শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
খেলাধুলার মাধ্যমে মাদককে সমাজ থেকে বিতাড়িত করতে হবে-মাফরুজা সুলতানা মাইলস্টোন কলেজে নবম শ্রেণির বালিকাদের অংশগ্রহণে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত বিদেশি প্রভুদের নিয়ে বিতাড়িত স্বৈরাচার ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে: তারেক রহমান সরাসরি ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সুপারিশ  ‘বিবেচনায় রয়েছে’: বদিউল আলম ১৬ বছর বঞ্চিতদের এবার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বইমেলয় স্টল বরাদ্দের দাবি ইসির অগাধ ক্ষমতা থাকলেও প্রয়োগে সমস্যা ছিল: বদিউল আলম আমাদের শিক্ষা কর্মসংস্থান খোঁজার মানুষ তৈরি করছে, যা ত্রুটিপূর্ণ: প্রধান উপদেষ্টা সেন্টমার্টিন: ‘স্থানীয়দের জীবিকা বনাম পরিবেশ রক্ষা’ আ. লীগ-জাপা নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাবিতে কফিন মিছিল ১৫ বছরের জঞ্জাল সাফ করতে সময় লাগবে: মির্জা ফখরুল

বিমানের মতো ট্রেনের টিকিট পদ্ধতি চালুর প্রস্তাব

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৯ আগস্ট, ২০২২

চাহিদা বাড়লে ভাড়া বাড়বে, চাহিদা কমলে ভাড়াও কমবে উড়োজাহাজের টিকিটের মতো রেলেও এই পদ্ধতি চালু করার প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল। এই নিয়মসহ রেলের আয় বাড়াতে যৌক্তিক হারে ভাড়া বাড়ানো, রেলের গতি ও কোচ বাড়ানো, ট্রেন ও স্টেশনে বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন প্রচারের ব্যবস্থা করাসহ বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছে তারা। সম্প্রতি তাদের এসব প্রস্তাব জাতীয় সংসদের রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিতে দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত জুনে সংসদীয় কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রেনের ঘাটতি থেকে বের হওয়ার লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল। ভারতীয় রেলওয়ের মতো টিকিটের ‘তৎকাল সিস্টেম’ চালু করার প্রস্তাব দিয়ে এতে বলা হয়, কিছু টিকিট সংরক্ষিত থাকবে। জরুরি প্রয়োজনে বেশি ভাড়া দিয়ে এই টিকিট কেনা যাবে।
ওই কমিটির প্রতিবেদনে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানো, ট্রেন পরিচালনার সুবিধা বাড়ানোর মাধ্যমে আয় বাড়ানো, ভূমি ব্যবস্থাপনা, সঠিক রেল ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন ও জনবল কাঠামোর উন্নয়নের মাধ্যমে আয় বাড়ানোর বেশ কিছু প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। ৪ আগস্ট জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভায় ওই প্রতিবেদনটি দেওয়া হয়। তবে এটি নিয়ে কমিটি এখনো কোনো আলোচনা করেনি। বছরের পর বছর লোকসান গুনে চলছে রেলওয়ে। রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, রেলওয়ে ট্রেনভিত্তিক খরচের হিসাব তৈরি করে না। সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশ রেলওয়ের ব্যয় ও আয় বিবেচনায় নিয়ে প্রতিবছর ‘রেলওয়ে কস্টিং প্রোফাইল’ তৈরি করা হয়। এই প্রোফাইলে যাত্রীবাহী ট্রেন ও মালবাহী ট্রেনের প্রতি কিলোমিটার চালানোর খরচ হিসাব করা হয়। সে হিসাবে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে যাত্রীপ্রতি প্রতি কিলোমিটারে খরচ হয়েছে ২ টাকা ৪৩ পয়সা। আয় হয়েছে ৬২ পয়সা। আর মালামাল পরিবহন বাবদ এক কিলোমিটারে প্রতি টনে খরচ হয়েছে ৮ টাকা ৯৪ পয়সা, আয় হয়েছে ৩ টাকা ১৮ পয়সা। সংসদীয় কমিটি বেসরকারি খাতে দেওয়া ট্রেনগুলোর আয়-ব্যয়ের হিসাব চেয়েছিল। তবে তারা আয়ের হিসাব দিলেও ব্যয়ের হিসাব এখনো দিতে পারেনি। রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, এ ধরনের প্রস্তাবের বিষয়ে কমিটিতে কোনো আলোচনা হয়নি। তাঁরা রেলের আয়-ব্যয়ের বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। আয় কীভাবে বাড়ানো যায়, সেটা দেখতে বলেছে কমিটি।
রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঈদ, পূজার মতো বিভিন্ন উৎসব, ভর্তি পরীক্ষা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটির সময় যাত্রীর চাপ বেড়ে যায়। এ সময় ট্রেনের ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশিসংখ্যক যাত্রী পরিবহন করা হয়। এতে কোচের ব্যাপক ক্ষতি হয়, এটি আর্থিক ক্ষতির একটি কারণ। এ ক্ষেত্রে বিমানের টিকিটের ভাড়া সিস্টেম অর্থাৎ চাহিদা বাড়লে ভাড়া ভাড়া বাড়বে এবং চাহিদা কম থাকলে ভাড়া কম থাকবে, এভাবে চাহিদাভিত্তিক ট্রেনের টিকিটের মূল্য বৃদ্ধি করা যৌক্তিক। এতে আয়ও বাড়বে। ভারতীয় রেলওয়ের মতো টিকিটের ‘তৎকাল সিস্টেম’ চালু করার প্রস্তাব দিয়ে এতে বলা হয়, কিছু টিকিট সংরক্ষিত থাকবে। জরুরি প্রয়োজনে বেশি ভাড়া দিয়ে এই টিকিট কেনা যাবে। এতে সব মেইন লাইন ডবল সেকশন করা এবং ট্রেনের গতি বাড়ানোর সুপারিশ করে বলা হয়, ঢাকা-জয়দেবপুর সেকশনটি জটিল। এখানে ২৫টি স্বীকৃত এবং ২০টি অস্বীকৃত এলসি গেট আছে। এ কারণে এখানে ট্রেনের গতি ঘণ্টায় মাত্র ৩০ কিলোমিটার। এই সেকশনে ট্রেনলাইন আন্ডার গ্রাউন্ড করা গেলে এবং এলসি গেটের রোড অংশ ব্রিজের মতো করা হলে কিছু সুবিধা পাওয়া যাবে। ট্রেনের গতি কমপক্ষে ৮০ কিলোমিটার করা সম্ভব হবে।
মালবাহী ট্রেন পরিচালনা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে বলা হয়, একটি মালবাহী ট্রেন পরিচালনা করলে খরচের তিন গুণ আয় হয়। অন্যদিকে যাত্রীবাহী ট্রেন পরিচালনা করে খরচ তোলা যায় না। তাই মালবাহী ট্রেন পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয়সংখ্যক লোকো মাইটার, লোকোমোটিভ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
রেলওয়ের প্রতিটি স্টেশনকে একটি বাণিজ্যিক কেন্দ্র (বিজনেস হাব) করা সম্ভব। পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনা করে স্টেশনগুলোর ট্রেনের অপারেশনাল প্রয়োজনের বাইরে বহুতল ভবন করে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মার্কেট করা যেতে পারে। স্টেশন বিল্ডিংয়ের পাশের প্রয়োজনীয় জায়গা বাদে প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে বিজনেস সেন্টার করা হলে আয় বাড়বে। জাপান, মালয়েশিয়া, রাশিয়াসহ ইউরোপ, আমেরিকায় এটি আছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জাপান রেলওয়ের প্রায় ১৭ শতাংশ আয় আসে বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন প্রচারের সুযোগ দিয়ে। ট্রেন, স্টেশন এবং রেলের জমিতে বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন প্রচার সুবিধা দিয়ে আয় বাড়ানো যায়। এ ছাড়া সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে রেলের জমিতে পাঁচ তারকা আবাসিক হোটেল, মার্কেট করা যায়।
ভারতীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়ে এতে বলা হয়, দেশের রেল ব্যবস্থাপনা দুর্বল। গতানুগতিকভাবে রেল ব্যবস্থাপনা চলছে। এ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রম প্রকল্প নেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। এ ক্ষেত্রে নতুন কোনো সংস্কার প্রকল্প নয় বরং ভারতীয় রেলওয়ের মতো অবিকল ব্যবস্থাপনা চালু করা গেলে বাংলাদেশ রেলওয়ের ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন করা সম্ভব। ভারতের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট বাংলাদেশের মতোই প্রায়। তাই ভারতীয় রেলওয়ের উন্নত ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করা যেতে পারে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com