শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪২ অপরাহ্ন

একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা পিএইচডি রুহুল

সাদুল্লাপুর (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় শনিবার, ৪ জুন, ২০২২

নিভৃত গ্রামাঞ্চলের কৃতি সন্তান রুহুল আমিন। শিক্ষা জীবনে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেছেন। একসময়ে স্বপ্ন দেখেন গ্রামীন মানুষদের জীবন মানোন্নয়নের। এ স্বপ্নের বাস্তবরূপ দিতে নিজ উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন আম-লিচু ও লটকনের বাগান। এই বাগানে কর্মসংস্থান মিলেছে অনেকের। লাভবান হচ্ছেন নিজেও। সম্প্রতি সরেজমিনে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের তরফ ফাজিল গ্রামে দেখা যায় লাল-সবুজ ফলের সমাহার। এখানে বিশাল মাঠজুড়ে নজর কাড়ছে থোকা থোকা আম-লিচু-লটকন ফলের। মুগ্ধকর এই সৌন্দর্যের মাঠে ফল সংগ্রহসহ পরিচর্যায় ব্যস্ত শ্রমিকরা। জানা যায়, ওই গ্রামের নুরুল হোসেন সরকার খোকার ছেলে রুহুল আমিন। সম্ভ্রান্ত পরিবারের একজন চৌকস মেধা সম্পন্ন ব্যক্তি তিনি। একাডেমিক শিক্ষা জীবনে নানা সফলতার সঙ্গে অর্জন করেছেন পিএইচডি ডিগ্রি। বর্তমানে কর্মরত আছেন ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ নামের একটি আন্তজার্তিক উন্নয়ন সংস্থায়। এখান থেকে নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করাসহ গ্রামীন শ্রমজীবি মানুষদের জীবন মানোন্নয়নের স্বপ্ন দেখেন। অবশেষে এই স্বপ্ন পুরণ হয়েছে তার। নিজস্ব প্রায় দুই একর জমিতে রোপন করা হয় আম-লিচু ও লটকনের চারা। ৪ বছর আগে এই বাগান গড়ে তোলা হয়েছে। ইতোমধ্যে আসতে শুরু করেছে ওইসব চারার ফল। কয়েক দাফায় এই ফলগুলো বিক্রি করে অনেকটাই লাভের মুখ দেখছেন এই উদ্যাক্তা রুহুল আমিন। শুধু নিজেই লাভবান নয়, এ বাগানে যুক্ত রয়েছে বেশ কিছু শ্রমিক। এসব শ্রমিকের মধ্যে প্রধান দায়িত্বে আছেন বকুল উদ্দিন আকন্দ নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি। কৃষি উদ্যাক্তা ড. রুহুল আমিন অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করার সুবাদে তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে বকুল উদ্দিন নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করেছে চলেছেন। আর ড. রুহুল আমিনের সার্বিক পরিকল্পনা ও পরামর্শক্রমে একঝাঁক শ্রমিক এই ফলদ বাগানে কাজ করে জীবিকা নির্বাহের পথ খুঁজে পেয়েছেন। চলতি মৌসুমে এই বাগান থেকে বাম্পার ফলন ও অধিক দাম পেয়ে খুশির বন্যা বইছে ওই উদ্যাক্তাসহ শ্রমিকদের। তাদের নিরলস পরিশ্রমের ফসলগুলো বিক্রি করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। এখানেও লাভবান হচ্ছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিক ও ক্ষুদে ব্যবসায়ী ব্যক্তিরাও। ড. রুহুল আমিনের এমনি কর্মযজ্ঞতা তাক লাগিয়েছে এলাকাবাসীর মধ্যে। এমতাবস্থায় স্থানীয় অনেক কৃষক ও বেকার যুবক ওই বাগানকে অনুকরণ করে ফলদ বাগান স্থাপনে ঝুঁকে পড়েছে। যেন রসুলপুরের বৃহত্তর এলাকাটি ধীরে ধীরে ফল-মূলের ভা-ারে পরিনত হয়ে উঠছে। এছাড়া ‘লিচুবাগান’ হিসেবে তরফ ফাজিল গ্রামটি পরিচিতও লাভ করেছে।  শ্রমিক রাজিব আকন্দ বলেন, আগে আমার সংসারে নুন আন্তে পান্তা ফুরায় অবস্থায় ছিল। এরই মধ্যে রুহুল ভাইয়ের বাগানে কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখের দিন কাটছে। বাগানটির তত্বাবধায়ক বকুল উদ্দিন আকন্দ জানান, বয়স বাড়ার সঙ্গে সংসারে অভাব-অনটন যেন নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে এই বাগানের দেখা-শোনার দায়িত্ব পালন করে যেসব ভাতাদি পাই তা দিয়ে ঘুচিয়ে যাচ্ছে সংসারের সেই  টানাপোড়েন। তরফ ফাজিল গ্রামের উদ্যাক্তা ড. মো. রুহুল আমিন বলেন, আমার প্রফেশনাল কাজের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে একজন কৃষি উদ্যাক্তা হওয়ার চেষ্টা করেছি। আমার এলাকায় প্রায় দুই একর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির আম-লিচু ও লটকন চাষাবাদ করছি। এখান থেকে ভালো ফল পাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, আমি অনুরোধ করব এলাকার যাদের সুযোগ আছে তারা যেন কৃষি উদ্যাক্তা হওয়ার জন্য এগিয়ে আসে। কর্মসংস্থানের পাশাপাশি নিজেরাও অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন বলে আমার বিশ্বাস। সাদুল্লাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মতিউল আলম বলেন, আমরা উদ্যান তাত্ত্বিক ফুল-ফল উৎপাদনে কৃষকের মাঠে নিরলসভাবে কাজ করছি। তাই দানাদার শস্যের ওপর চাপ কমিয়ে ফুল-ফল উৎপাদনে গুরুত্ব দিয়ে আসছি। সেই সঙ্গে উদ্যাক্তা ড. রুহুল আমিনকে লাভবান করতে সর্বাতœকভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com