কোনো ব্যক্তির লবিস্ট নিয়োগের দায় বিএনপির না তবে বিএনপি এ পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সরকার একজন প্রবাসী বাংলাদেশী কর্তৃক লবিস্ট নিয়োগের বিষয়টি আজ বিএনপির ঘাড়ে চাপানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা বলতে চাই, দেশের গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে যদি কোনো প্রবাসী কোথাও কোনো পদক্ষেপ নেয়, দেশের প্রতি তার ভালোবাসার জন্য কিছু করে, সে পদক্ষেপ ও দায়িত্ব তার, বিএনপির না। ওই পদক্ষেপকে নৈতিক সমর্থনের দায়িত্ব বাদে অন্য কোনো দায়-দায়িত্ব বিএনপি বহন করে না। তবে বিশ্বের দেশে দেশে প্রবাসীদের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার জন্য এ ধরনের দেশপ্রেমিক পদক্ষেপকে বিএনপি সাধুবাদ জানায় এবং তাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে কথা বলছেন। একটা চিঠি দেখিয়ে তারা মিথ্যাচার করছে। আপনারা দেখুন ওই চিঠি কাকে লেখা হয়েছিল এবং চিঠির বিষয়বস্তু কি ছিল।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার সকল ব্যক্তিবর্গের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য আশ্রয়স্থল, মানবাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনের সবচেয়ে বড় ভ্যানগার্ড। আর তাই বিএনপি আন্দোলন সংগ্রামে অংশ হিসেবে দেশের ডেভেলপমেন্ট পার্টনারদের সমর্থন চায়, মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ চায়। বিএনপি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সংগ্রামের অংশ হিসেবে দেশী-বিদেশী সব অংশীদারদের এই সরকারের সকল অপকর্ম সম্পর্কে অবগত করে রাখতে চায়। বিদেশে লেখা আমার ওইসব চিঠি লবিস্ট নিয়োগের বিষয় নয়, মানবাধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অংশীদারদের প্রতি আহ্বান মাত্র।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সরকার কর্তৃক গৃহীত ব্যবস্থাকে ধামাচাপা দিয়ে কর্তৃত্ববাদী অবৈধ সরকার জনগণের করের টাকায় আমেরিকায় লবিস্ট নিয়োগ করেছে, যা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের মাধ্যমে স্বীকৃত। তার ভাষ্যমতে, সরকারের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের জন্য তারা লবিস্ট নিয়োগ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘খুন-গুমের মতো অপরাধের সাথে জড়িত ব্যক্তির দায় কিংবা ব্যক্তির স্বেচ্ছাচারিতায় নিমজ্জিত প্রতিষ্ঠানের দায় রাষ্ট্র কিংবা সরকার কিভাবে জনগণের টাকায় ভাবমূর্তি রক্ষার নামে ব্যয় করে? বিএনপি মনে করে, জনগণের টাকায় লবিস্ট নিয়োগ করে সরকার মানবাধিকার লংঘনের মতো গুরুতর অপরাধে নিজেদের জড়িত থাকার বিষয়টিই প্রমাণিতভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বিএনপি মনে করে, সরকার জড়িত না থাকলে তা প্রমাণের জন্য তারা উক্ত সাত কর্মকর্তাকে আইনের আওতায় এনে বিচারের ব্যবস্থা করতো। খুন, গুম, গায়েবী মামলা দায়ের বন্ধ করে, নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথে হেঁটে সরকার পদত্যাগ করতো।’