দিনাজপুরে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির ঘটনায় আটক পুলিশের এএসআই হাসিনুর রহমান ও কনস্টেবল আহসান উল ফারুককে বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে, এএসপি সারোয়ার কবীর সোহাগের বরখাস্তের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়েছে বলেও জানিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এদিকে মা-ছেলেকে অপহরণ এবং মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে আটক সিআইডি পুলিশের এএসপি, এএসআই এবং কনস্টেবল সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় ৫ জন আটক রয়েছে। এই স্পর্শকাতর মামলাটির তদন্তভার এখন দিনাজপুর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজার রহমানের উপর অর্পণ করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, এই মামলায় নতুন করে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। ভুক্তভোগী জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে বুধবার চিরিরবন্দর থানায় ১০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ২৬। পরে মামলাটি দিনাজপুর পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় হস্তান্তর করা হয়। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার বিকেলে পাঁচ জনকে দিনাজপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিশির কুমার বসুর আদালতে হাজির করা হয়।
সন্ধ্যায় আদালতে ১৬৪ ধারায় মামলার অন্যতম আসামি ফসিউল আলম পলাশের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। এরপর পাঁচ জনকেই কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। আদালত সেই সাথে মামলার বাদি জাহাঙ্গীর আলম ও তার ভুক্তভোগী মা জহুরা খাতুন এবং আরও দুই সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করে। স্থানীয় সূত্র জানায়, রংপুর সিআইডির কাছে সোর্স পলাশ চিরিরবন্দর উপজলার আব্দুলপুর ইউনিয়নর নান্দারাই গ্রামের গাদুশা পাড়ার লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধ ৫০ লাখ টাকার প্রতারণার অভিযাগ আনে। এ অভিযাগের প্রেক্ষিতে গত ২৩ আগস্ট সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ৯টায় সিআইডির সহকারি পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার কবির সোহাগ, এএসআই হাসিনুর রহমান ও কনষ্টবল আহসান উল ফারুক, সোর্স সফিউল আলম পলাশ ও মাইক্রো চালক হাবিব মিয়া উক্ত লুৎফরের বাড়িতে যায়। ‘তাকে না পেয়ে তার স্ত্রী ও ছেলেকে কালো মাইক্রোবাস করে তুলে নিয়ে যায়।’
অপহরণের বিষয়টি চিরিরবন্দর থানায় জানানো হলে, প্রযুক্তির সহায়তায় মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার দশ মাইল এলাকায় অপহরণকারীদের অবস্থান শনাক্ত এবং ২০ ঘণ্টা পরে অপহৃতদের উদ্ধার করে পুলিশ। সেখান থেকে রংপুর সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) সারোয়ার কবির সোহাগ, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হাসিনুর রহমান, কনস্টেবল আহসান উল ফারুক ও তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসের চালক হাবিবকে আটক করা হয়। পরে অপহরণে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পরবর্তীতে ফসিউল আলম পলাশ নামে আরও একজনকে আটক করে পুলিশ। দিনাজপুরে অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবি’র ঘটনায় আটক পুলিশের এএসআই হাসিনুর রহমান ও কনস্টেবল আহসান উল ফারুককে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রংপুর সিআইডি পুলিশের এসপি আতাউর রহমান। তিনি জানান, এএসপি সারোয়ার কবীর সোহাগের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়েছে। তাঁর সিদ্ধান্তের উপর এএসপি সারোয়ার কবীর সোহাগের বিষয়টি নির্ভর করছে।