শেরপুরে চোরাকারবারী ও ডাকাত সর্দার খোকন বিডিআর এর হামলা ও হুমকির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক ভুক্তভোগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। ৮ জুন শনিবার সকালে সদর উপজেলার সাতপাকিয়া কাঁচাবাজারে ওই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চরপক্ষিমারি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আকবর আলী। এসময় তিনি বলেন, আমি ১৯৯৬ সাল থেকে টানা আজ অবধি চরপক্ষিমারি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি পদে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছি। ব্যবসায়ীক দ্বন্দ্বে একটি মহল পরিকল্পিতভাবে আমার ও আমার পরিবারকে প্রতিনিয়ত হয়রানি, সামাজিক সম্মানহানী, অর্থনৈতিকভাবে ব্যবসায়িক ক্ষতি সহ প্রাণনাশের চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমি বার বার আইনের আশ্রয় নিয়ে বিচার চেয়ে আসছি। কিন্তু মামলার দীর্ঘসূত্রিতার সুযোগে ও আইনের ফাঁক ফোকরে বের হয়ে বারবার আমাদের ক্ষতির চেষ্টা করছে। এই চক্রটির অন্যতম হোতা হলো মো. নুরুল ইসলাম খোকন। আমার জানামনে সে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের একজন উৎশৃঙ্খল সাবেক সিপাহী। তার উৎশৃঙ্খল ও অনৈতিক কর্মকান্ডের জন্য পরে চাকুরিচ্যুত হয়ে গড়ে তোলেন চোরাচালান চক্র ও ডাকাত দল। তার চক্রের বেশ কয়েকজন সদস্য নানা সময়ে বিজিবি থেকে চাকুরিচ্যুত হওয়া। দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন সীমান্ত এলাকায় চাকুরি করার সুবাদে সীমান্তের অরক্ষিত ও দুর্বল এলাকাগুলো ব্যবহার করে বর্তমানে সে পাথর-কয়লার ব্যবসার আড়ালে গড়ে তুলেছে মাদকের ব্যবসা। তার রয়েছে একাধিক পাসপোর্ট। সে সকালে ভারতে থাকে বিকেলে বাংলাদেশে থাকে। এমনকি ভারত থেকে আসা গরুর চালান সে সীমান্ত এলাকা থেকে এনে গ্রামের বাড়িতে গরু খামার পর্যন্ত করেছে। ভারতীয় কাপড়ের ট্রাকের চালান লুট করে এলাকায় যাকাত দেয়ার অভিযোগ এলাকায় মানুষের মুখে মুখে। তিনি আরও বলেন, এর আগে খোকন বঙ্গবন্ধু সেতুর উপর থেকে কাপড় বোঝাই কোটি টাকার চালান ছিনতাই করে। সেই মামলায় সে সহ তার চক্রের বেশ কয়েকজন জেল খাটেন। ভারতীয় চোরাকারবারীর অংশ হিসেবে সে নেত্রকোনা জেলায় ভারতীয় কাপড়, গাড়ির টায়ার সহ পুলিশের হাতে আটক হয়ে জেল খাটেন। এছাড়াও আমার ব্যবসায়ী ভাই ব্যাংকে টাকা জমা দেয়ার সময় চোখে মুখে মরিচের গুড়া দিয়ে তার চক্রটি ৩৫ লক্ষ টাকা ছিনতাই করে। সেই মামলায় সে সহ তার চক্রটি জেল খাটে। এছাড়াও সে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আমাকে প্রকাশ্য দিবালোকে ছুরিকাঘাত করে। এছাড়াও আমাকে হত্যার উ˜েদ্যশ্যে আমার উপর ট্রাক উঠিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। তার দলের সাঙ্গপাঙ্গদের সর্বোচ্চ ২৬টি পর্যন্ত মামলা রয়েছে। এছাড়াও তারা দেশে বড় ধরনের অপকর্ম করেই ভারতে গিয়ে আত্মগোপন করে। তার সাথে গ্রেফতারকৃতরা এখনো কয়েকজন ভারতে আছে এবং বাকিরা ভারতের বিভিন্ন যায়গায় বসবার করেছে। সংবাদ সম্মেলন শেষে তার ছেলে সোহেল রানা, বর্তমানে খোকন চোরাকারবারির টাকায় সাম্রাজ্য তৈরি করেছে। বিভিন্ন ভিআইপির সাথে কৌশলে দেখা করে তাদের ছবি ফেসবুকে দিয়ে আর সেই ছবি দেখিয়ে মানুষকে ভয় দেখায়। এছাড়াও সে এক পুলিশ সদস্যকে বিয়ে করে পরিচয় দেয় উর্দ্ধতন পুলিশ কর্মকর্তার স্বামী। বর্তমানে আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা তার হুমকিতে প্রাণ ভয়ে আছি। এছাড়াও তার ভয়ে আমরা আদলত চত্ত্বরে ঠিক মতো গিয়ে মামলা পরিচালনা করতে পারিনা। তারা আদালতেও আমাদের লোকজনের উপর প্রকাশ্যে চড়াও হয়ে গালাগালি সহ প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এসকল কাজে তাদের সহযোগীতা করে শহরে বসবাসকৃত একটি দল। যাদের অধিকাংশই হত্যা মামলার আসামি। আপনাদের মাধ্যমে আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমার চাওয়া, এই চোরাকারবারী ও ডাকাত সর্দারকে যেন তার সাঙ্গপাঙ্গ সহ আইনের আওতায় আনা হয়।
এ ব্যাপারে মো. নুরুল ইসলাম খোকন বলেন, তার সাথে আমার ব্যবসায়িক বিভিন্ন ব্যাপারে ঝামেলা চলছে। সে আমার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মিথ্যা মামলা করেছে। আমি এর কোনটির সাথে জড়িত নই। এছাড়াও যমুনা সেতু থেকে ছিনতাই হওয়ার ট্রাকের ড্রাইভারকে সে ফুঁসলিয়ে আমার নাম ব্যবহার করে মামলা করিয়েছে। নেত্রকোনার কমলাকান্দায় ভারতীয় কাপড় সহ আটকের ব্যাপারে তিনি বলেন, আকবর আলী চেয়ারম্যান বিভিন্ন সময় পুলিশ অফিসারদের সাথে বাবা-ছেলের সম্পর্ক তৈরি করে। পরবর্তীতে তাদেরকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করিয়েছে।