ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হওয়ার পর তার উত্তসূরি কে হবেন তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জোর আলোচনা শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে যার নামটি জোরালোভাবে উচ্চারিত হচ্ছে তিনি হলেন নাসরুল্লাহর আপন চাচাতো ভাই হাশেম সাফিউদ্দিন। হিজবুল্লাহর অন্যতম প্রধান এই ব্যক্তির সংগঠনটির আন্দোলন এবং ইরানের সাথে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। নেতৃত্বের ক্ষেত্রে অনেকেই মনে করছেন সাফিউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের যোগ্য উত্তরসূরি হতে পারেন। বার্তা সংস্থা এএফপিকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে জিও নিউজ। এতে বলা হয়, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হিজবুল্লাহর একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে ধূসর-দাড়িওয়ালা, চশমা পরিহিত সাফিউদ্দিন দলের শীর্ষ পদের সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে এগিয়ে রয়েছেন। তবে এ বিষয়ে সতর্কবার্তা হচ্ছে, ২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের ‘সন্ত্রাসী’ তালিকায় রয়েছে সাফিউদ্দিনের নাম।
কে এই হাশেম সাফিউদ্দিন?
মার্কিন ট্রেজারি তাকে হিজবুল্লাহর একজন উচ্চ পর্যায়ের নেতা এবং সংগঠনটির নির্বাহী সদস্য হিসেবে বর্ণনা করেছে। নাসরুল্লাহ নিহত হওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে দলের প্রধানের দায়িত্বে রয়েছেন সংগঠনটির ডেপুটি চিফ নাইম কাসেম। তিনি হিজবুল্লাহর শুরা পরিষদ (পরামর্শ পরিষদ) কর্তৃক নির্বাচিত নন। দলটির নতুন প্রধান নির্বাচনে শুরা পরিষদের সিদ্ধান্তের জন্য বৈঠক হতে হবে। এখন পর্যন্ত যতটা নিশ্চিত
হওয়া গেছে তাতে হিজবুল্লাহর নতুন প্রধান হিসেবে সাফিউদ্দিনের নামই বেশ গুরুত্বের সাথে আলোচিত হচ্ছে। ইরানের বিপ্লবী গার্ডের কমান্ডার জেনারেল কাসেম সোলাইমানির মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে সাফিউদ্দিনের বড় ছেলের। এ সূত্রে তিনি ইরানের বেশ ঘনিষ্ঠ। সাফিউদ্দিনের সাইয়েদ উপাধি রয়েছে। নাসরুল্লাহর মতো তিনিও ধর্মীয় প-িত।তিনিও মাথায় কালো পাগড়ি পরেন। বেশ কয়েক বছর ধরে নাসরুল্লাহ আত্মগোপনে থাকায় তার হয়ে রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন করেছেন সাফিউদ্দিন। এছাড়া তিনি সংগঠনটির নির্বাহী কাউন্সিলেরও প্রধান। ৪২ বছরের পুরোনো যোদ্ধাগোষ্ঠী হিজবুল্লাহর বিভিন্ন কাউন্সিলে সাফিউদ্দিনকে একাধিক পদ পেতে সহায়তা করেছিলেন নাসরুল্লাহ। এ প্রসঙ্গে ইরানের সমর্থনপুষ্ট শিয়া মিলিশিয়াদের নিয়ে গবেষণা করেছেন বিশেষজ্ঞ ফিলিপ স্মিথ। তিনি বলেন, নাসরুল্লাহ লেবাননের হিজবুল্লাহর মধ্যে বিভিন্ন কাউন্সিলে নানা পদ পেতে সাফিউদ্দিনের জন্য কাজ করছিলেন। ১৯৬৪ সালে লেবাননের দেইর কানুন এন-নাহরের দক্ষিণাঞ্চলের একটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন সাফিউদ্দিন। তিনি ইরানের ইরাকি শহর নাজাফ এবং কোম, শিয়া ধর্মীয় শিক্ষার দুটি প্রধান কেন্দ্রে নাসরুল্লাহর সাথে একসাথে ধর্মতত্ত্ব অধ্যয়ন করেন। যোদ্ধাগোষ্ঠীটির প্রাথমিক দিনগুলোতে দুজনে এক সঙ্গে হিজবুল্লাহতে যোগ দিয়েছিলেন।