জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত বৃহস্পতিবার সতর্ক করেছেন যে পৃথিবী অপরিবর্তনীয় ‘জলবায়ু বিশৃঙ্খলার’ দিকে যাচ্ছে। তিনি মিশরে আসন্ন জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনে বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে নিঃসরণ কমাতে, জলবায়ু অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোকে নবায়নযোগ্য শক্তিতে তাদের স্থানান্তর ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে সহায়তা করে বিশ্বকে পুনরায় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান।
জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত জাতিসঙ্ঘের ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনের ২৭তম বার্ষিক সম্মেলন (কপ-২৭) আমাদের গ্রহের জন্য জলবায়ু বিশৃঙ্খলা এড়াতে প্রয়োজনীয় আস্থা ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জায়গা হতে হবে।’ তিনি বলেন, মিশরের শহর শারম আল-শেখে ৬ নভেম্বর শুরু হতে যাওয়া কপ-২৭-এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল হলো নির্গমন দ্রুত কমাতে সুস্পষ্ট রাজনৈতিক ইচ্ছা থাকা।
গুতেরেস বলেন, ‘এর জন্য উন্নত দেশ ও উদীয়মান অর্থনীতির মধ্যে একটি ঐতিহাসিক চুক্তি প্রয়োজন। আর যদি সেই চুক্তি না হয়, আমরা ধ্বংস হয়ে যাব।’ চুক্তিতে মহাসচিব বলেন যে, ধনী দেশগুলোকে বহুপক্ষীয় উন্নয়ন ব্যাংক এবং প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর সহায়তার সাথে আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করতে হবে। যাতে উদীয়মান অর্থনীতিগুলো তাদের নবায়নযোগ্য শক্তিতে স্থানান্তর গতিশীল করতে সহায়তা করে।
তিনি আরো বলেন, গত কয়েক সপ্তাহের প্রতিবেদনে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির একটি পরিষ্কার ও সতর্কমূলক চিত্র দেখা গেছে, যেখানে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন রেকর্ড মাত্রায় বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেখানে বিজ্ঞানীদের ভাষ্য মতে, ২০৩০ সালের মধ্যে ৪৫ শতাংশ কমানো প্রয়োজন। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ২০১৫ সালে গৃহীত যুগান্তকারী প্যারিস চুক্তিতে বলা হয়েছিল যে এই শতাব্দীর শেষ নাগাদ প্রাক-শিল্প সময়ের তুলনায় বৈশ্বিক তাপমাত্রা সর্বাধিক দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পাবে এবং তা যতটা সম্ভব এক দশমিক পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি হবে। গুতেরেস বলেছেন যে, গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন এখন ১০ শতাংশ বৃদ্ধির পথে এবং শতাব্দীর শেষ নাগাদ বর্তমান নীতির অধীনে তাপমাত্রা দুই দশমিক আট ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়বে। তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘এর অর্থ এই দাঁড়ায় যে আমাদের গ্রহ এমন এক অবস্থায় যাচ্ছে যেখানে জলবায়ু বিশৃঙ্খলাকে অপরিবর্তনীয় করে তুলবে এবং চিরতরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি ঘটাবে।’