ক্ষমতাসীনরা প্রতিদিন ইতিহাস গিলে খাচ্ছে মন্তব্য করে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, এখন যারা ক্ষমতায় আছে তারা আসাদকে স্মরণ করবে না। যারা ক্ষমতায় আছে তারা তো প্রতিদিন ইতিহাস গিলে খাচ্ছে। সমস্ত কিছু একজন করেছেন, আর কেউ নেই। সমস্ত কৃতিত্ব, সমস্ত প্রশংসা একজনের প্রাপ্য, আর কেউ পেতে পারে না। যে ১১ দফা না হলে শেখ মুজিবুর রহমান জেল থেকে বের হতেন কিভাবে, সেটাই বড় রকমের প্রশ্ন। ১১ দফা আন্দোলন না হলে একদফার তথা স্বাধীনতা যুদ্ধ পর্যন্ত যেত কিভাবে, সেটাও বড় ধরনের প্রশ্ন। তারপরও এই দিনকে, এই ঘটনাকে তারা (আওয়ামী লীগ) কবর দিয়ে ফেলতে চায়। যে কারণে আসাদ বাংলাদেশের মানুষের কাছে এখন আর ওইরকম আইকন নেই। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে শহীদ আসাদ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত ৬৯- এর গণঅভ্যুত্থানের মহানায়ক শহীদ আসাদের স্মরণে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। মান্না বলেন, ইতিহাস এমন যে কোনো-না-কোনোভাবে মানুষের কাছে আলো ছড়ায়। চেষ্টা করলেও কোনো শাসক সেটা বদলে দিতে পারে না। ইচ্ছা করলেই ইতিহাস বানানো যাবে না, ইতিহাসের কান টেনে লম্বা করা যাবে না। ইতিহাসকে যেমন খুশি তেমন রং তুলি দিয়ে আঁকতে পারেন না।
ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, আইয়ুব খান তো স্বৈরশাসক ছিলেন, জবরদস্তি করে ক্ষমতা দখল করেছিলেন। ১০ বছর ছলে-বলে-কৌশলে ক্ষমতায় ছিলেন। আইয়ুব খানকে সবাই মনে করছিল আয়রনম্যান। ওনাকে কেউ সরাতে পারবেন না। অথচ আইয়ুব খানকে চলে যেতে হয়েছে। তিনি বলেন, আয়ুব খানের পুলিশ যখন গুলি করত তখন তার একটা লাল ফিতা দিয়ে রাখত। লাল ফিতা পার হলে গুলি করা হতো। এখন গলির মধ্য দিয়ে বেরোনোর সাথে সাথে গুলি করে দেয়া হয়। এখন মানুষের জীবন কচু পাতার পানির মতো। ওরা যদি মনে করে কাউকে মেরে ফেলবে…। রাস্তায় নামার পর তুলে নিয়ে গেলে কিছু করা যাবে না। এখন যা হয়েছে এতটাও খারাপ সময় তখনো (পাকিস্তান আমলে) ছিল না। মান্না বলেন, আমরা শেখ মুজিবরের ৬ দফায় নৌকায় ভোট দিয়েছিলাম। জিতেছিলাম, আমাদের ক্ষমতায় যাওয়ার কথা। তারা (পাকিস্তানি শাসক) মানে নাই, আমরা শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ করেছিলাম। ওই যুদ্ধে জয়ী হয়েছিলাম। আর এখন ভোট নাই। রাতের বেলায় ভোট ডাকাতি করে নিয়ে যায়। এরা ভোট ডাকাতি করে। এরাতো ডাকাত, ভোট ডাকাত। ক্ষমতায় যারা আছে তাদের ক্ষমতায় থাকার কথা নয়। ওরা আসাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে না, মতিউর রহমান মল্লিকের নাম স্মরণ করবে না। তারা ১১ দফার কথা স্মরণ করবে না। কারণ ওই দিনের কথা মনে করে মানুষ যদি আবার রাস্তায় নামে। তাদের সব স্মৃতি মুছে দাও, সব ধারালো চেতনা ভোঁতা করে দাও। তিনি আরো বলেন, আসাদের থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। সব ধরনের অন্যায়ের বিরোধিতা করতে হবে। এ সময় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খাইরুল কবির খোকনসহ আয়োজক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।