ভ্যাঙ্কুভারে ভারতীয় কনস্যুলেটের কর্মকর্তাদের কানাডা প্রশাসন জানিয়েছে, কূটনীতিকদের ওপর নজরদারি চালানো হচ্ছে। আগেও ভারতীয় কূটনীতিকদের নজরে রাখা হত। অডিও-ভিডিও দুই রকমভাবেই ভারতীয় কূটনীতিকদের গতিবিধি চোখে চোখে রাখছে কানাডা প্রশাসন। এমনকি কূটনীতিকদের ব্যক্তিগত কথোপকথনেও আড়ি পাতছে কানাডা প্রশাসন। মোদি সরকার সংসদে এ কথা জানিয়েছে।
রাজ্যসভায় লিখিত প্রতিক্রিয়ায় ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং বলেছেন, একটি স্থিতিশীল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য একে অপরের উদ্বেগ, আঞ্চলিক অখ-তা এবং সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধা অপরিহার্য। কানাডায় ভারতীয় কূটনীতিকদের লক্ষ্য করে সাইবার বা অন্যান্য নজরদারি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে কীর্তি বর্ধন সিং এই রিপোর্টগুলো তুলে ধরেন। কানাডার পদক্ষেপগুলোকে কূটনৈতিক বিধানের স্পষ্ট লঙ্ঘন বলে অভিহিত করে ভারত সরকার ২ নভেম্বর মৌখিকভাবে নয়াদিল্লিতে কানাডিয়ান হাই কমিশনের কাছে একটি আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানায়।
সিং সাম্প্রতিক ব্রিফিংয়ে স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, কানাডিয়ান সরকারের হয়রানি ও ভীতি প্রদর্শন সমর্থনযোগ্য নয়। আমাদের কূটনৈতিক ও কনস্যুলার কর্মীরা ইতিমধ্যে চরমপন্থা ও সহিংসতার পরিবেশে কাজ করছে। কানাডিয়ান সরকারের এই পদক্ষেপ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে এবং যা প্রতিষ্ঠিত কূটনৈতিক নিয়ম ও অনুশীলনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
ভারতীয় কূটনীতিকদের নিরাপত্তার বিষয়ে সিং বলেন, কূটনৈতিক কর্মীদের এবং সম্পত্তির জন্য পর্যাপ্ত সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সরকার কানাডিয়ান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অবিচ্ছিন্নভাবে যোগাযোগ রেখে চলেছে। কূটনীতিকদের ওপর নজরদারি চালানোর পাশাপাশি সাইবার ক্ষেত্রেও ভারতকে ‘বিপজ্জনক’ তকমা দিয়েছে কানাডার একটি রিপোর্ট। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কীর্তি বর্ধন বলেন, ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে খুবই নেতিবাচক ভূমিকা নিচ্ছে কানাডা। তিনি কানাডার মাটিতে ভারত বিরোধী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য ভারতের আহ্বানকে আবারও পুনর্ব্যক্ত করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে ভারতীয় নেতা ও কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে হুমকি মোকাবিলা করা ও তথাকথিত ‘গণভোটের’ মাধ্যমে ভারতকে খ-িত করার প্রচারণা বন্ধ করা।
প্রায় ১.৮ মিলিয়ন ইন্দো-কানাডিয়ান এবং আনুমানিক ৪ লাখ ২৭ হাজার ভারতীয় ছাত্র কানাডার সঙ্গে সম্পৃক্ত। সিং জোর দিয়েছিলেন যে, কানাডায় ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপত্তা এবং কল্যাণ নিশ্চিত করা ভারত সরকারের জন্য একটি অগ্রাধিকার। ২০২৩ সালের জুন মাসে ভারত-কানাডা সম্পর্কের টানাপোড়েনের সূত্রপাত হয়। কানাডায় এক গুরুদ্বারের বাইরে খলিস্তানপন্থী হরদীপ সিং নিজ্জরকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই ঘটনার পেছনে ভারতের হাত রয়েছে বলে সরাসরি অভিযোগ করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস