প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ ২ আগস্ট রংপুর সফরকালে জেলায় ২৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারসহ পাঁচটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। প্রায় ১২৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং রংপুর সিটি করপোরেশনের অধীনে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হবে। রংপুর জেলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান বাসসের সাথে তার কার্যালয়ে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২ আগস্ট রংপুর জেলা সফর করবেন। তিনি রংপুর জিলা স্কুল মাঠে বিশাল জনসভা থেকে প্রায় ১২৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও পাঁচটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প।
রংপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারের প্রকল্প পরিচালক (উপ-সচিব) মো. আব্দুল হালিম বাসসকে বলেন, ‘৪১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ একর জমির ওপর ১০ তলা বিশিষ্ট নভোথিয়েটারটি নির্মিত হচ্ছে। রংপুর শহর থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে রংপুর উপশহরে নির্মিত হতে যাওয়া নভোথিয়েটারটি এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে বলে জানান তিনি। হালিম বলেন, ‘এটি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। ছাত্ররা মহাকাশ বিজ্ঞান সম্পর্কে সহজে জানতে পারবে এবং বিজ্ঞান পড়তে উৎসাহিত হবে।’ সরকার ইতোমধ্যে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার নির্মাণ করেছে এবং বরিশাল, রংপুর, রাজশাহী ও খুলনায় আরো চারটি নির্মাণ করা হচ্ছে। রাজশাহীতে নভোথিয়েটারের কাজ প্রায় শেষ এবং এক-দুই মাসের মধ্যে চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইতোপূর্বে দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রতিটি বিভাগে একটি করে নভোথিয়েটার হবে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রকল্পগুলো হলো- শেখ রাসেল মিডিয়া সেন্টার, শেখ রাসেল ইনডোর স্টেডিয়াম, শেখ রাসেল সুইমিং পুল, রংপুর পালিছড়া স্টেডিয়াম, বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স। রংপুর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন প্রকল্পগুলো হলো- রংপুর সিটি সেন্ট্রাল বাস টার্মিনাল, রংপুর সিটি অ্যাসফল্ট প্ল্যান্ট ও স্টোর ইয়ার্ড।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রকল্পগুলো হলো- নলেয়া নদী পুনঃখনন (১৯.১৪ কিলোমিটার), আলাইকুমারী নদী পুনঃখনন (১৯.২৪ কিলোমিটার) নৈমুল্লা বিল পুনঃখনন (১৪.৫৭ একর), চিকলী বিল পুনঃখনন (১৯.৬৩ একর), ভারারদহ ও পাটোয়া কামরী বিল পুনঃখনন (২২.৮৯ একর)।
স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রকল্পগুলো হলো- পীরগাছা উপজেলা চৌধুরানী জিসি থেকে শঠিবাড়ী আরএন্ডএইচ পর্যন্ত রাস্তার উন্নয়ন কাজ, পীরগাছা উপজেলা ভেন্ডাবাড়ী থেকে খালাশপীর জিসি পর্যন্ত রাস্তার সংস্কার কাজ, কাউনিয়া উপজেলা টেপামধুপুর জিসি থেকে রাস্তার পুনর্বাসন কাজ। মিঠাপুকুর উপজেলার গোপালগঞ্জ ঘাটে ঘাঘট নদীর উপর ৯৬ মিটার সেতু নির্মাণ, গঙ্গাচড়া উপজেলার বুড়িরহাট জিসি-কাকিনা আরএন্ডএইচ সড়কে ৪০ মিটার সেতু নির্মাণ এবং কাউনিয়া উপজেলার পল্লীমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ কাজ।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতাধীন প্রকল্পগুলো হলো- রংপুর মেডিকেল কলেজ বহুমুখী ভবন, রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় হেলে া ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, রংপুর বিভাগের বিভাগীয় স্বাস্থ্য স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয়, পীরগঞ্জে মাথরগঞ্জ ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, রংপুরে উপজেলা, রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় ১৪ নং চতরা ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র্র, রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ ইউনিয়নে ১০ শয্যা বিশিষ্ট বেগম রোকেয়া আধুনিক হাসপাতাল এবং রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় খালাশপীর ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র। .
অন্য প্রকল্পগুলো হলো- পীরগঞ্জ উপজেলার ২৫৪০ মিটার নদীর তীর সংরক্ষণ এবং রংপুর কারখানা ও সংস্থা পরিদর্শন অফিস ভবন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয়ের রংপুর আ লিক কার্যালয়, রংপুর জেলার বিট্যাক সেন্টার, রংপুর মেডিকেল কলেজের মহিলা হোস্টেল এবং বিএমডিএ’র আ লিক কার্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
‘বধূবরণে’ প্রস্তুত রংপুর
নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে রংপুর মহানগরীকে। উপলক্ষ্য আজ বুধবার (২ আগস্ট) বিকেল ৩টায় রংপুর জিলা স্কুল মাঠের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিভাগীয় জনসভায় যোগদান। আয়োজকরা জানিয়েছেন, জনসভা হবে জনসমুদ্র, যেখান থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। চলছে শেষ মুহূর্তের মাঠ ও মঞ্চ সাজানোর কাজ। রংপুর মহানগরীর ২১টি পয়েন্টে করা হয়েছে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। এক হাজারের বেশি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। প্রবেশ রুটগুলোতে সন্দেহভাজন যানবাহন ও ব্যক্তিদের তল্লাশি করা হচ্ছে। সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে জনসভায় আসা-যাওয়া নির্বিঘœ করতে চায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এদিকে প্রায় এক যুগ পর রংপুরের পীরগঞ্জের লালদীঘির পুত্রবধূ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসছেন রংপুরে। বধূবরণে আয়োজনের বিন্দুমাত্র কমতি নেই কোথাও। উজ্জীবিত আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা। প্রধানমন্ত্রীকে ঘিরে নেতা-কর্মীদের মধ্যে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসের ঢেউ বইছে। দফায় দফায় হচ্ছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা লীগসহ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর বর্ধিত সভা। মিছিলে মিছিলে একাকার নগরী। চলছে বর্ণিল প্রচারণা। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে পুরো নগরী। নগরীর বৈদ্যুতিক পিলার, ল্যাম্পপোস্ট, দেয়াল, গাছ কোথাও ফাঁকা নেই। ধুয়েমুছে চকচকা করা হয়েছে রাস্তাঘাট, রোড ডিভাইডার। চলছে বাদ্যযন্ত্র ও গানের তালে নেচে-গেয়ে মাইকিং। জনসভাস্থল ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংক মোড়, জিলা স্কুল মোড়, ডাকঘর মোড়, সুরভি উদ্যান মোড়, পুলিশ লাইনস মোড়, সিটি বাজারসহ বিভিন্ন পয়েন্টে মাইক সাঁটানো হয়েছে। প্রতিদিনই কেন্দ্রীয় নেতারা আসছেন। শেষ মুহূর্তে মাঠ পরিদর্শনসহ বিভিন্ন প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন তারা। রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও স্বেচ্ছাসেবক উপ-কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন , আমরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছি। পাড়া-মহল্লায় উঠানবৈঠক থেকে শুরু করে সভা-সমাবেশ করা হয়েছে। গ্রামেগঞ্জে, শহরে, বন্দরে খ- খ- মিছিল করা হয়েছে। পুরো বিভাগজুড়ে ব্যাপক গণসংযোগ চালানো হয়েছে। বিগত সময়ের উন্নয়নগুলো তুলে ধরা হচ্ছে। মানুষ এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ঘিরে উচ্ছ্বসিত। তারা জনসভায় যোগ দিতে অপেক্ষা করছে। রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রোজী রহমান বলেন, আমরা খুব আনন্দিত ও উদ্বেলিত। আমরা সবাই বঙ্গবন্ধুকন্যা রংপুরের পুত্রবধূ শেখ হাসিনার আগমনে উচ্ছ্বাসে একাকার হয়ে গেছি। ১১ বছর পর আমরা তাকে নবসাজে বরণ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। লাখ লাখ মানুষের ভিড়ে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে জিলা স্কুল মাঠে পুরুষের পাশাপাশি নারীদের ব্যাপক সমাগম ঘটবে, যা রংপুরের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। রংপুর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান সিদ্দিকী রনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর রংপুর সফর এবং এই জনসভা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। জনসভার হাওয়ায় এখন পুরো রংপুর বিভাগ আওয়ামী লীগের জয় বাংলা জয়োধ্বনিতে উদ্বেলিত। জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় সংসদ নির্বাচনে যুবসমাজ মাঠে থাকবে। আগামীতে রংপুর বিভাগের সবগুলো আসনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত নৌকার প্রতীকের প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত হবে। এদিকে জনসভাস্থল রংপুর জিলা স্কুল মাঠে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সসহ (এসএসএফ) রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা কাজ করছেন সর্বোচ্চ সতর্কতায়। মাঠের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণায় নৌকার আদলে তৈরি করা হয়েছে সভামঞ্চ। পাশেই মিডিয়া, মুক্তিযোদ্ধা ও অতিথি কর্নার। সামনে থাকবে জনতা। প্রস্তুতির কাজ তদারকি করছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। প্রতিদিন মাঠ-মঞ্চসহ সার্বিক পরিস্থিতি পরিদর্শন করছেন তারা। জিলা স্কুল মাঠের জনসভা থেকেই নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, এমনটা জানিয়েছেন নেতারা। আওয়ামী লীগের রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে ঘিরে রংপুরসহ পুরো বিভাগে উৎসবের আমেজ চলছে। প্রধানমন্ত্রী যেহেতু বঙ্গবন্ধুকন্যা, তাই তার ক্যারিশমাটিক নেতৃত্বের কারণে দলমত নির্বিশেষে লোকে লোকারণ্য হয়ে যাবে। গোটা শহর মানুষে মানুষে টইটম্বুর হয়ে যাবে। আমরা আশা করছি দলমত নির্বিশেষে এই জনসভায় সব শ্রেণির-পেশার মানুষ অংশ নেবেন। শুধু জিলা স্কুল মাঠ নয় গোটা শহর মানুষের উপচে পড়া ভিড়ে জনসমুদ্রে পরিণত হবে। দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক সাংবাদিকদের বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জনসভার সকল আয়োজন ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। এই জনসভায় ১০ লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটবে। পুরো রংপুর এই জনসভা ঘিরে জয় বাংলার জনস্রোতে রূপান্তরিত হবে। পুরো বিভাগজুড়ে যেভাবে দলীয় নেতা-কর্মীরা প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগ চালিয়েছেন, তাতে আমরা মনে করি রংপুরের মানুষের জন্য এটি হবে ঐতিহাসিক জনসভা। নানক আরও বলেন, ইনশাআল্লাহ এই জনসভা থেকেই বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস, অগ্নি-সন্ত্রাস, মানুষ খুন এবং দেশবিরোধী তৎপরতার বিরুদ্ধে উত্তরের এই জনপদ (রংপুর) থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা। এদিকে জনসভাকে ঘিরে পুরো নগরীকে নিরাপত্তা চাদরে ঢেকেছে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী। বিভিন্ন রুট দিয়ে আসা যানবাহন পার্কিংয়ে নগরীর ২১টি পয়েন্ট নির্ধারণ করেছে মহানগর পুলিশের ট্র্যাফিক বিভাগ। বসানো হয়েছে এক হাজারের বেশি সিসিটিভি ক্যামেরা। প্রবেশপথ ও গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মোড়গুলোতে বাড়ানো হয়েছে। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, জনসভাকে ঘিরে সব ধরনের নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করেছি আমরা। পোশাক পরিহিত পুলিশের পাশাপাশি আর্মডসহ সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা থাকবে। জনসভাস্থল ছাড়াও পথে পথে রুট ডিউটি, থাকবে চেকপোস্ট, পুরো নগরীর গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশ পথ ও মোড়ে মোড়ে থাকবে সদস্যরা। উঁচু ভবনের ছাদে এবং ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর প্রতি ফ্লোরে ফ্লোরে থাকবে প্রশিক্ষিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। আবু মারুফ হোসেন বলেন, জনসভাস্থল, পুরো শহর এবং সার্কিট হাউস পুরোটাই আমরা সিসিটিভির কাভারেজে এনেছি। আমরা সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতায় ১ হাজারেরও বেশি সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়েছি। আমরা ডিজিটালি মনিটরিং করবো। পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মাঠে এবং পুরো নগরীজুড়ে থাকবেন। সঙ্গে থাকবেন স্বেচ্ছাসেবকরা। যাতে জনগণ মাঠে সুশৃংখলভাবে আসতে পারেন, সুন্দর পরিবেশে সভা শুনতে পারেন এবং নির্বিঘেœ ঘরে ফিরে যেতে পারেন। সেজন্য আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন। আবু মারুফ হোসেন আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষ্যে রংপুর মেট্রোপলিটন এলাকায় কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা আমরা বরদাশত করবো না। কেউ করার চেষ্টা করলে তা কঠোরভাবে মোকাবিল করা হবে। এজন্য সকল ধরনের প্রস্তুতি আমাদের আছে। যে কোনো ধরনের ঘটনার প্রতিরোধ, প্রতিহত করার সক্ষমতা আমাদের আছে। এদিকে সফরসূচি অনুযায়ী, বুধবার বেলা সাড়ে ১২টায় রাজধানীর তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে করে রংপুরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। দুপুর ২টায় তাকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি রংপুর ক্যান্টনমেন্টের হেলিপ্যাডে অবতরণ করবে। দুপুর ২টা ৫ মিনিটে সেখান থেকে সড়কপথে রংপুর সার্কিট হাউসের উদ্দেশে রওনা হবেন তিনি। সোয়া ২টার দিকে সার্কিট হাউসে পৌঁছে বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। এরপর বিকেল ৩টায় রংপুর জিলা স্কুল মাঠে মহাসমাবেশ স্থলে পৌঁছাবেন। প্রথমে সেখানে রংপুর বিভাগের উন্নয়নে নেওয়া বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। সফরে রংপুরে ২৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং পাঁচটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধনের ঘোষণা দেবেন সরকারপ্রধান। মহাসমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার পর বিকেলে আবার একই পথে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন তিনি। প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বশেষ রংপুরে এসেছিলেন ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর। এ সময় তিনি রংপুরের পীরগঞ্জ ও তারাগঞ্জে দুটি নির্বাচনী জনসভা করেন। সাড়ে ৪ বছরের বেশি সময় পর তিনি আবার রংপুরে আসছেন। এর আগে ২০১১ সালের ৮ জানুয়ারি রংপুর জিলা স্কুল মাঠে মহাজোটের জনসভায় রংপুরের উন্নয়নের দায়িত্ব কাঁধে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রতিশ্রুতির আলোকে বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন ছাড়াও যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছেন রংপুরের পুত্রবধূ বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।