গোটা দেশ কারাগারে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে সদ্য কারামুক্ত বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ছোট কারাগার থেকে বৃহত্তর কারাগারে প্রবেশ করেছি।
তিনি বলেন, সারাদেশ এখন কারাগারে পরিণত হয়েছে। কোথাও মানুষের কোনো অধিকার নেই। মানুষের ভোটের অধিকার নেই, কথা বলার অধিকার নেই। গণতন্ত্রের মুক্তি মিললেই মানুষ সব অধিকার ফিরে পাবে। সাড়ে চার মাসেরও বেশি সময় কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পেয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন।
১৪০ দিন কারাভোগ শেষে গতকাল মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্ত হন রিজভী। এসময় বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী কারা ফটকের সামনে ফুল দিয়ে তাকে অভ্যর্থনা জানান। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তিনি।
রিজভী বলেন, ছোট কারাগার থেকে বৃহত্তর কারাগারে প্রবেশ করেছি। আমাকে মানুষ এতটা ভালোবাসে তা মুখে বলে প্রকাশ করা যাবে না। সবাইকে ধন্যবাদ। এসময় দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান রিজভী।
বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ ঘিরে গত ৭ ডিসেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে দলের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। পরে বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযান চলাকালে রুহুল কবির রিজভীসহ চার শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ।
পরদিন ৮ ডিসেম্বর পল্টন, মতিঝিল, রমনা ও শাহজাহানপুর থানায় পৃথক চারটি মামলা করে পুলিশ। এরমধ্যে পল্টন ও মতিঝিল থানার মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিজভীকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে আরও বিভিন্ন মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার কারামুক্তির পর কারা ফটকের সামনে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী রিজভীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এসময় তার স্ত্রী আরজুমান আরা বেগম সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও কারা ফটকের সামনে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
রুহুল কবির রিজভী ঈদের আগেই ৫০ মামলার সবকটিতে জামিন পান। সবশেষ গত ১৮ এপ্রিল মানহানির অভিযোগে একটি মামলায় গোপালগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। তবে সেই জামিননামার মূল কপি কারাগারে না পৌঁছানোয় ঈদের আগে তার কারামুক্তি মেলেনি। মঙ্গলবার বিএনপির এই অন্যতম মুখপাত্রের জামিননামার মূল কপি কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছালে আনুষাঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষে রিজভীকে কারামুক্তি দেওয়া হয়।