরক্ষণ এবং পোকার হাত থেকে আমকে রক্ষা করা সম্ভব। কৃষি অফিস থেকে আম চাষে আগ্রহী কৃষকদের সকল প্রকার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। প্রাকৃতি দুর্যোগ, শীলা বৃষ্টি কিংবা ঝড় না হলে এ বছর ভালো আমের ফলন হবে।