শোকবার্তায় মির্জা ফখরুল ইসলাম
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাসসিরে কুরআন ও সাবেক এমপি আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ইন্তেকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। গত সোমবার (১৪ আগস্ট) রাতে এক শোকবার্তায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কারাবন্দী অবস্থায় আল্লামা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী’র মৃত্যু গভীর শোকাবহ। এই আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামী প-িত বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন ইসলামের আলোকিত পথে। ক্ষমতাসীন শক্তি তাকে কোনোভাবেই প্রভাবিত করতে পারেনি। তিনি তার নিজস্ব মতাদর্শে ছিলেন অকম্প অবিচল। ধর্মপ্রাণ মানুষের প্রতি সহমর্মী এই মানুষটি জনসাধারণের মধ্যে বিশুদ্ধ ইসলামি জ্ঞানের চর্চা ও প্রচারে নিজেকে নিবেদিত রেখেছিলেন। দেশ ও মানুষের জন্য তিনি কাজ করেছেন নিরলসভাবে। জাতীয় সংসদেও তিনি ছিলেন ধৈর্যশীল ও তেজস্বী বক্তা।
শোকবার্তায় তিনি আরো বলেন, মরহুম দেলোয়ার হোসেন সাঈদী ছিলেন মৃদুভাষী ও সৌজন্যবোধ সম্পন্ন ব্যক্তিত্বের অধিকাররী। গুরুতর অসুস্থ মরহুম দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী গত ১৩ বছর বন্দী অবস্থায় থাকলেও তাকে কোনো সুচিকিৎসা দেয়া হয়নি। তার মৃত্যু স্বৈরশাসনের এক নির্দয় নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
আমি তার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকাবহ পরিবার-পরিজন, গুণগ্রাহী, ভক্ত ও শুভাকাঙ্খীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। প্রেস বিজ্ঞপ্তি। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাসসিরে কুরআন ও সাবেক এমপি আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী সোমবার (১৪ আগস্ট) রাতে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন তিনি ইন্তেকাল করেন।। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। তিনি ১৯৪০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন। তিনি ১৯৮২ সালে জামায়াতের রুকন হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ১৯৮৯ সালে তিনি জামায়াতের মজলিশে শূরা সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে জামায়াতের নির্বাহী পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। আল্লামা সাঈদী ২০০৯ সাল থেকে আজ অবধি জামায়াতের নায়েবে আমীরের দায়িত্ব পালন করছেন।
আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পিরোজপুর ১ আসন থেকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে পরপর দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তাকে পরিকল্পিতভাবে হারিয়ে দেয়া হয়। তিনি মাত্র ৬,৯৯৬ ভোটে পরাজিত হন। ২০০১ সালে তিনি ১,১০,১০৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী আওয়ামী লীগের প্রার্থী সুধাংশু শেখর হালদার ৭৬,৭৩১ ভোট পেয়েছিলেন। ১৯৯৬ সালে সারাদেশে জামায়াতে ইসলামীর মাত্র তিনজন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনে আল্লামা সাঈদী ৫৫,৭১৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দী আওয়ামী লীগে প্রার্থী সুধাংশু শেখর হালদার পেয়েছিলেন ৫৫,৪৩৭ ভোট।