বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন দেখে হাওয়র অঞ্চল থেকে বাস্তবে অভিজ্ঞ চাষাবাদকারী তিন কৃষককে এনে চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল নোমান বিস্তীর্ণ ডোবা নালা এবং খালে কচুরিপনার দিয়ে ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ শুরু করেছেন। গতকাল উপজেলার হালিমাবাদ গ্রামে ৩০জন কৃষককে হাওয় অঞ্চলের অভিজ্ঞ কৃষক দ্বারা প্রশিক্ষণ দিয়ে চাষ বিষয়ক কৌশল শীর্ষক প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল নোমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বার্তা উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে হবে। তাই এক ইঞ্চি জমিও খালি রাখা যাবে না।তার বার্তাকে মাথা রেখে কৃষি অফিসারের সার্বিক সহযোগিতায় চরফ্যাশনে ঘুরে দেখেছি কচুরিপানা বহুখাল জুড়ে দখল করে রেখেছে। এতে খালে বা ডোবাতে কচুরিপানার জন্য মাছ চাষ এবং ইরি চাষের ব্যবস্থা করতে পারছে না কৃষক। কোথায় বা কোন অঞ্চলে কচুরিপানা ব্যবহার করে ভাসমান পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা হয় খুজঁতে খুজতে দীর্ঘ ১বছর গবেষনার পর পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ থানার কৃষি অফিসের মাধ্যমে বলদিয়া ইউনিয়ন থেকে ভাসমান পদ্ধতিতে চাষবাদ কারী অভিজ্ঞ কৃষক মোঃ শাহাদাত হোসেন,মোঃ মনিরুল ইসলাম,জহিরুল ইসলামকে তাদের যাতায়াত সহ সকল খরচ বহন করে চরফ্যাশন নিয়ে আসি। প্রথমে হালিমাবাদ গ্রামের ৩০জন কৃষককে প্রশিক্ষণ দিয়ে বাস্তবে ভাসমান পদ্ধতিতে বিষমুক্ত সবজি চাষাবাদ করতে কাজ শুরু করি।এতে এই অঞ্চলের খাল বা নদীর পানি সব সময় কচুরিপানা মুক্ত থাকবে। খালে মাছ চাষ করা বা মাছ ধরা সহজ হবে। চরফ্যাশনে হাওয়র অঞ্চলের কৃষক শাহাদাত হোসেন বলেন, আমাদের এলাকায় শুধু এক সিজন ধান চাষ হয়। বাকি সময় পানিতে ডুবে থাকে। আমরা কচুরিপানা চাষ কারে ছোট ছোট ডিঙি নৌকা দিয়ে ভাসমান পদ্ধতিতে বিষমুক্ত সবজি চাষ করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করি। এক একটি বেড ৪ফুট চওড়া (প্রস্থ্য) এবং ৩০ফুট লম্বা(দৈর্ঘ্য)আকারে তৈরি করি। এই পদ্ধতিতে বছরের হাইব্রিড সবজি ৩বার এবং দেশী সবজি ২বার লাগিয়ে লাভবান হওয়া য়ায়। এতে এই দেশের জমিও বাচবে,সার এবং পানি বিহীন বিষমুক্ত সবজিও পাবে। ওই সময় উপস্থিত চরফ্যাশন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওমর ফারুক আমাদেও প্রতনিধিকে বলেন, ১বছর পূর্বে এই এলাকা কৃষক আকতার মহাজনের মালোচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ দেখাতে নির্বাহী কর্মকর্তাকে নিয়ে আসি। কৃষকের একটি দাবী ছিল খাল আছে কিন্তু কচুরিপানার কারণে তারা ইরি চাষাবাদ করতে পারছে না। ই্উএনও স্যার খালের কচুরিপানা কৃষিকাজে ব্যবহারের উদ্যোগ নেয়। কচুরিপানা সরাসরি জৈব্য সারের কাজ করে। তাই খালে কচুরিপানার মধ্যে ভাসমান পদ্ধতিতে চাষাবাদের উদ্যোগ নেই। খালের মধ্যে কচুরিপানা দিয়ে ভেটে তৈরি করে বিষমুক্ত সবজি চাষাবাদ করতে উদ্বুদ্ধ করি। খালের সকল কচুরিপানা দিয়ে ভেট তৈরি করায় অবশেষে কচুরিপানা সম্পদে পরিণত হয়েছে। কৃষক অতিরিক্ত জমি পেল, সার এবং পানি বিহীন চাষাবাদ করে বিষমুক্ত সবজি চাষ উৎপাদন করতে স্বক্ষম হয়েছে। আজকে হাওয়র অঞ্চলের কৃষক দিয়ে প্যাকটিক্যাল কচুরিপানার মাধ্যমে ভাসমান ভেট করে দেখানো হয়েছে। একসময় চরফ্যাশনের এই প্রশিক্ষিত ৩০জন কৃষক দিয়ে পুরো উপজেলা ট্রেইনার হিসেবে আমরা কাজ করাবো।