বর্তমান সময়ে বিনোদনের সংজ্ঞা পাল্টে গেছে বলে মনে করেন বরেণ্য সংগীতশিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদী। সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে বর্তমান সময়ের বিনোদন প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে শাহরুখ খান অভিনীত ‘পাঠান’ সিনেমার গানের উদাহরণ টেনে কিংবদন্তি এই সংগীতশিল্পী বলেন, ‘পাঠান’ নামক একটি সিনেমা হয়েছে। সেখানে একটি গান আছে অথবা একটি নৃত্য আছে। নিশ্চয়ই আপনারা অনেকেই শুনেছেন এটি, ঝুমে জো পাঠান। দেখেন, আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এটি কি গান না নৃত্য। কোনটা? গান তো বটেই।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে এটি একটি গান, তবে নৃত্যনির্ভর। সে নৃত্যও যদি খুব উচ্চমার্গের কিছু হতো, শৈল্পিক সুষমা থাকত, তাহলে আমার কোনো আপত্তি ছিল না। কারণ, গানের সঙ্গে নৃত্য বহু পুরোনো। নৃত্য, গীত, বাদ্য—এই তিনটা নিয়েই সংগীত।
এখন গান ও নৃত্য নামের যা হচ্ছে, সেটি মোটেও তা নয় বলে জানান সৈয়দ আব্দুল হাদী। তিনি নায়ক ও নায়িকার নৃত্য প্রসঙ্গে বলেন, ‘এখন যেটা হচ্ছে, সেটি নায়কের ধনুষ্টংকার নৃত্য, নায়িকার আদি রসাত্মক অঙ্গভঙ্গি। এটিকে আমি নৃত্যও বলতে রাজি নই। এখন কোনটি শুনব আমরা? এসব গান শুনব?
‘পাঠান’ এর গানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, গান হিসেবে এটি এমন কোনো গান নয়, কিন্তু আমার মনে হয়, গান হিসেবে এটি সর্বকালের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে জনপ্রিয়তায়। এখন বিনোদন মানেই হচ্ছে আদিরস। স্নেহরস, বাৎসল্য রস, বীররস, করুণরস—এসব রস এখন উধাও হয়ে গেছে। এখন সব আদিরস। কথায় কথায় ওই অনুষ্ঠানে আব্দুল হাদী আরো বলেন, আপনারা একটু চিন্তা করলেই দেখবেন, ওখানে হয় আছে ধনুষ্টংকার নৃত্য, অর্থাৎ নায়কেরা বাঁকা হয়ে যান। আমরা শুনেছি, চিকিৎসকেরা বলতেন, ধনুষ্টংকার রোগে নাকি বাঁকা হয়ে যায় এবং নায়িকার অতি সংক্ষিপ্ত পোশাক–পরিচ্ছদ পরে নানা রকম অঙ্গভঙ্গি করার মধ্য দিয়ে আদিরসের সৃষ্টি হয়। এটি এখন বিনোদন। বিনোদনের অর্থ এখন তা–ই। কিন্তু আমাদের সময় বিনোদন অর্থ তা–ই ছিল না। বিনোদনের সংজ্ঞা পাল্টে গেছে।