রবিবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২৮ পূর্বাহ্ন

ব্যর্থ হলে কারোরই অস্তিত্ব রাখবে না খুনি হাসিনা : সারজিস

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২৪

যদি আমরা ব্যর্থ হই কারো অস্তিত্ব খুনি হাসিনা রাখবে না বলে মন্তব্য করেছেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম। গতকাল শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকালে ময়মনসিংহ নগরীর টাউন হলে অ্যাডভোকেট তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ছাত্রজনতা গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ৫৫ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌খুনি হাসিনা এবং তার দোসররা সবদিক দিয়ে চেষ্টা করছে আমরা যেন সফল না হই। কোনোভাবে যদি আমরা ব্যর্থ হই কারো অস্তিত্ব খুনি হাসিনা রাখবে না। তিনি আরো বলেন, ৫ আগস্টে এমন অনেক শহীদ পরিবার রয়েছে যাদের দাফন করতে দেয়া হয় নাই, তাদের বাড়িতে থাকতে দেয়া হয় নাই। তাদের হয়রানি করা হয়েছে। এখন যদি খুনি হাসিনা আসে তবে আবারো একই কাজ করবে তারা। সেখান থেকে আমাদের দায়িত্ব যে স্বপ্ন নিয়ে, যে স্পিরিট নিয়ে অভ্যুত্থান হয়েছে তা রক্ষা করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা আমাদের জায়গা থেকে সরকারের যেমন গঠনমূলক সমালোচনা করবো। একইভাবে আমরা প্রশাসন থেকে শুরু করে সব সেক্টরে তাদের কাজে সহযোগিতা করবো।
পুলিশ প্রশাসন, জেলা ও বিভাগীয় প্রশানের কাছে অনুরোধ করে তিনি বলেন, যারা এই অভ্যুত্থানে রক্তাক্ত হত্যাযজ্ঞের সাথে জড়িত ছিল, যাদের ভিডিও ফুটেজ-ছবি ক্লিয়ার ডকুমেন্ট রয়েছে। সে যে পরিচয়ের হোক না কেন, তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এটা শুধু আমাদের নয়, এখন যারা প্রশাসনের দায়িত্ব পালন করছেন এটা তাদেরও অস্তিত্বের সাথে সম্পৃক্ত। তিনি বিনয়ের সাথে অনুরোধ করে বলেন, যাদের বিরুদ্ধে ডকুমেন্টস আছে তাদের বিচারিক প্রক্রিয়ায় যেন বিন্দুমাত্র দয়া দেখানো না হয়। এটা যদি করা হয় বা প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে হয় তাহলে একসময় দেখা যাবে কোনো বিচারই হচ্ছে না। ফলে পরিণতি মিশরের মতো হবে। বর্তমানে যে কনস্টেবল তাকে তার দায়িত্ব পালন করতে হবে। যিনি বিভাগীয় কমিশনার তাকেও তার পুরো দায়িত্ব পালন করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের মাধ্যমেও যেন কেউ অন্যায়-অবিচারের শিকার না হয়। তাহলে এই জায়গাটা ধীরে ধীরে বড় হবে। দিনশেষে যে স্বপ্ন নিয়ে এত রক্ত দেয়া, জীবন দেয়া, সেটা পূরণ হবে না। আমরা যদি বেঁচে থাকি কোনো শহীদ পরিবার বা আহত যোদ্ধার গাঁয়ে একটা আঁচড় পর্যন্ত লাগতে দেব না। আমরা যদি বেঁচে থাকি কোনো শহিদ পরিবার বা আহত ভাইকে দুর্দশাগ্রস্ত জীবন পার করতে হবে না।
এ সময় সারজিস আলম বলেন, আহতদের তালিকা করে আর্থিক সহযোগিতা চালিয়ে যাচ্ছি। শুধু আর্থিক সহযোগিতা নয় শহীদ পরিবারের সদস্যদের কর্মসংস্থান ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে।
ইসকন নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সারজিস বলেন, ইসকনের কিছু উগ্রবাদীরা যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটিয়েছে। প্রকাশ্য দিবালোকে মানুষকে গলা কেটে করে হত্যা করেছে। সাম্প্রদায়িক যে সম্প্রীতি রয়েছে তা বাংলাদেশে থাকবে। যেকোনো ধর্মালম্বী হতে পারে তারা আমাদের ভাই। কিন্তু ধর্মকে ব্যবহার করে যদি কোনো ধরনের উগ্র সাম্প্রদায়িক কার্যকলাপে লিপ্ত হয়, সেটা ইসকনের মতো কোনো উগ্রবাদী সংগঠন হোক বা অন্য যেকোনো ধর্মের সংগঠন হোক এর বিরুদ্ধে আমাদের সোচ্চার থাকতে হবে। আমরা চাই, উগ্রবাদী যে সংগঠন রয়েছে, যারা ধর্মকে ব্যবহার করে মানুষের মাঝে সাম্প্রদায়িক সঙ্ঘাত ঘটাতে চায় এবং দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায় ওই সকল উগ্রবাদী সংগঠনকে যেন নিষিদ্ধ করা হয়। এই দাবি আমাদের সংগঠন থেকে জানিয়ে দিতে চাই।

ফাউন্ডেশনের সিইও মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ জানান, ছাত্রজনতার আন্দোলনে ময়মনসিংহ বিভাগের ৯৩ জন নিহতের পরিবারের মধ্যে কাগজপত্র ঠিক থাকায় ৫৫ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে। প্রত্যেকের পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়। বাকিদের পর্যায়ক্রমে সহযোগিতা দেয়া হবে। এ সময় ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ, ময়মনসিংহের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ইউসুফ আলী, অতিরিক্ত ডিআইজি মো: শরিফুর রহমান, জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামীম হোসেন, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিক্যাল অফিসার ড. তুবাইল জান্নাত ও শহীদ আহনাফের মা জারতাস পারভীন বক্তব্য রাখেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com