ঈদুল আজহা উপলক্ষে মিরসরাই উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভা কোরবানির জন্য খামারে মোটাতাজা করা হচ্ছে প্রায় ৬০ হাজার গবাদি পশু। এর মধ্যে গরুর সংখ্যা রয়েছে ৪৩ হাজার ৫শ ৬৫টি এবং ১১ হাজার ৫শ ৬৩টি মতো ছাগল এছাড়াও ৫ হাজার ৬শ ১১টি মতো মহিষ রয়েছে। বাড়তি লাভের আশায় খামারের পাশাপাশি বাড়িতে বাড়িতে পশুর বাড়তি যতœ আর লালন পালনে ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারি ও প্রান্তিক কৃষকেরা। উপজেলা চাহিদার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন হাটের চাহিদা পূরণ করে এখানকার গবাদি পশু। এই দিকে, দফায় দফায় বেড়েই চলছে গো-খাদ্যের দাম। খামারিদের এখন প্রতিদিন গো-খাদ্যে খরচ বেড়েছে ২৫ থেকে ৩০ ভাগ। ন্যায্য মূল্যে গরু বিক্রি করতে না পারলে খামারিদের লোকসান গুনতে হবে। গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধিতে কোরবানির পশুর দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া সীমান্ত এলাকা হওয়ায় ভারতীয় গরুর আধিক্য অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বেশি। ভারতীয় এসব গরুর কারণে প্রান্তিক খামারিরা লোকসান গুনতে হবে। প্রচুর পরিমাণে পাচার হওয়া ভারতীয় গরু সীমান্ত দিয়ে অবাধে ডুকছে। উপজেলা প্রাণি সম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় প্রায় ১ হাজার ২শ ৬০টি ছোট বড় খামারি বিভিন্ন প্রজাতির গরু খামার এবং ছাগল ও ভেড়া ৩৩টি খামারে পশু মোটাতাজা করা হয়েছে। এতে খামারে ৪৩ হাজার ৫শ ৬৫টি গরু এবং ১১ হাজার ৫শ ৬৩টি মতো ছাগল এছাড়াও ৫ হাজার ৬শ ১১টি মতো মহিষ মোটাতাজা করা হয়েছে। মোটাতাজাকরণে খামারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে কোনো ক্ষতিকর রাসায়নিক খাবার যাতে ব্যবহার না করে এজন্য প্রচারণা চালানো হয়েছে। উপজেলা হিঙ্গুলী ইউনিয়নে অবস্থিত এসআইবি এগ্রো সত্ত্বাধিকারী সাইফুল ইসলাম বাপ্পী বলেন, এ বছর কোরবানির জন্য ১৫০টি ষাড় প্রস্তুত করেছেন। তার খামারে লাখ টাকা থেকে প্রায় আট লাখ টাকা দামের পশু মোটাতাজা করা হয়েছে। উপজেলার মায়ানী ইউনিয়নের অবস্থিত বিসমিল্লাহ এগ্রো ফার্মের স্বত্ত্বাধীকারী আবুল হোসেন বাবুল বলেন, তার খামারে দেশি-বিদেশি মিলে শতাধিক পশু মোটাতাজা করা হয়েছে। তার খামারে বেশিরভাগ পশু খামার থেকেই বিক্রি হয়ে থাকে। এছাড়া তারা সারা বছরই পশু মোটাতাজা করে বিক্রি করে থাকেন। তিনি আরো জানান, আমাদের খামারিদের উন্নতমানের ঘাসের আবাদ করতে হবে। এতে গো-খাদ্যের খরচ বেশ কমে যাবে। পাশাপাশি ঘাস গরুর স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। যেসব খামারি শুধু ভূসি, খৈল, খড়ের মতো গো-খাদ্যের ওপর নির্ভরশীল তাদের গরু পালন করে এবারে লাভবান হওয়া খুবই কষ্টসাধ্য হবে। উপজেলা করেরহাট ইউনিয়নের কয়লা বাজারের ইজারাদার লিটন বলেন, এখনও কোরবানির হাট জমেনি। বাইরের ব্যাপারীও তেমন আসছে না। কোরবানির ২ থেকে ৩ সপ্তাহের মধ্যে মানুষ গরু ক্রয় করে বেশি। এখনও হাট জমে উঠেনি। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকতা ডা: জাকিরুল ফরিদ বলেন, এই বছর গো-খাদ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে বিপাকে আছে অনেক খামারী। উপজেলায় ১ হাজার ২শ ৬০টি ছোট বড় খামারি বিভিন্ন প্রজাতির পশু মোটাতাজাকরণ করা হচ্ছে। উপজেলার খামার পরিদর্শন করে খামারিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শসহ ওষুধপত্র দিচ্ছি। তিনি আরও বলেন, উপজেলা ৬টি স্থায়ী ও ১২টি অস্থায়ী পশুর হাটের মাধ্যমে এসব গবাদি পশু বিক্রি করা হবে।