কারাগার থেকে আদালতে তোলা হবে এই খবরে স্যারকে দেখতে নীলফামারী আদালত প্রাঙ্গনে জড়ো হন ৪০কিলোমিটার দূর থেকে আসা দেড়’শ শিক্ষার্থী। সোমবার দুপুর সোয়া বারটার দিকে শিক্ষক এবং অবিভাবকদেরও দেখা গেছে এ সময়। তবে এদিন আদালতে হাজির করা হয়নি কারাগারে থাকা নাউতারা মডেল স্কুল এ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মাহামুদুল হাসান নয়নকে। আদালত প্রাঙ্গণে থাকা কয়েকজন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সকাল নয়টার দিকে রওনা হয়ে দুই ঘন্টা পর সকাল এগারটার দিকে নীলফামারী আদালত প্রাঙ্গণে পৌঁছেন তারা। অটোরিকসা যোগে তারা সবাই এখানে আসেন। জানা যায়, নাউতারা মডেল স্কুল এ্যান্ড কলেজের পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার অপরাধে ডিমলা থানায় গত ২মে মামলা করেন নাউতারা ইউনিয়নের নিজপাড়া এলাকার ওই ছাত্রীটির বাবা। একই মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন অপর আসামী নাউতারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আশিক ইমতিয়াজ মোর্শেদ। আদালত প্রাঙ্গণে অবস্থান করা নাউতারা মডেল স্কুল এ্যান্ড কলেজের অবিভাবক সদস্য মনিরা ইয়াসমিন জানান, প্রতিষ্ঠান প্রধানকে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হয়েছে। প্রতিষ্ঠান প্রধান নয়ন পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীর সাথে এ রকম ঘটনা ঘটাবে আমি মনে করি না। ওই স্কুলে অধ্যয়নরত বন্যা রায় বলেন, আমাদের স্যারকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে জেলে রাখা হয়েছে। অনেক দিন থেকে স্যার স্কুলে নেই আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। শুনেছি আজ জেল থেকে আদালতে তোলা হবে স্যারকে, এজন্য আমরা স্কুল থেকে আদালত চত্বরে এসেছি একনজর দেখার জন্য কিন্তু পরে জেনেছি আজকে আদালতে হাজিরার তারিখ নেই স্যারের। অষ্টম শ্রেণীর আরেক ছাত্রী মিনহা আকতার বলেন, আমাদের কাছে বিশ^াস হয় না স্যার এরকম ঘটনা ঘটিয়েছেন। আমরা স্যারের মুক্তি চাই। সুষ্ঠু তদন্ত করে ঘটনার পেছনে যারা রয়েছে তাদের শাস্তি চাই। প্রতিষ্ঠানের সহকারী প্রধান শিক্ষক মিলন রায় বলেন, শিক্ষার্থীরা স্যারকে দেখার জন্য কয়েকদিন থেকে উদগ্রীব হয়ে রয়েছে। বারবার বলছে দেখা করার জন্য। শুনেছি আজ হাজিরার তারিখ রয়েছে এজন্য শিক্ষার্থীদের অনুরোধে শিক্ষক অবিভাবক মিলে একটু দেখার জন্য এসেছি আমরা সবাই। দেড়’শ জনের মত এসেছে নীলফামারীতে। অটোরিকসা যোগে এসেছি আমরা সবাই। নাউতারা মডেল স্কুল এ্যান্ড কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি শামসুল হক সরকার বলেন, মামলায় যে তারিখ দেখানো হয়েছে(২৮ এপ্রিল) সেদিন আমি স্কুলে ছিলাম। অনেকে ছিলাম আমরা। সেদিন কোন কিছু কানে আসেনি। মামলা হওয়ার পর আমরা শুনছি ধর্ষণ চেষ্টার কথা। আমি মনে করি পরিকল্পিত ভাবে বিদ্যালয়ের প্রধান ও তার ভাই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আশিক ইমতিয়াজ মোর্শেদ আসামী করে মামলা দেয়া হয়েছে। নাউতারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আশিক ইমতিয়াজ মোর্শেদ বলেন, একে বারে মিথ্যে মামলা। প্রধান আসামী আমার বড় ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান আর আমি তার ছোট। সবচেয়ে কমবয়সী হিসেবে আমি এবার পরিষদে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। মুলত হেয় প্রতিপন্ন এবং সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছি। নীলফামারী জজ কোর্টের আইনজীবী লায়লা আঞ্জুমান আরা ইতি বলেন, মামলাটি তদন্তাধিন যে কারণে নি¤œ আদালতে একটি তারিখ ছিলো। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জামিনে থাকায় হাজিরা দিয়েছেন এবং প্রধান আসামী মাহামুদুল হাসান নয়নের জামিন আবেদন প্রার্থনা করি তবে বিজ্ঞ আদালত জামিন আবেদন নাকোচ করেছেন। আমরা উচ্চ আদালতে যাবো। এ ব্যাপারে নীলফামারী কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মোমিনুল ইসলাম মোমিন বলেন, আজকে নাউতারা ইউনিয়নের ওই শিক্ষকের হাজিরার তারিখ ছিলো না। আদালতেও তাকে তোলা হয়নি।