বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু বলেছেন, সংস্কার নিয়ে কারও চিন্তা করার দরকার নেই, সংস্কার আমরা করবো। ৩১ দফা সংস্কার এই বাংলাদেশে আমরা বাস্তবায়ন করবো। নির্বাচনের আগে জাতীয় ঐকমত্যের ভিক্তিতে নির্বাচনী সংস্কারসহ যে কয়টি সংস্কার দরকার সেটা করতে সময় লাগবে না। গতকাল শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে গণফোরামের সপ্তম জাতীয় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। আমীর খসরু বলেন, আজকের এই প্রেক্ষাপটে যেখানে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছি। আবারও ঐক্যবদ্ধ জনতা, ঐক্যবদ্ধ জাতি, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটাই চিন্তা, আগামী দিনের বাংলাদেশ কেমন হবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, স্বৈরাচারের দোসররা কিন্তু বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম বিভিন্ন ভাবে শুরু করেছে। কখনও আনসারের বিদ্রোহ, কখনও সংখ্যালঘু, কখনও অটোরিকশার মাধ্যমে, প্রতিনিয়ত বিভিন্নভাবে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। স্বৈরাচারকে সরিয়েছি আজ কিন্তু আমাদের ঐক্যকে অটুট রাখতে হবে।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছি এবং আমরা সেটা করতে চাই এই কারণে, এই অন্তর্র্বতী সরকারের শান্তিপূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতা হস্তান্তর ছাড়া আর কোনো পথ নেই। এজন্য আমাদের এই প্রক্রিয়ায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে হবে। আজ যে ঘটনাগুলো ঘটছে তা জাতির জন্য সুখবর নয়।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন দাবি নিয়ে বিভিন্ন গোষ্ঠী, বিভিন্ন সংস্থা নামছে, একটা অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে, এসব দাবি দাওয়ার পেছনে অন্য শক্তি কাজ করছে, কারা, এটা আমাদের বুঝতে হবে। এই শক্তির উৎস কোথায় তা জানতে হবে।
বিএনপি নেতা আমীর খসরু বলেন, আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক সমস্যা নেই সেটা আমি কিন্তু বলবো না। এটা ব্যতিক্রম, এটা যেভাবে দেখিয়ে বাংলাদেশে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। সেটা তো বাংলাদেশ নয়। কলকাতায় বাংলাদেশের দূতাবাস ভাঙছে, বিভিন্ন দেশে যে প্রতিক্রিয়া হয় এই অস্থিরতা কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ কিন্তু অস্থির করছে না, সেই প্রতিক্রিয়া দেখা যায় না। অন্যরা যেটা করছে সেটা বাংলাদেশে করতে দেওয়া হবে না। কিন্তু সাবধান থাকতে হবে, সতর্ক থাকতে হবে। এর মাধ্যমে আগামী বাংলদেশ গড়ার যে স্বপ্ন সেটা যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, শান্তিপূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যেন আমরা ফিরে যেতে পারি। আমীর খসরু বলেন, আগামী দিনে যেন একটা নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে পারি। এটা আমাদের লক্ষ্য। সংস্কারের কথা যারা বলে, বহু আগে ৩১ দফা সংস্কারের কথা তুলে ধরেছি। সেই ৩১ দফার মধ্যে আগামীর বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের সবকিছু আছে। সেটা আমরা করবো। আগামী দিনে নির্বাচনের পরে যে সরকার হবে সেটা হবে জাতীয় সরকার এবং সেই জাতীয় সরকার এই ৩১ দফা সংস্কার বাস্তবায়ন করবে। এটা আমরা জাতির কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে সিপিবির সাবেক সভাপতি মোজাহিদুল ইসলাম সেলিম, জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, বিপ্লবী গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতি সাইফুল হক, গণফোরাম নেতা মোস্তফা হোসেন মন্টু বক্তব্য রাখেন। সম্মেলন উদ্বোধন করেন শহিদুল ইসলাম ভূইয়া।