বিশ্বমে যেন স্বপ্নের মতোই এক অভিষেক হলো রিশাদ হোসেনের। জীবনে প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলতে এসেই কি না ম্যাচ সেরার পুরস্কার! খেলা শুরুর আগে কখনো কি ভেবেছিলেন এমন কিছু হতে পারে! সত্যিই জীবন কখন কাকে কোথায় দাঁড় করিয়ে দেয়, তা বুঝা বড় দায়। একজন লেগ স্পিনার বাংলাদেশকে জেতাবে, মাস ছয়েক আগেও এটা ছিল অকল্পনীয়! বিশ্ব ক্রিকেটে অহরহ হলেও এই দেশে এমনই বিস্ময়কর বটে।
যেই দলের একাদশে লেগ স্পিনার খুঁজে পাওয়া দায়, যে দেশের লিগ ক্রিকেটে লেগ স্পিনারদের দলে হয় না ঠাঁই, লেগ স্পিন বাজি লাগাতে যে দেশে কোচেরা হয় না সাহসী, সেই দেশের লেগ স্পিনার বিশ্বকাপ দলে! এই নিয়েই তো হুলস্থূল পড়ে যাওয়ার কথা।
পড়েই যেতো হয়তো বা, যদি না রিশাদ হোসেন ব্যাট হাতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেই বিধ্বংসী ইনিংসটা না খেলতেন! লেগ স্পিনের সাথে ব্যাট ধরতে পারলে, অলরাউন্ডার বলে তো তাকে চালানোই যায়! তবে অনেকের জহুরি চোখ ঠিকই খুঁজে নিয়েছিল রিশাদকে। এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের বাজির ঘোড়া বলা হচ্ছিলো তাকে। কেন অভিজ্ঞ সাকিব, মাহমুদউল্লাহ কিংবা মোস্তাফিজের মতো ম্যাচ উইনারকে রেখে তার প্রতি এতো আকর্ষণ, প্রশ্ন জেগেছিলোই বটে।
তবে প্রথম ম্যাচেই যেন তার প্রমাণ রাখলেন রিশাদ। একের পর এক আঘাতে ভেঙে দিয়েছেন লঙ্কান দূর্গ। যাতে ঘুরে যায় ম্যাচের মোড়, চুড়মাড় ইনিংসের মেরুদ-।
১৫তম ওভারে জোড়া আঘাত, আসালাঙ্কার পর হাসারাঙ্গাকেও ফেরালেন; জাগালেন হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও! হ্যাটট্রিক হলো না বটে, তবে তিন নম্বর উইকেটের দেখা ঠিকই পেয়েছেন। পরের ওভারে এসে ফেরান ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকেও! স্পেল শেষ হয় ৪-০-২২-৩৷ যাতে শ্রীলঙ্কা আটকে যায় ৯ উইকেটে মাত্র ১২৪ রানে। ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলালেও ম্যাচটা অবশ্য বাংলাদেশ জয় পায় ১ ওভার হাতে রেখেই, ২ উইকেটের ব্যবধানে। যা রিশাদের জন্য খুলে দিয়েছে স্বপ্নের দুয়ার, এনে দিয়েছে ম্যাচ সেরার পুরস্কার। আগে ১৭ ম্যাচে মাত্র ১৫ উইকেট শিকার করা এই বোলার তো স্বপ্ন দেখেন বিশ্বকাপের সেরা উইকেটশিকারী হওয়ারও! কিছুদিন আগে বিসিবির এক ভিডিও বার্তায় রিশাদ বলেছিলেন, ‘অবশ্যই শীর্ষ উইকেটশিকারি টাইটেলের পাশে আমার নাম দেখতে চাই। একইসাথে অলরাউন্ডার হিসেবে নিজেকে উচ্চ পর্যায়ে দেখার ইচ্ছা।’