নদী ভাঙনরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে প্রায় ৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে নদীর পাড়ের প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকায় ব্লক নির্মাণের কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নদীর পাড়ের পূর্বের উঁচু মাটি কেটে নিচু করে ব্লক বসানোর ফলে বর্ষা মৌসুমে নদীপাড়ের বসত বাড়ি পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন ভূক্তভোগীরা। একইসাথে ঠিকাদারের লোকজনের বিরুদ্ধে নদী পাড়ের কাটা উঁচু মাটি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি বরিশালের গৌরনদী উপজেলার আড়িয়াল খাঁর শাখা পালরদী নদীর হোসনাবাদ ও সাহেবেরচর এলাকার। সরিকল ইউনিয়নের হোসনাবাদ ও সাহেবেরচর গ্রামের পালরদী নদী পাড়ের বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, আড়িয়াল খাঁর শাখা পালরদী নদীর ভাঙনরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে প্রায় ৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে নদীপাড়ে ব্লক নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। নির্মাণ কাজটি তিনটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বাস্তবায়ন করছে। কাজের শুরু থেকেই নিন্মমানের সামগ্রী দিয়ে ব্লক নির্মাণ করা হয়। অভিযোগে আরও জানা গেছে, অল্প ব্লক দিয়ে কাজ শেষ করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের উদাসিনতায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বেচ্ছাচারিতায় নদীপাড়ের উঁচু মাটি কেটে নিচু করে ব্লক বসানো হচ্ছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে নদীপাড়ের বসতবাড়ি পানিতে ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নদীপাড়ের বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, নদীতে গোসল এবং গৃহস্থলি কাজের জন্য ব্লক দিয়ে ঘাটলা নির্মাণ করতে প্রত্যেকটি ঘাটলা বাবদ সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে পাঁচ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছে ঠিকাদারদের লোকজনে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাটপর্যায়ের দায়িত্বরত কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজনের যোগসাজসে সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে এ টাকা আদায় করা হয়েছে বলেও নদীপাড়ের বাসিন্দারা অভিযোগ করেন। তবে সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া এবং নিন্মমানের সামগ্রী দিয়ে ব্লক নির্মানের বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাঠপর্যায়ের দায়িত্বরতা। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের গৌরনদীর উপ-সহকারী প্রকৌশলী শাহরিয়ার তানভীর ক্যামেরা ও মুঠোফোনে কথা বলতে রাজি না হওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন বলেন, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশিষ কুমার বলেন, অভিযোগগুলো যাচাই-বাছাই করে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হবে। পাশাপাশি জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায়ও বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।