মাছ খেতে পছন্দ করেন কমবেশি সবাই। ছোট-বড় মাছ দিয়ে বিভিন্ন স্বাদের পদ তৈরি করা যায়। তেমনই মাছের এক পদ হলো ‘কোই প্লা’। থাইল্যান্ড ও লাওসের ঐতিহ্যবাহী এক খাবার এটি। জানলে অবাক হবেন, জনপ্রিয় এই খাবার খেয়েই নাকি প্রতিবছর প্রায় ২০ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেন।
লাওস ও থাইল্যান্ডের ইসান অঞ্চলের লাও জনগণের সালাদ হিসেবে এই পদ খান। ‘কোই প্লা’ তৈরি করা হয় কাঁচা মাছ থেকে। অর্থাৎ এই মাছ রান্না করে নয় বরং কাঁচা মাছের কিমা, লেবুর রস, ভেষজ ও মসলা মিশিয়ে অনেকটা সালাদের মতো করে প্রস্তুত করা হয় পদটি।
মূলত কাঁচা মাছ খাওয়ার জন্যই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে অনেকেরই মৃত্যু ঘটে খাবারটি খেয়ে। তবুও জনপ্রিয় ‘কোই প্লা’। থাইল্যান্ড ও লাওসবাসীর কাছে বিশেষ পছন্দের এই খাবার।
কোই প্লা কেন বিপজ্জনক? রান্না ছাড়া মাছ বা মাংস কোনোটিই খাওয়া উচিত নয়। কারণ এসবে নানা ধরনের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। যা প্যারাসাইটিক ডিজিজের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।
যার ফলে বিভিন্ন ক্যানসারের ঝুঁকি দ্বিগুণ বাড়ে। জানা গেছে, থাইল্যান্ড ও লাওসের অনেক মানুষই কোল্যাঞ্জিওকার্সিনোমা বা পিত্তনালির ক্যানসারে মারা গিয়েছেন শুধু কোই প্লা খাওয়ার কারণেই।
২০১৭ সালে থাইল্যান্ডের খোন কায়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের লিভার সার্জন নারোং খুনটিকিও এজেন্স ফ্রান্স-প্রেসকে বলেন, ‘এখানে কোই-প্লা বড় এক স্বাস্থ্যের বোঝা।’ খুনটি জানান, তার বাবা-মা দু’জনেই কোই প্লা খেয়ে পিত্তনালির ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এরপর থেকে তিনি বহু বছর থাইল্যান্ডের গ্রামীণ উত্তর-পূর্বে ভ্রমণ করেছেন ও সস্তা এ ধরনের বিপজ্জনক খাবার খাওয়ার বিপদ সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করেছেন।
দুর্ভাগ্যবশত, ঐতিহ্যবাহী ‘কোই প্লা’ থাইল্যান্ডের ইসান অ লে এত জনপ্রিয় যে এটি খাওয়া বন্ধ করা সেখানে অত্যন্ত কঠিন। সেখানকার স্থানীয়রা এই খাবারে এতোটাই আসক্ত যে, তারা সেই স্বাদ ভুলতে নারাজ। তাতে মৃত্যু হলেও যেন ক্ষতি নেই! জানা গেছে, কোই প্লা একবার মুখে নিলেই তা পিত্তনালির ক্যানসার সৃষ্টির জন্য যথেষ্ট। ‘নীরব ঘাতক’ হিসেবে পরিচিত রোগটির ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার ছাড়া বেঁচে থাকার হার সবচেয়ে কম। এ কারণে থাইল্যান্ডের বৃহত্তম প্রদেশ ইসানে সবচেয়ে বেশি পিত্তনালির ক্যানসার রিপোর্ট করা হয়েছে। সূত্র: অডিটি সেন্ট্রাল