ঢাকাই চলচ্চিত্রের একসময়ের ব্যস্ততম চিত্রনায়ক শাহীন আলম গতকাল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ইসলাম ধর্মের অনুশাসন পুরোপুরি পালন করতে হঠাৎ চলচ্চিত্রে অভিনয়কে বিদায় জানিয়েছিলেন সদ্য প্রয়াত এই অভিনেতা। শাহীন আলম তার জীবদ্দশায় এক সাক্ষাৎকারে ধর্মীয় কাজে মনোযোগী হওয়ার কথা বলেছিলেন।
চলচ্চিত্রে ২৭ বছরে বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন শাহীন আলম। দেড়শোর বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। তবে রূপালি ভুবনের ঝলমলে আলো আর বিত্তবৈভব ছেড়ে হঠাৎ ইসলাম ধর্মের অনুশাসন পালনে মনোযোগী হোন শাহীন আলম। শাহীন আলম তার সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আমি তো মুসলমান। পরকালে বিশ্বাসী। আমাকে একদিন না একদিন ওই সর্বশক্তিমানের কাছে ফিরতেই হবে। তখন কী জবাব দেব? একটা মানুষ কত দিন বাঁচে? ধরুন খুব বেশি হলে ১০০ বছর বাঁচব। এরপর তো আল্লাহর কাছে গিয়ে জবাবদিহি করতে হবে। তাই আমি বলব, আগে পরকালের হিসাবের খাতাটা ঠিক রাখতে হবে। এসব বিবেচনা করেই সিনেমা থেকে সরে এসেছি। আস্তে আস্তে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছি।’
তিনি আরো বলেছিলেন, ‘ঢাকাই চলচ্চিত্রে একটা সময় অশ্লীলতা ভর করে। সিনেমা পরিচালকদের কাছ থেকে হাতছাড়া হয়ে প্রযোজকদের হাতে চলে যায়। বেশি লাভের আশায় আমাকে দিয়ে অশ্লীল দৃশ্যে অভিনয়ে চাপ দেয়া হতো। রাজি না হলে কাটপিস জুড়ে দেয়া হতো। এমন পরিস্থিতিতে আমার বড়ভাই হজ পালন শেষে আমাকে সিনেমা ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করে । এর পরে আমিও উপলব্ধি করি। তারপর সিনেমা ছেড়ে দেই।’ শাহীন আলম দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ও ডায়াবেটিস রোগে ভুগছিলেন। সমস্যা গুরুতর হওয়ায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। সর্বশেষ তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যুর হয়। ১৯৮৬ সালে ‘নতুন মুখের সন্ধানে’র মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান শাহীন আলম। তার অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘মায়ের কান্না’। এটি ১৯৯১ সালে মুক্তি পায়। এরপর বেশ কিছু সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি।