বয়সের ভারে নূঁয়ে পড়েছেন নূর মোহাম্মদ। পথ চলতে এখন তার কষ্টের সীমা নেই কিন্তু সংসার চালাতে নামতে হয় রাস্তায়। হাতে তৈরি দাঁড়ি বিক্রি করতে প্রায়ই তাকে দেখা যায় স্থানীয় হাট-বাজারে। গত ৫০ বছর ধরে তিনি দাঁড়ি বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। আর এমনই একজন সংগ্রামী নূর মোহাম্মদের বাড়ি বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার বড়বাড়িয়া গ্রামে। বয়োবৃদ্ধ নূর মোহাম্মদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, তিনি পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রী ছিলেন। দেশ স্বাধীনের আগে থেকে তিনি হাতে তৈরি দাঁড়ি-পাল্লা বিক্রি করে আসছেন। সে পেশা এখনো ধরে রেখেছেন। সময় বদলেছে সেজন্য হাতে তৈরি দাঁড়ির এখন আর আগের মতো কদর নেই। ডিজিটাল পাল্লা ব্যবহারে এখন ঝুঁকছেন ব্যবসায়ীরা। যার কারণে এসব হাতে তৈরি দঁড়ির ব্যবহার কমে আসছে। কিন্তু তিনি পুরণো পেশাকে ছাড়তে পারছেন না। ৮০ বছর বয়সে এখনো হাট-বাজারে ঘুরে ঘুরে দাঁড়ি বিক্রি করতে হচ্ছে তাকে। কারণ সংসার চালাতে তার আর অন্য পথ খোলা নেই। গত শনিবার চিতলমারী হাটে দাঁড়ি বিক্রি করতে আসলে কথা হয় নূর মোহাম্মদের সাথে। আবেগ জড়িত কন্ঠে নূর মোহাম্মদ আরো জানান, জীবনে অনেক কষ্ট করেছি। এখনো কোন সুখের নাগাল পাইনি। বাস্তু-ভিটা ছাড়া তার তেমন কোন জায়গা-জমি নেই। মাঠে কিছু জমি আছে সেটি দখলবাজরা দখল নিয়েছে। এখন আর সংসার চলে না। ঘরে তার অসুস্থ স্ত্রী রয়েছে। তার ঔষুধ কেনার টাকা নেই। দ’ুটো দাঁড়ি বিক্রি করতে পারলে সে টাকায় ঔষুধ কিনে ঘরে ফিরবেন। চিতলমারী সদর বাজারের তরুণ মিউজিকের স্বত্বাধিকারী ভোলানাথ হালদার জানান, প্রায়ই ওই বৃদ্ধকে হাটে ঘুরে দাঁড়ি বিক্রি করতে দেখা যায়। বয়সের ভারে তিনি চলতে পারেন না তবুও হাট-বাজারে প্রায়ই দেখা যায় তাকে।