বাগেরহাটের চিতলমারীতে এক প্রভাবশালী দখলদারের হুমকির মুখে স্বামীর ক্রয়কৃত বাস্তুভিটা ছেড়ে আসতে বাধ্য হলেন, হাসিনা বেগম নামে এক বিধবা নারী। আপ্রাণ চেষ্টা করেও স্বামীর অস্তিত্ব রক্ষা করতে পারলেন না তিনি। এ যেন ‘জোর যার, মুল্লুক তার, এমনই পরিস্থিতির মুখে অসাহায় ওই নারী নামমাত্র মূল্যে ওই জায়গা অন্যত্র বিক্রি করে প্রাণ নিয়ে বেঁচে ফিরেছেন। তদন্ত পূর্বক ওই দখলদারকে উচ্ছেদসহ তার দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ওই নারী। গত ১৪ জুলাই বুধবার বিকেলে সরেজমিনে ঘুরে কথা হয়, উপজেলার বড়গুণী গ্রামের মৃত বেলায়েত হোসেনের স্ত্রী হাসিনা বেগমের সাথে। তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে সাংবাদিকদের জানান, তার স্বামী কৃষি অফিসে চাকরি করতেন। চাকরি থেকে অবসরে এসে যে টাকা পেয়েছেন সেটি দিয়ে প্রতিবেশি বজলু শেখের কাছ থেকে ১৯৯৭ সালে হাড়িয়ার ঘোপ মৌজার বর্তমান ডিপি ১৫১ নং খতিয়ানের ২৮-২৯ দাগের ৪০ শতক জমি ক্রয় করেন। ওই জমিতে তারা স্থায়ী ভাবে বসবাসের জন্য একটি ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেন। এমতো অবস্থায় একই গ্রামের প্রভাবশালী লিয়াকত মোল্লা ওই জায়গা তার দাবি করে লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে রাতের আঁধারে জোরপূর্বক দখল নেয়। তাদের নির্মাণকৃত ভবনসহ বসতঘর ভেঙে ফেলে। এছাড়া নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত ১০ হাজার ইট, বালু, সিমেন্ট গায়েব করে দেয়। প্রায় ৩ লাখ টাকার মালামাল তারা সরিয়ে ফেলে। এ অবস্থায় ওই জায়গা রক্ষার জন্য স্থানীয় ভাবে একাধিকবার শালিশ দরবার করেও দখলদার লিয়াকত মোল্লাকে উচ্ছেদ করতে পারেননি। উল্টো লিয়াকত মোল্লার অত্যাচারে হাসিনা বেগম তার সন্তানদের নিয়ে ২২ বছর ধরে বসবাসরত বাস্তুভিটা ছেড়ে চলে আসেন। শেষ চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে চলতি বছরের গত জুন মাসে ওই জায়গা বড়গুণী গ্রামের ছানা মিয়া শেখের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। উক্ত জায়গা ছানা মিয়া শেখের বৈধ দলিল থাকা সত্বেও দখল না পেয়ে লিয়াকত মোল্লার বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। বড়গুণী গ্রামের বাসিন্দা মো. আসাদ শেখ জানান, হাসিনা বেগমের পরিবারের প্রতি লিয়াকত মোল্লা যে ধরণের অত্যাচার করে তাদের ভিটেবাড়ি দখল নিয়েছেন এবং তাদের উচ্ছেদ করেছেন এটা নজীর বিহীন। লিয়াকত মোল্লার হুমকিতে হাসিনা বেগমের স্বামী বেলায়েত হোসেন আতঙ্কে হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। বিষয়টি এলাকার সকলের জানা আছে। বৈধ দলিলপত্র থাকা সত্ত্বেও তাদের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে দেওয়া হয়েছে। এ বিয়য়ে লিয়াকত মোল্লার সাথে কথা হলে তিনি জানান, ওই জায়গা তিনি ক্রয়সূত্রে দখল নিয়েছেন তবে লোকজনের সামনে বৈধ কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেন নি। এ ব্যপারে চিতলমারী থানার এসআই রফিকুল ইসলাম জানান, লিয়াকত মোল্লার বিরুদ্ধে থানায় একটা লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।