আনন্দ টিভির ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি, দৈনিক মানবজমিন ও দৈনিক ময়মনসিংহ প্রতিদিন পত্রিকার সাংবাদিক ওমর ফারুক সুমন ও মোহনা টেলিভিশন ময়মনসিংহ প্রতিনিধি মাহমুদুল হাসান মিলনের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগে দুইজনকে প্রেপ্তার করেছেন ফুলপুর থানা পুলিশ। রবিবার দুপুরে আটককৃতদের জেলা হাজতে প্রেরণ করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, ফুলপুর উপজেলার কাইচাপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মোতালেব (৫৫), ও তারাকান্দা উপজেলার বালকী নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা তাওহিদ হাসান (৩০)।
এ বিষয়ে আনন্দ টিভি’র সাংবাদিক সুমন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সততার সাথে কাজ করার পরিনতি যদি এই হয়, তাহলে এর চেয়ে কষ্টকর আর কিছু হতে পারেনা। আমি কিছুই জানিনা, এদেরকে চিনিওনা।অথচ ফেইসবুকে যা ইচ্ছে তাই লিখে দিলো। যা নিয়ে সাংবাদিক সমাজে আমাকে প্রশ্নবিদ্ধ হতে হয়েছে। তিনি বলেন, ফেইসবুক কোনো স্বীকৃতি গণমাধ্যম নয়।এখানে ইচ্ছে করলেই যা ইচ্ছে তা লিখা যাবেনা। তিনি জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান। সাংবাদিক মাহমুদুল হাসান মিলন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সততার সাথে ময়মনসিংহে সাংবাদিকতা করে আসছি। গত বৃহস্পতিবার পেশাগত কাজে আমিসহ কয়েকজন ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের কাইচাপুর গ্রামে গিয়ে অবৈধ ভাবে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাল মজুদ করে রাখার অভিযোগে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে নিউজ করি। যা কয়েকটি মিডিয়াতেও প্রকাশ হয়। এনিয়ে গ্রেপ্তারকৃত দুইজন তাদের ফেইসবুক ওয়ালে আমাকে জড়িয়ে মানহানিকর স্ট্যাটার্স দেয়। যার ফলে আমি পারিবারিক ও সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন হই। পুলিশকে ধন্যবাদ জানাই আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করার জন্য।
ময়মনসিংহ টেলিভিশন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক ও ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের প্রতিনিধি আবু সালেহ মো.মূসা বলেন, চলমান করোনা দুর্যোগে প্রশাসনের পাশাপাশি সাংবাদিকরাও মাঠে কাজ করে যাচ্ছে। কাজ করতে গিয়ে সাংবাদিক মিলন ও সুমনের মতো অনেকেই হয়রানীর স্বীকার হচ্ছে। আমরা এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা চাই। ময়মনসিংহ বিভাগীয় নিউজ চ্যানেল এসোসিয়েশনের সভাপতি ও সময় টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান হারুন অর রশিদ বলেন, যারা ফেইসবুকে মানহানিকর স্ট্যাটাস দিয়ে সাংবাদিক মিলন ও সুমনকে সামাজিক ভাবে হেয় করেছে, তাদের গ্রেপ্তার করায় সাংবাদিক সমাজে স্বস্তি ফিরেছে। আশা করছি এর যথাযথ বিচারও পাব আমরা।
ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক ও দৈনিক যুগান্তর এবং বাংলাভিশনের স্টাফ রিপোর্টার অমিত রায় বলেন, পেশাগত দায়িত্বপালন করতে গিয়ে সাংবাদিকরা নানা ভাবে নির্যাতিত হচ্ছে। সাংবাদিক মিলনও সুমন এর বাইরে নয়। তবে মামলা নিয়ে দ্রুত আসামীদের গ্রেপ্তার করায় পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই। আশা রাখছি এর প্রকৃত বিচার আমরা পাব। ফুলপুর থানার ওসি ইমারত হোসেন গাজী বলেন, দেশের চলমান পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা অবনতির লক্ষ্যে গ্রেপ্তারকৃতরা সাংবাদিক ওমর ফারুক সুমন ও মিলনের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে গত বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে অপপ্রচার চালালে বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিক সমাজে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। শনিবার রাতে সাংবাদিক মাহমুদুল হাসান মিলন বাদী হয়ে দু’জনের নামে তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা করলে, অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা তাদের অপরাধ স্বীকার করেছেন। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার মো.আহমার উজ্জামান বলেন, আইন সবার জন্য সমান। কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে কারো মানহানি করার অধিকার রাখেনা। তাই অপরাধ যে কেউ করুক না কেন শাস্তি হবেই।
ই-খ/খবরপত্র