সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে রাণীগঞ্জ সেতুর নিচ থেকে মাটি উত্তোলন হচ্ছে মর্মে মিথ্যাচারে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। জানাগেছে, জগন্নাথপুর উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের নারিকেলতলা গ্রামের হাওরে কৃষি ইন্সটিটিউট নির্মাণ কাজ চলছে। এতে মাটি ভরাট কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান একতা এন্টারপ্রাইজ। তারা বৈধভাবে পাইপ লাইনের মাধ্যমে কুশিয়ারা নদীর চর ভরাট এলাকা থেকে মাটি এনে ভরাট কাজ করে। তবে গত প্রায় দেড়মাস ধরে শ্রমিক সংকটে তাদের মাটি ভরাট কাজ বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে গত প্রায় সপ্তাহ খানেক আগে রাণীগঞ্জ সেতুর নিচ থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে মর্মে অপপ্রচার ও মিথ্যাচারের ঘটনায় ফুসে উঠেছেন এলাকাবাসী। এমন পরিস্থিতিতে ঘটনার সত্যতা জানতে শনিবার (১১ মে) সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে কথা হয়। তারা ঘটনার সত্যতা তুলে ধরে মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। এ সময় দেখা যায়, নির্মাণাধীন কৃষি ইন্সটিটিউটে পাইপ লাইনের মাটি ভরাট কাজ বন্ধ রয়েছে। রাণীগঞ্জ সেতুর নিচে থাকা আনলোড ড্রেজার মেশিন বন্ধ আছে। মাটি উত্তোলনের স্থান রসুলপুর এলাকায় কোন ড্রেজার মেশিন না থাকলেও সীমানা চিহিৃত লাল কাপড় উড়ছে। এ সময় আনলোড ড্রেজার মেশিনের দায়িত্বে থাকা নাজমুল মিয়া বলেন, অন্য স্থান থেকে মাটি এনে এখানে লোড করা হয়। আর এখান থেকে পাইপের মাধ্যমে প্রজেক্টে যায়। সুতরাং সেতুর নিচে থাকা নদী থেকে মাটি উত্তোলনের কোন সুযোগ নেই। এর মধ্যে গত দেড়মাস ধরে কাজই বন্ধ রয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে আকমল হোসেন বলেন, আমরা বৈধভাবে প্রশাসনের চিহিৃত করা রাণীগঞ্জ সেতু থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দুরত্ব কুশিয়ারা নদীর রসুলপুর গ্রাম এলাকার চর ভরাট থেকে মাটি উত্তোলন করে রাণীগঞ্জ সেতুর নিচে থাকা আনলোড মেশিনের মাধ্যমে নারিকেলতলা প্রজেক্টে দেই। এখন তো কাজই বন্ধ। তবুও মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে মর্মে মিথ্যাচার ও অপপ্রচারে আমরা ব্যতীত হয়েছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অজানা কারণে সত্যকে মিথ্যা দিয়ে আড়াল করা হচ্ছে। যা কোন অবস্থায় মেনে নেয়া যায় না। এছাড়া আমরা টুকরি দিয়ে বালু বিক্রি করছি বলেও মিথ্যাচার করা হয়েছে। যেখানে বালুই নেই, সেখানে বিক্রি করার প্রশ্নই উঠে না। এ সময় নদী পারের গ্রাম এলাকার গৌরচান ও হিরো বিশ্বাস সহ অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের বাড়ির কাছে থাকা রাণীগঞ্জ সেতুর নিচ থেকে মাটি উত্তোলনের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমরা এসব মিথ্যাচারের নিন্দা জানাই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাণীগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ছদরুল ইসলাম বলেন, আমার জানামতে রাণীগঞ্জ সেতুর নিচ থেকে কোন মাটি উত্তোলন করা হয়নি। এ ধরণের কোন অভিযোগ পাইনি। জগন্নাথপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র সাফরোজ ইসলাম মুন্না বলেন, রাণীগঞ্জ সেতু হচ্ছে, আমাদের গর্ব। সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানের হাত ধরে এ সেতুটি নির্মাণ হওয়ায় আমরা এখন সরাসরি রাজধানী ঢাকায় যাতায়াত করছি। আমাদের প্রাণের সেতুর কোন ক্ষতি কোন অবস্থায় মেনে নেবো না। তবে নদীতে মাটি উত্তোলন বন্ধ থাকা সত্বেও সেতুর নিচ থেকে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে মর্মে অপপ্রচার ও মিথ্যাচারে আমরা হতবাক হয়েছি। যা কোন অবস্থায় সত্য নয়। এটি রাজনৈতিক বা ব্যক্তি প্রতিহিংসার প্রতিফলন। জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল-বশিরুল ইসলাম জানান, রাণীগঞ্জ সেতুর নিচ থেকে কোন মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে না। সেতুর দুরত্ব নিরাপদ স্থান থেকে আমাদের চিহিৃত করা এলাকা থেকে মাটি এনে সেতুর নিচে থাকা আনলোড মেশিনে পাইপ লাইনের মাধ্যমে নির্মাণাধীন কৃষি ইন্সটিটিউটের স্থানে দেয়া হয়। তিনি বলেন, কিছু লোক অযথা মিথ্যাচার করছে।