টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ক্রমবর্ধমান রমরমার বাজারে বিশ্বের সবচেয়ে অর্থবহুল ও দর্শকপ্রিয় লিগ আয়োজন করে ভারত। তবে এত বিনিয়োগ, আকর্ষণ ও মনোযোগ সত্ত্বেও ভারতের জাতীয় দল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সেভাবে সাফল্য পাচ্ছে না। এই দীর্ঘ খরা কাটিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা তুলে নিতে রোহিত শর্মার ভারতীয় স্কোয়াড যুক্তরাষ্ট্র ও ক্যারিবিয়ানে পাড়ি দিচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য।
এতে কোনো সন্দেহ নেই যে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) উড়ছে টাকা ও প্রতিভা। এর ফলে বিশ্বের নানা প্রান্তের সেরা সেরা ক্রিকেটাররা এই আয়োজনে সামিল হয়েছেন। আইপিএলের বাড়বাড়ন্তের পর থেকে ভারত একবারও বিশ্বকাপ ট্রফি জিততে পারেনি।
২০০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় আয়োজিত প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পর ভারত আর একবার মাত্র ফাইনালে উঠতে পেরেছে ২০১৪ সালে, শ্রীলঙ্কার কাছে হেরেও যায় তারা।
ক্রিকেটের বিভিন্ন ফরম্যাটে ভারতের এই খরা চলছে। ভারত শেষবারের মতো ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল খেতাব লাভ করেছে ২০১৩ সালে, আর তা হলো ইংল্যান্ডে আয়োজিত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। ভারত ৫০ ওভারের ফরম্যাটে অন্তিমবার বিশ্বকাপ পেয়েছে ২০১১ সালে। এক্ষেত্রে গত বছরটা ছিল বেশ ব্যতিক্রমী। ইংল্যান্ডে আয়োজিত বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেও অস্ট্রেলিয়ার কাছে পরাস্ত হয় ভারত। এর কয়েক মাস পর, দেশের মাটিতেই ৫০ ওভারের ফরম্যাটে বিশ্বকাপ ফাইনালে তারা হেরে যায় সেই অস্ট্রেলিয়ার কাছেই। ভারতের ১৪০ কোটির ক্রিকেট-পাগল মানুষ এই কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল। সাত মাস পর রোহিত শর্মা ও তারকা ব্যাটার বিরাট কোহলি আসন্ন অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এটাই সম্ভবত ভারতের নীল জার্সিতে তাদের শেষ টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট হতে চলেছে। টুর্নামেন্টের ২৭টি ম্যাচে কোহলির রান ১ হাজার ১৪১। তার গড় ও স্ট্রাইক রেট যথাক্রমে ৮১.৫০ এবং ১৩১.৩০। আর শর্মা ৩৯টি ম্যাচে রান করেছেন ৯৬৩। তার স্ট্রাইক রেট ১২৭.৮৮।
২০২২ সালে অস্ট্রেলিয়ার সেমিফাইনালে পরাজয় ও চলতি বছরের জানুয়ারির মধ্যে ভারতের সমস্ত টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে গরহাজির ছিলেন দু’জনেই। এর ফলে অনেকে ধারণা করেছিলেন যে ১ জুন থেকে অনুষ্ঠেয় ২০২৪ সালের বিশ্বকাপে তারা থাকবেন না। এই গুজব উড়িয়ে দিয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের (বিসিসিআই) সেক্রেটারি জয় শাহ ও প্রধান নির্বাচক অজিত আগরকর। এখন রান ও স্ট্রাইক রেটের নিরিখে তারা কতটা অবদান রাখে সেদিকে নজর থাকবে সবার।
আগরকর বলেন, ‘আইপিএল ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। বিশ্বকাপে খেলার চাপই আলাদা, তাই অভিজ্ঞতা দরকার।’ ৫ জুন ভারত তাদের বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করবে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে। তারপরই ৯ জুন নিউইয়র্কে তারা মুখোমুখি হবে চির-প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের সাথে। ভারত ১২ জুন যুক্তরাষ্ট্র ও ১৫ জুন কানাডার বিরুদ্ধে খেলবে। সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা