শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
খেলাধুলার মাধ্যমে মাদককে সমাজ থেকে বিতাড়িত করতে হবে-মাফরুজা সুলতানা মাইলস্টোন কলেজে নবম শ্রেণির বালিকাদের অংশগ্রহণে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত বিদেশি প্রভুদের নিয়ে বিতাড়িত স্বৈরাচার ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে: তারেক রহমান সরাসরি ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সুপারিশ  ‘বিবেচনায় রয়েছে’: বদিউল আলম ১৬ বছর বঞ্চিতদের এবার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বইমেলয় স্টল বরাদ্দের দাবি ইসির অগাধ ক্ষমতা থাকলেও প্রয়োগে সমস্যা ছিল: বদিউল আলম আমাদের শিক্ষা কর্মসংস্থান খোঁজার মানুষ তৈরি করছে, যা ত্রুটিপূর্ণ: প্রধান উপদেষ্টা সেন্টমার্টিন: ‘স্থানীয়দের জীবিকা বনাম পরিবেশ রক্ষা’ আ. লীগ-জাপা নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাবিতে কফিন মিছিল ১৫ বছরের জঞ্জাল সাফ করতে সময় লাগবে: মির্জা ফখরুল

সিলেটে বন্যায় বিপর্যস্ত এলাকায় ছড়াচ্ছে পানিবাহিত রোগ

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় সোমবার, ৮ জুলাই, ২০২৪

টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে তিন দফায় বন্যায় আক্রান্ত হলো সিলেট। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি বাড়ছে পানিবাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। দূষিত পানি পান ও বানের পানিতে চলাফেরা করায় ডায়রিয়া, চর্মরোগ, শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ (রেসপিরেটরি ট্রাক্ট ইনফেকশন) ও চোখের রোগ দেখা দিয়েছে দুর্গতদের। সিলেট বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৮৬ জন বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। পাশাপাশি মৌলভীবাজারে পানিতে পড়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তদের জন্য সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জসহ চার জেলায় ৬৭১ আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে ৪০৩ মেডিক্যাল টিম।
বিভাগের চার জেলার মধ্যে সবচেয়ে বন্যাকবলিত হয়েছে সিলেটের ১৩ উপজেলার ১০১ ইউনিয়ন ও কয়েকটি পৌরসভা। একইসঙ্গে প্লাবিত হয়েছে সিলেটের এক হাজার ১১৬ গ্রাম। বিভাগের ৪০ উপজেলার মধ্যে দুর্গত উপজেলা ২৬টি। ৩৩৪ ইউনিয়নের মধ্যে বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে ১৫৩ ইউনিয়ন।
সিলেট বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, রবিবার পর্যন্ত সিলেটের ১৩ উপজেলার মধ্যে ১২টি দুর্গত উপজেলায় ১০১ ইউনিয়নের মধ্যে ৬৭টি বন্যায় আক্রান্ত। জেলায় আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে ৪৪৬টি। এখানে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে ১৩৬ মেডিক্যাল টিম। এখন পর্যন্ত ৮১ জন ডায়রিয়ায় ও ৩২ জন শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন। চর্মরোগে আক্রান্ত হন ৫০ জন। এ ছাড়া চোখের রোগে আক্রান্ত হয়েছেন পাঁচ জন। এ ছাড়া অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৫৩ জন। তাদের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে মেডিক্যাল টিম।

সুনামগঞ্জ জেলার ১১ উপজেলার মধ্যে ১১টি বন্যাদুর্গত। এসব উপজেলার ৮৮ ইউনিয়নের মধ্যে বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে ৫৯টি। জেলায় আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে ১৪৩টি। এখানে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে ৯৯টি মেডিক্যাল টিম। এখন পর্যন্ত ১৫ জন ডায়রিয়ায় ও ছয় জন শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন। চর্মরোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩৬ জন। অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ২২ জন।
হবিগঞ্জের নয় উপজেলার মধ্যে চার ইউনিয়ন বন্যায় আক্রান্ত। আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে ১১টি। এখানে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে ৯৪টি মেডিক্যাল টিম। ৪২ জন ডায়রিয়ায় ও ৩২ জন শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন। চর্মরোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫০ জন। এ ছাড়া চোখের প্রদাহে আক্রান্ত হয়েছেন পাঁচ জন। মৌলভীবাজারের সাত উপজেলার মধ্যে পাঁচটি বন্যাদুর্গত। এর মধ্যে ২৩টি ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দি। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তারা। আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে ৭১টি। স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে ৭৪ মেডিক্যাল টিম। এখন পর্যন্ত ৪১ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ ছাড়া অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ১০৩ জন। সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বন্যা পরবর্তী স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ মেডিক্যাল টিম কাজ করে যাচ্ছে। পানিবাহিত রোগ মোকাবিলায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কমিউনিটি ক্লিনিক, স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে রোগীদের।’সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডা. মো. আনিসুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বন্যা পরবর্তীতে নানা রোগবালাই দেখা দেয়, এটা স্বাভাবিক। এজন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। বন্যাদুর্গতদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য বিভাগে আমাদের ৪০৩টি মেডিক্যাল টিম কাজ করে যাচ্ছে।’
বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় সূত্র জানায়, তৃতীয় দফার বন্যায় সিলেট বিভাগে ৩৭৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এর মধ্যে সিলেট জেলায় ২১৩টি, সুনামগঞ্জে ৪৫টি, হবিগঞ্জে আটটি, মৌলভীবাজারে ১০৯টি। বন্যায় বিভাগে ১২ লাখ ৯২ হাজার ১০৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সিলেটে ৫ লাখ ৮৮ হাজার ২৮৭, সুনামগঞ্জে ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৮৩১, হবিগঞ্জে ২ লাখ ৭১৩ এবং মৌলভীবাজারে ৩ লাখ ১৪ হাজার ২৭৭ জন। বিভাগের ৩৭৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন ২০ হাজার ৭৩৩ জন। এর মধ্যে সিলেটে ৯ হাজার ৮৩১, সুনামগঞ্জে ১ হাজার ৪৮১, হবিগঞ্জে ১ হাজার ১২০, মৌলভীবাজারে ৮ হাজার ৩০১ জন। বিভাগে ২ হাজার ৪৮৮টি গবাদিপশুকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হয়েছে। এর মধ্যে সিলেটে ১ হাজার ৫৪৫টি, সুনামগঞ্জে ১০৫টি, হবিগঞ্জে ১২৬টি ও মৌলভীবাজারে ৭১২টি।
বিভাগীয় কমিশনার আবু ছিদ্দীকী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিভাগের বন্যাকবলিত এলাকার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ ও নগদ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। এসবের কোনও সংকট নেই। ইতোমধ্যে বানভাসিদের মধ্যে চাল, শিশুখাদ্য, গোখাদ্য ও নগদ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে বরাদ্দকৃত চাল ও নগদ টাকা যথাযথভাবে পাচ্ছে কিনা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।’




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com