ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বারবারিয়া এলাকায় মহাসড়কের পাশে ট্রাক কাভার্ড ভ্যান রেখে চালকরা বিশ্রাম নিলে রাতের আঁধারে গাড়ির ব্যাটারিসহ মালামাল চুরির ঘটনায় নিয়মিত আতঙ্কে থাকে চালক মালিকগন। হাইওয়ে পুলিশের নজরদারি থাকলেও গাড়ির মালামাল চুরি থামাতে পারেনি। দির্ঘদিন ট্রাক কাভার্ড মালিক সমিতি’র নেতৃবৃন্দ একটি ট্রার্মিনালের জন্য আবেদন করে আসলেও তা বাস্তবায়ন করেনি কর্তৃপক্ষ। দুষ্কৃতকারী ছিনতাইকারীদের আতঙ্কে থাকে চালকরা। এতে পরিবহন নেতৃবৃন্দ জানমালের নিরাপত্তার কথা ভেবে গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের গাজিখালি নদীর তীরে অস্থায়ীভাবে গড়ে তুলেছেন ট্রার্মিনাল। নাম মাত্র টাকার বিনিময়ে ট্রাক কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি’র নেতৃবৃন্দ নিরাপত্তায় গাড়ি রাখার ব্যবস্থা করলেও স্থায়ী ট্রার্মিনালের আধুনিক কোন সুযোগ সুবিধা নেই এখানে। তবে সড়ক ও জনপদের জায়গা দখল করে অস্থায়ী টার্মিনাল করে যানবাহন ও চালকদের জীবনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করলেও সরকার যদি স্থায়ীবাবে টার্মিনাল করে দেয় তাহলে সরকার একদিকে রাজস্ব পাবে অপরদিকে যানবাহন ও চালকদের জীবনের নিরাপত্তার ব্যবস্থাও হবে। গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ট্রাক বারবারিয়া বাসষ্ট্যান্ডের সাথে গাজিখালি নদীর পূর্ব পাশে সড়ক ও জনপদের জায়গায় অস্থায়ী ভাবে একটি টার্মিনাল গড়ে তুলেছেন ট্রাক কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি’র নেতৃবৃন্দরা। ট্রাক রাখার জায়গাটি ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের একটি ব্রিজের নিচে হওয়াতে মহাসড়কের উপর কোন চাপ পড়েনি। এতে করে যানজট কমেছে মহাসড়কের। যার কারণে সাধারণ মানুষসহ অন্যান্য যানবাহনের চালকরাও খুশি। তবে সড়ক ও জনপদ বিভাগ বলছে আমাদের জায়গায় অস্থায়ী টার্মিনাল তৈরি করা এটি অবৈধ। তারপরও তাদের কথা চিন্তা করে দেখি সমস্যা সমাধান করা যায় কি না। ট্রাক ড্রাইভার বাবুল হোসেন বলেন, আমরা বিভিন্ন জেলা থেকে মালামাল নিয়ে আসি এখানে । অনেক সময় মাল ভর্তি গাড়ি দুই তিন দিনও আনলোড হয় না। মহাসড়কেই পাশে গাড়ি রাখতে হয়। রাতে একটু বিশ্রামের সুযোগও নেই। গাড়ির ব্যাটারিসহ মালামাল চুরি হয়ে যায়। রাস্তায় যানজট হয়ে যায়। এখন কয়েক মাস ধরে এখানে গাড়ি রাখছি খুব ভালো আছি। এত দূর থেকে গাড়ি চালিয়ে এসে শান্তিতে একটু ঘুমাতে পারি। আকিজ ফুড এন্ড বেভারেজ কারখানার গাড়ি চালক শরিফুল ইসলাম বলেন, কারখানার ভিতরে গাড়ি রাখার ব্যবস্থা নেই। ধামরাই থানার কোথাও পর্যাপ্ত জায়গা নেই গাড়ি রাখার। আগে মহাসড়কের পাশেই গাড়ি রাখতাম। কিন্তু সবসময় ভয়ে থাকতাম কখন পুলিশ আসে, আসলেই জরিমানা। আমরা তো আর ইচ্ছা করে রাস্তার পাশে গাড়ি রাখতাম না। জায়গা নাই বলেই রাখতাম। এখন এখানে রাখি খুব ভালো আছি। সরকারের কাছে আমাদের চালকদের দাবি এটি যেনো স্থায়ী ট্রার্মিনাল করে দেন। এত আমাদের জীবনের নিরাপত্তার পাবো। আমরা সরকারকে ট্যাক্স দিবো সরকার যদি আমাদের আধুনিক সুযোগ সুবিধা দেয়। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ট্রাক কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি’র ধামরাই উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান বলেন, আমরা দির্ঘদিন ধরে বারবারিয়া এলাকায় একটি টার্মিনাল করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। সরকার বরাবর আবেদনও করেছেন আমাদের নেতৃবৃন্দ। কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না। তাই চালক ও গাড়ির নিরাপত্তার কথা ভেবে অস্থায়ী ভাবে গাজী খালি নদীর পাড় ঘেসে টার্মিনাল করেছি। তিনি আরো বলেন, আগেতো মহাসড়কে গাড়ি রাখলে হাইওয়ে পুলিশ রেকার দিয়ে গাড়ি নিয়ে যেত বা জরিমানা গুনতে হতো। আর ছিনতাইকারীর ভয় থাকে। প্রায় সময়ই গাড়ির ব্যাটারিসহ মালামাল চুরি হয়ে যায়। এতে মহাসড়কে গাড়ি না থাকাতে সড়কে যানজট হচ্ছে না। এ বিষয়ে উপজেলার গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের মোল্লা জানান, অস্থায়ীভাবে টার্মিনাল করেছে ট্রাক কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি’র নেতৃবৃন্দ বিষয়টি আমি জানি। এতে গাড়ি চালকদের জীবনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা যেমন হয়েছে তেমনি গাড়িও নিরাপদ। তাছাড়া প্রায় ছিনতাইয়ের কবলে পরতে হয় চালকদের। অস্থায়ীভাবে সড়ক ও জনপদের জায়গায় করা হয়েছে এই টার্মিনাল। যদি সরকার একটি স্থায়ীভাবে টার্মিনাল করে দিতো তাহলে সরকার একদিকে যেমন রাজস্ব পেত অপরদিকে চালক ও গাড়ি দুটিই নিরাপদে থাকতে পারতো। গোলড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুখেন্দু বসু বলেন, আমরা মহাসড়কে গাড়ি রাখলে সেদিকে ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। কিন্তু এখন ট্রাক কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি’র নেতৃবৃন্দ ব্রিজের নিচে সড়ক ও জনপদের জায়গায় অস্থায়ীভাবে টার্মিনাল করেছে। যদি কোন সমস্যা হয় বিষয়টি সড়ক ও জনপদ বিভাগ দেখবেন। আমাদের কাজ শুধু রাস্তার উপর। উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (নয়ার হাট শাখা) মো: আরাফাত সাকলায়েন বলেন, সড়ক ও জনপদের জায়গায় অস্থায়ী ভাবে টার্মিনাল করা সম্পূর্ণ অবৈধ। তবে আগে মহাসড়কের পাশে গাড়ি ভিড়ে থাকায় যানযট লেগে থাকতো। আমরা বিষয়টি নিয়ে ট্রাক কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি’র নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলবো। কি করে ভালো করে যানবাহন রাখার ব্যবস্থা করা যায়।