জেলা জুড়ে আগ্রহ বাড়ছে খিরা চাষে কৃষকেরদের। ফলে খিরা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন এখানকার কৃষকরা। তাদের দাবি ধান চাষের চেয়ে খিরা চাষে কম সময়ে বেশি লাভবান হওয়া যায়। এ বছর জেলায় ২৮৪ হেক্টর জমিতে খিরার আবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭১০০ মেট্রিক টন। যা ১০ বছর আগে খিরা আবাদ হতো মাত্র একশো হেক্টর জমিতে। কৃষি বিভাগ জানিয়ে তারা খিরা চাষে উদ্ধুদ্ধ করছেন জেলার কৃষকদের। এবার লাকী-৭, মধুমিতা, মিরাই, নাটোর ও স্থানীয় জাতের খিরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় চাষ হয়েছে।
সরজমিন ঘুরে জানা যায়, জেলার সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের সাদেকপুর গ্রামে কৃষি জমিতে চাষ হচ্ছে খিরা। ক’বছর আগে এখানে খিরা চাষের নামগন্ধও ছিল না। জেলার বা ারামপুর এবং নবীনগর উপজেলাতেই মূলত অধিকাংশ খিরার চাষ হয়।
সাদেকপুর গ্রামের খিরা চাষী আবুল কাশেম, মতিউর রহমান ও রোকন উদ্দিন গত ৩/৪ বছর যাবৎ খিরা চাষ করছেন। ধানের চেয়ে লাভ বেশী হওয়ায় খিরা চাষে তাদের আগ্রহী করে তুলেছে। তারা জানান দু’আড়াই মাসে খিরা বাজারে বিক্রি করা যায়। আর ধানের ফলন উঠতে সময় লাগে ৩থেকে সাড়ে ৩মাস। স্থানীয় ভাষায় ২কানি (৬০ শতাংশ) জমিতে খিরা চাষে খরচ হয় ১০/১৫ হাজার টাকা। উৎপাদন হয় ৪৫-৫০ মণ খিরা। বিক্রি করা যায় এক-দেড় লাখ টাকার অধিক। প্রতি কেজি খিরা বিক্রি হয় স্থানীয় বাজারে ৪০ টাকা করে। অন্যের জমি বর্গা নিয়ে গত ক’বছর ধরে খিরা চাষ করছেন সাদেকপুর গ্রামের আবুল কাশেম। তিনি জানান বাজারে খিরার চাহিদা খুবই ভালো। ধান চাষ করার চেয়ে খিরা চাষে অনেক লাভ বেশী। ভালো ফলন হলে ২ কানি জমিতে ৩০/৩৫ মণ ধান হয়। আর খিরা কানি পিছু ২০/২৫ মণ পাওয়া যায়। এবার খিরা চাষে ২০/৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে তার। উৎপাদিত খিরা বিক্রি করে লাখ টাকা পাওয়ার আশা করছেন তিনি। মতিউর রহমান ২২ শতক জমিতে খিরা চাষ করেছেন। এ থেকে উৎপাদিত খিরা ২০/২৫ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান। গত বছরও তিনি ৪০/৪৫ হাজার টাকার খিরা বিক্রি করেছেন। খিরা চাষী রোকন উদ্দিনের ২কানি জমিতে খিরা চাষে খরচ ১৫ হাজার টাকা। এক লাখ থেকে দেড়লাখ টাকার খিরা বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান। তিনি ৫০ হাজার টাকার খিরা বিক্রি করেছেন। প্রচুর লাভ খিরাতে। তাদেরটা দেখে দেখে অনেক মানুষ খিরা চাষ করছে বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুশান্ত সাহা জানান ১০ বছর আগে জেলায় একশ হেক্টর জমিতে খিরা চাষ হতো। সেটি বেড়ে এখন ২৮৪ হেক্টর হয়েছে। ভালো বাজার মূল্যের কারণে কৃষকরা লাভবান হওয়ায় প্রতিবছরই বাড়ছে আবাদের পরিমান।