ভারতের কর্নাটক রাজ্যের উদুপির গভর্নমেন্ট গার্লস পিইউ কলেজে হিজাব পরার দাবিতে মাসখানেক ধরে বিক্ষোভরত মুসলিম ছাত্রীদের ছয়জনের ব্যক্তিগত তথ্য নেটমাধ্যমে ফাঁস করে দেয়া হয়েছে। ওই ছাত্রীদের অভিভাবকরা ইতোমধ্যেই এ বিষয়ে রাজ্য পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। উদুপির পুলিশ সুপার এন বিষ্ণুবর্ধনের কাছে অভিযোগ দায়ের করার পরে শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) এক অভিভাবক বলেন, ‘আমার মেয়ে ও তার বান্ধবীদের নাম, ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, মোবাইল নম্বরসহ নানা তথ্য নেটমাধ্যমে শেয়ার করা হয়েছে। আশঙ্কা করছি, ভবিষ্যতে তাদের হুমকি দিতে সেগুলো ব্যবহার করা হবে।’ এ বিষয়ে পুলিশ সুপার বিষ্ণুবর্ধন বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ওই ছাত্রীদের থেকে এ সংক্রান্ত অনলাইন তথ্য চাওয়া হয়েছে। তা পাওয়া গেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ জানুয়ারি মাসে কর্নাটকের উদুপির ওই কলেজে হিজাব পরিহিত ছাত্রীদের ক্লাস করতে না দেয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে বিতর্কের সূত্রপাত। জেলা প্রশাসনের ‘বার্তা’ পেয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষই হিজাব পরে ক্যাম্পাসে না ঢোকার নির্দেশিকা জারি করেছিল বলে অভিযোগ। কয়েকজন মুসলিম ছাত্রীকে হিজাব পরে ক্যাম্পাসে ঢুকতে বাধা দেয়া হয়। ওই ছয়জন ছাত্রী তার প্রতিবাদ করেছিলেন। এর পর তাদের সমর্থনে বিক্ষোভ শুরু করেন স্থানীয় মুসলিম ছাত্রদের একাংশ। এর পাল্টা হিসেবে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো হিজাব নিষিদ্ধের দাবিতে রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভ শুরু করে।
চলমান এ হিজাব-বিতর্কের ইতি টানতে চলতি মাসে কর্নাটকের সরকারি কলেজগুলোতে পোশাক নির্দেশিকা জারি করেছে সে রাজ্যের বিজেপি সরকার। কর্নাটক শিক্ষা আইন ১৯৮৩-এর কথা উল্লেখ করে ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষের নির্দিষ্ট করে দেয়া পোশাক পরেই শিক্ষার্থীদের কলেজে আসতে হবে। যেসব কলেজে নির্দিষ্ট কোনো পোশাকবিধি নেই, সেখানে এমন পোশাক পরা যাবে না যাতে শিক্ষাঙ্গনের ভারসাম্য, ঐক্য ও শৃঙ্খলা নষ্ট হয়। কর্নাটকের শিক্ষা আইন অনুযায়ী, সরকারি কলেজগুলো নিজস্ব পোশাকবিধি চালু করতে পারে। কয়েকটি সরকারি কলেজে মুসলিম মেয়েদের হিজাব পরে আসার অনুমতি থাকলেও হিজাব পরে ক্লাস করা যাবে কি না সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলা নেই। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা