খালের দুই ধারে বিস্তীর্ণ মাঠে আবাদী ক্ষেত। বোরো মৌসুমে খালের পানির সেচ সুবিধা পেতে সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলায় বিন্নাবাড়ী আমতলা কাটা খাল ভায়া কুন্দইল সেতু খাল খনন করা হচ্ছে। কিন্তু যেনতেনভাবে খালটি খনন করায় সেচের সুবিধা পাওয়া সম্ভবনা। বন্যার পানির সাথে খালের পানি নেমে যাবে বলে স্থানীয় কৃষকরা। সগুনা ইউনিয়নের কুন্দইল গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ, ফয়জাল প্রামানিক, খয়বার হোসেন, রহিম উদ্দীন, আব্দুস সালাম, কোবাদ আলী ও বিন্নাবাড়ী গ্রামের কৃষক আজগর আলী, জামিল উদ্দীন, আলমাছ আলীসহ আরো অনেকে অভিযোগ করেন, আগের খালের চেয়ে এখনকার খালের তলার প্রস্থ অর্ধেকের কম। তাছাড়া খালের দুই পাশের দুর্বা ঘাসের উপর সামান্য করে মাটি ফেলে অধিক প্রস্থের বক্সার রাখা হচ্ছে। যাতে খনন কাজে করতে খরচ কম লাগে। সর্বপরি কৃষকরা খালের ভাটিটে রাবার ড্যাম স্থাপনের মরামর্শ দিয়েছেন পানি ধরে রাখার জন্য। উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে সারাদেশে পুকুর, খাল উন্নয়ন প্রকল্প (১ম সংশোধিত) (আইপিছিপি) প্রকল্পের আওতায় তাড়াশ উপজেলার সগুনা ইউনিয়নে ১. ক) বিন্নাবাড়ী আমতলা-কাটা খাল ভায়া কুন্দইল সেতু খাল খনন করা হচ্ছে। এ কাজের প্রাক্কলিত মূল্য ধরা হয়েছিল ১ কোটি, ৯৬ লাখ ২৫ হাজার ৩৩৬ টাকা। চুক্তি মূল্য ১ কোটি ৮৬ লাখ ৪৪ হাজার ৬৯ টাকা। এ খালে ১৪ টি রেফারেন্স বেড ব্লক ও ১৪ টি টেম্পোরারি বেঞ্চ মার্ক নির্মান করার কথা রয়েছে কাজের নথিতে। কাজটি ২৬‘শ মিটার। সরেজমিনে দেখা গেছে, ৪টি ভেক্যু মেশিন দিয়ে বিন্নাবাড়ী আমতলা কাটা খাল ভায়া কুন্দইল সেতু খাল খনন করা হচ্ছে। খালের তলাদেশের প্রস্থ একদমই কম সাবেক খালের তুলনায়। দুর্বা ঘাসের উপর যৎসামান্য মাটি ফেলে বক্সার রাখা হচ্ছে। পরে ড্রেসিং করা হচ্ছে। যাতে কেউ বুঝে উঠতে না পারে কাজটি সঠিকভাবে করা হয়নি। চলনবিল রক্ষা আন্দোলন কমিটির তাড়াশ উপজেলা শাখার আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক রাজু বলেন, ক্রমশ পানিশূন্য হয়ে পড়ছে চলনবিল। বিল থেকে বন্যার পানি নামার পর জলাধারগুলো শুকিয়ে যায়। ফলে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। তাড়াশের ভাটি অঞ্চলে পানির লেয়ার আরও নিচে পাওয়া যায়। এসব এলাকাতে ১০ ফুট অবদি গর্ত খুরে মেশিন বসিয়ে বোরো ধানের আবাদ করা হচ্ছে। চলনবিলের সব চেয়ে বড় ও গভীর কাটা গাংয়ে পানি নেই। বিন্নাবাড়ী আমতলা কাটা খাল ভায়া কুন্দইল সেতু খাল সঠিকভাবে খনন করা হলে তবেই কৃষকবান্ধব হবে। এদিকে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আকাশ ট্রেডাসের সত্ত্বাধিকারী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ব্যস্ততার কারণে আমি বিন্নাবাড়ী আমতলা কাটা খাল ভায়া কুন্দইল সেতু খাল খনন করা দেখতে যেতে পারিনি। আপনি তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশল অফিসে যোগাযোগ করুন সকল তথ্যের জন্য। দায়িত্বপ্রাপ্ত তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশল অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. বাবুল আখতার বলেন, “আপনি যেহেতু রিপোর্ট করবেন, আমাকে জেনে-বুঝে প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। পরে আপনার সঙ্গে কথা বলে নেব।” উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফজলুল হক বলেন, আমি এখনো বিন্নাবাড়ী আমতলা কাটা খাল ভায়া কুন্দইল সেতু খাল পরিদর্শনে যেতে পারিনি। প্রকল্পে বর্ণনা অনুযায়ী খনন কাজে কোন অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হলে তা ঠিক করে নেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট সবার সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন, সিরাজগঞ্জ জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সফিকুল ইসলাম।