কর্নাটকে হিজাব ইস্যুতে উত্তেজনার মধ্যে মুখ খুলেছেন শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই। ক্লাসরুমে হিজাব পরার দাবিতে সেখানে যে ৬ ছাত্রী লড়াই করছেন, তাদের প্রতি সমর্থন দিয়েছেন তিনি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। ভারতের কর্নাটকে বেশ কিছুদিন ধরে বিক্ষোভ করছেন ছাত্রীরা। সেখানে মুসলিম ছাত্রীদেরকে ক্লাসরুমে স্কার্ফ বা হিজাব পরতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে কলেজের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। তাতে সমর্থন দিয়েছে উগ্র ডানপন্থি বিজেপির সমর্থকরা। এর প্রতিবাদে ওই ৬ মুসলিম ছাত্রীর সঙ্গে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন অন্য কলেজের শিক্ষার্থীরা। কর্নাটকে এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে। মুসলিম ছাত্রীদের স্কার্ফ বা হিজাব পরায় নিষেধাজ্ঞা দেয়াকে ‘হরিফাইং’ বা ভীতিকর বলে বর্ণনা করেছেন মালালা ইউসুফজাই। এ ঘটনায় কর্নাটকজুড়ে ধর্মীয় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
কোথাও কোথাও সহিংসতা দেখা দিয়েছে। এর ফলে সেখানে স্কুল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে তিনদিনের জন্য। এই পরিস্থিতি ভারতের মিডিয়ায় জাতীয় সংবাদ শিরোনাম হয়েছে। অবশেষে বিষয়টি উঠেছে কর্নাটকের হাইকোর্টে। যে ৬ ছাত্রীকে হিজাব পরায় বাধা দেয়া হয়েছে, তাদের একজন আদালতে আবেদন জমা দিয়েছেন। তাতে তিনি দাবি করেছেন, সংবিধানে ধর্মীয় স্বাধীনতার যে গ্যারান্টি দেয়া হয়েছে, তার অধীনে একটি মৌলিক অধিকার হলো হিজাব পরা।
পাকিস্তানে নারী শিক্ষার অধিকারের দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে মাত্র ১৫ বছর বয়সে তালেবানদের গুলি বিদ্ধ করে মালালাকে। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ থেকে তিনি ফিরে এসেছেন। তারপরও তার কণ্ঠস্বর অবনমিত হয়নি। তিনি নারী শিক্ষার অধিকারের প্রতি সোচ্চার। যৌথভাবে পেয়েছেন শান্তিতে নোবেল পুরস্কার। মঙ্গলবার তিনি ভারতের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন, ‘মুসলিম নারীদের একপেশে করে দেয়া বন্ধ’ করতে কিছু করুন। মেয়েদেরকে হিজাব পরে স্কুলে যেতে না দেয়ার বিষয়টি ভীতিকর। বেশি অথবা কম পোশাক পরার কারণে নারীদের বিরুদ্ধে বিরোধিতা করা হচ্ছে।
কর্নাটকের উদুপি জেলায় একটি কলেজের ৬ মুসলিম ছাত্রী হিজাব পরে ক্লাসে প্রবেশ করলে ব্যবস্থাপনা পরিষদ তাদেরকে নিষিদ্ধ করে। তখন থেকেই এ ইস্যুতে উত্তেজনা বিরাজ করছে সেখানে। হিজাব পরা একদল ছাত্রী যখন কলেজের গেট খুলতে বলেন, তখন তা বন্ধ করে দেয়া হয়। ওদিকে হিজাব নিষিদ্ধ করাকে সমর্থন করছে কট্টর হিন্দুত্ববাদী বিজেপির সমর্থকরা। মঙ্গলবার এ নিয়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। তাতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এ অবস্থায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই তিন দিনের জন্য স্কুল বন্ধ ঘোষণা করেছেন। তিনি কর্নাটকের সব শিক্ষার্থী, শিক্ষক, স্কুল ও কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও জনগণকে শান্তি ও স¤প্রতি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।