টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলার সাগরদিঘী এলাকায় সরকারি সেগুন বাগানে বাদুড়ের অভয়াশ্রম হিসেবে গড়ে উঠেছে। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩২ কিলোমিটার দূরে এ সেগুন বাগানটি অবস্থিত। শত বছর ধরে বিভিন্ন প্রজাতির বাদুড় বাস করে আসছে অভয়াশ্রমটিতে। সারাদিন বাদুড়ের এদিক-সেদিক ছোটাছুটি আর কিচিরমিচির শব্দে এক মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে এলাকাটিতে। দেখা যায়, সেগুন ও বেল গাছগুলোতে বাদুড়ের আশ্রয়স্থল। শত শত বাদুড়ের দল ডানা মেলে এ গাছ থেকে ও গাছে ছুটোছুটি করছে এবং একে অপরের সাথে মিলিত হচ্ছে। এমন দৃশ্য প্রকৃতির এক অপার সৌন্দর্যের। পড়ন্ত বিকেলে বাদুড়গুলো খাদ্যের সন্ধানে বিভিন্ন স্থানে উড়ে যায়। এসব মনোরম দৃশ্য দেখতে অনেক প্রকৃতি প্রেমিক ছুটে আসে এখানে। করটিয়া সরকারি সাদত কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ছানোয়ার হোসেন জানান, বাদুড় পাখি হিসাবে পরিচিত হলেও মূলত বাদুড় একটি স্তন্যপায়ী প্রাণী। বাদুড়ই একমাত্র উড়ন্ত স্তন্যপায়ি প্রাণী, যে উড়তে পারে। তিনি আরো বলেন, পৃথিবীতে প্রায় ১১০০ প্রজাতির বাদুড় রয়েছে। বাদুড়ের আদি বাসস্থান যুক্তরাজ্য। তবে বাংলাদেশসহ এশিয়া মহাদেশের অনেক দেশেই বাদুড় দেখা যায়। স্তন্যপায়ী এ প্রাণীর অন্যতম খাদ্য হল ফলমূল। বাদুড় কিছু রোগের জীবাণু বহন করলেও পরাগায়ন সৃষ্টির অন্যতম মাধ্যম হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। গাছগাছালি কমে যাওয়া এবং গাছগুলোতে বিভিন্ন ওষুধ দেয়ায় বাদুড় এখন অনেক কমে গেছে বলে মনে করেন ছানোয়ার হোসেন । জানান পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে, মার্টির উর্বরতা বৃদ্ধিতে বাদুড়ের অনেক ভূমিকা রয়েছে। স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানান, বৃটিশ শাসনামল থেকে ঘাটাইল উপজেলার সাগরদিঘী এলাকায় বাদুড় আশ্রয় নিয়ে আসছে। তবে বর্তমানে নানা কাজে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং লোকজন বৃদ্ধির কারণে বাদুড়ের সংখ্যা আগের চেয়ে কিছুটা কমে এসেছে।