লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে টেন্ডার ছাড়াই ৮ লাখ টাকার দুইটি প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করেছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তর। হাটবাজার ইজারার (রাজস্ব) ফান্ড থেকে এ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পেয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ প্রকল্প দুটির কাজ সম্পন্ন করেন। প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করলেও এখনো টাকা পায়নি বলে দাবি করেন সংশ্লিষ্ট পরিষদ।
উপজেলা প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানান গেছে, জেলার রামগতি উপজেলার বড়খেরী ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে রামগতি বাজারের উপর ২ লাখ টাকা ব্যায়ে একটি কালভার্ট নির্মান করা হয়। অপর দিকে চরপোড়াগাছা ইউনিয়নের আযাদনগর বাজারের উপর পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি ড্রেন নির্মান করা হয়। যার ব্যায় ধরা হয় প্রায় ৬ লাখ টাকা।এ দুটি প্রকল্পের কোন টেন্ডার হয়নি। হাটবাজার ইজারার (রাজস্ব) ফান্ড থেকে দুটি প্রকল্পে ৮ লাখ টাকা দিবে বলে উপজেলা পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। এতে শুধুমাত্র রেজুলেশন হয়েছে। কোন প্রকার টেন্ডার প্রক্রিয়া ছাড়াই নিজেদের অনুগত লোক দিয়ে কাজগুলো সম্পন্ন করেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে কাজের গুনগত মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেন স্থানীয়রা। রামগতি বাজারের মোঃ আলাউদ্দীন, আব্দুল হাই বলেন, বরাদ্দ অনুযায়ী কাজ হয়নি। ভারী যানবাহন উঠলে বুঝা যাবে কালভার্টটি শক্ত হয়েছে কি না? আযাদনগর বাজারে বেলাল হোসেন, মোঃ আব্দুল হাকিম বলেন, শুনেছি ড্রেনের জন্য ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। সামান্য ড্রেন করে ৬ লাখ টাকা শেষ করা হয়। এগুলো দেখার মত কেউ নেই। রামগতি বাজারের কালভার্ট নির্মাণের দায়িত্বে থাকা মোঃ জুয়েল বলেন, আমাকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কাজ করতে বলছে। তাই আমি কাজটি করে দিয়েছি। এর বেশী কিছু আমি জানিনা। আযাদনগর বাজারের ড্রেন নির্মানের দায়িত্বে থাকা হুমায়ুন কবীর বলেন, তিনি বাজার ইজারাদার হিসেবে কাজটা যাতে ভাল হয়, সেজন্য তদারকি করছেন মাত্র। এর বাহিরে তিনি কিছুই জানেননা বলে জানান। ক্ষমতাশীন দলের তিনজন নেতা এ প্রতিবেদককে বলেন, রামগতি উপজেলায় হাটবাজার ইজারার ফান্ডে প্রায় ৬০ লাখের মত টাকা রয়েছে। টাকাগুলো উত্তোলন করতে রেজুলেশন করে নামে বেনামে প্রকল্প দেখানো হচ্ছে। বিনা টেন্ডারে এ ধরনের প্রকল্প দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তারা। বড়খেরী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ওসমান গণী বলেন, উপজেলা পরিষদের বৈঠকে সবার সম্মতিতে একটি রেজুলেশন করে রামগতি বাজারের উপর ২ লাখ টাকা ব্যায়ে কালভার্টটি নির্মাণের জন্য বলা হয়েছে। সে হিসেবে আমরা কাজটি সম্পন্নও করছি। এখনো বিল পাইনি। রামগতি উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডির প্রকৌশলী মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, এ দুটি প্রকল্প আমাদের এলজিইডি বিভাগের নয়। এগুলো উপজেলা পরিষদের। রাজস্ব খাত থেকে টাকা দেওয়া হবে। যার সভাপতি আমাদের ইউএনও মহোদয়। আমরা শুধুমাত্র ডিজাইন করে দিয়েছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আমজাদ হোসেন বলেন, টেন্ডার ছাড়া এ ধরনের প্রকল্প নির্মাণের বিষয়টি তার জানা নেই। হাটবাজার ইজারা (রাজস্ব) খাতের টাকা আমাদের কাছে জমা আছে। সেগুলো আমরা বিধিমালা অনুযায়ী ব্যবহার করবো। লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান বলেন, বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন।