শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
খেলাধুলার মাধ্যমে মাদককে সমাজ থেকে বিতাড়িত করতে হবে-মাফরুজা সুলতানা মাইলস্টোন কলেজে নবম শ্রেণির বালিকাদের অংশগ্রহণে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত বিদেশি প্রভুদের নিয়ে বিতাড়িত স্বৈরাচার ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে: তারেক রহমান সরাসরি ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সুপারিশ  ‘বিবেচনায় রয়েছে’: বদিউল আলম ১৬ বছর বঞ্চিতদের এবার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বইমেলয় স্টল বরাদ্দের দাবি ইসির অগাধ ক্ষমতা থাকলেও প্রয়োগে সমস্যা ছিল: বদিউল আলম আমাদের শিক্ষা কর্মসংস্থান খোঁজার মানুষ তৈরি করছে, যা ত্রুটিপূর্ণ: প্রধান উপদেষ্টা সেন্টমার্টিন: ‘স্থানীয়দের জীবিকা বনাম পরিবেশ রক্ষা’ আ. লীগ-জাপা নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাবিতে কফিন মিছিল ১৫ বছরের জঞ্জাল সাফ করতে সময় লাগবে: মির্জা ফখরুল

পুতিনের বীরত্বপূর্ণ আখ্যান ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছে

রোনাল্ড সানি
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১১ নভেম্বর, ২০২২

মানুষ বিশ্বকে বোঝে, বুঝতে চায়। একই ভাবে নিজের দেশকে উপলব্ধি করে প্রতিটি জাতি। শেকড় সন্ধানী মানুষের অনুধাবন থেকেই জন্ম নেয় নানা প্রশ্নÍ আমি বা আমরা কোথা থেকে এসেছি, কীভাবে এসেছি এবং কোন গন্তব্যে হাঁটছি। এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার মধ্য দিয়ে আমরা নিজেদের সম্পর্কে বলি, বলি অন্যদের সম্পর্কে। মূলত আমরা যে রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবেশে নিজেদের একাত্ম করেছি তার মূলে রয়েছে এ রকম বহু প্রশ্ন-উত্তর এবং গল্প-আখ্যান। ঠিক এ ধরনের আখ্যানকে কেন্দ্র করেই ইউক্রেন সংকটের অবতরণিকা। আমরা দেখে আসছি, যুদ্ধের মাসগুলো এক এক করে যেমন এগিয়েছে, তেমনি একে ঘিরে ঘুরপাক খেয়েছে প্রশ্ন-উত্তর ও গল্পগুলোও। যুদ্ধে অবতীর্ণ পক্ষদ্বয়ের ক্রিয়াকলাপের ওপর ভিত্তি করে আখ্যানগুলো ক্রমশ দানা বেঁধেছে। সত্যিকার অর্থেই রাশিয়া এবং ইউক্রেন উভয় দেশই নিজের মতো করে গল্প-ইতিহাস লেখার চেষ্টা করেছে, করছে। কীভাবে এবং কোন কারণে এই সংঘাতের সৃষ্টিÍএই প্রশ্নে উভয় পক্ষ যে যার মতো করে বলে যাচ্ছে।
একজন ইতিহাসবিদ হিসেবে আমি মনে করি, রাশিয়া এবং ইউক্রেন উভয় দেশের আখ্যানেই গন্ডগোল আছেÍপ্রতিটি গল্পই অপর্যাপ্ত; এবং এমনকি ভ্রান্ত! এ দাবির সপক্ষে স্পষ্ট যুক্তি দাঁড় করানো যায়। যেমনÍ হতে পারে গল্পগুলো সত্য এবং তা ঘটনা ও বাস্তবতার সঙ্গে অনেকাংশে সঙ্গতিপূর্ণ। কিন্তু সম্পূর্ণরূপে বানোয়াট গল্প যে ফাঁদা হচ্ছে না, এর নিশ্চয়তা কী? আবার অধিকাংশ ক্ষেত্রেই লক্ষণীয়, কোনো একটা পক্ষ একবার একটি গল্পের চিত্র তুলে ধরলে ঠিক একই ধাঁচের আখ্যান শোনা যাচ্ছে বিপরীত পক্ষের মুখে। এক্ষেত্রে দুঃখজনকভাবে বলতে হয়, উভয়পক্ষের গল্পই মিথ্যা-বানোয়াট প্রমাণিত হলে অবাক হওয়ার অবকাশ থাকবে না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এরকমটাই ঘটে থাকে।
রাশিয়া এবং ইউক্রেনের ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের ঘটনাগুলো থেকে দেখা যায়, রাশিয়ার রাজনীতিবিদ এবং এমনকি দেশটির গণমাধ্যমগুলো দাবি করেছে যে, ইউক্রেনে নাৎসিদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে পুতিন। ২০১৪ সালের অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নাৎসিরা ক্ষমতা দখল করে দেশটিকে পশ্চিমের সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়ার যে পথে পরিচালিত করেছিল তা রাশিয়ার জন্য হয়ে ওঠে বড় হুমকি। আর এ হুমকিই ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে বাধ্য করে রাশিয়াকে। রাশিয়ার সৈন্যরা তাদের ইউক্রেনীয় ভাই, রাশিয়ান এবং রুশ-ভাষী ইউক্রেনীয়দের অপশক্তির হাত থেকে রক্ষা করতে প্রাণ দিচ্ছে, ঠিক যেভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তাদের পূর্বপুরুষরা অকাতরে প্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন। রাশিয়ার এ ধরনের আখ্যানের বিপরীতে পালটা যুক্তির গল্প আছে ইউক্রেনীয়দেরও। উপরন্তু ইউক্রেনীয় এবং পশ্চিমের বেশির ভাগ মানুষ মনে করে, ক্রেমলিনের এই গল্প-আখ্যান স্পষ্টতই মিথ্যা। ইউক্রেনীয় এবং পশ্চিমাদের পালটা আখ্যান হলো, ইউক্রেনীয়রা ২০১৪ সালে ‘মহান বিপ্লব’ ঘটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এই জন্য যে, পশ্চিমাদের সঙ্গে যোগদানের মাধ্যমে তারা নিজেদের গণতন্ত্রকে এমন শক্তিশালী পর্যায়ে উন্নীত করতে পারবে যার ফলে ‘একটি সম্পূর্ণরূপে সার্বভৌম, স্বাধীন রাষ্ট্র হওয়ার আকাঙ্ক্ষা ছেড়ে দেওয়ার জন্য ভ্লাদিমির পুতিনের শ্বাসরুদ্ধকর চাপ’ থেকে নিজেদের মুক্ত করা সহজতর হবে। শক্তিশালী প্রতিবেশীর অপ্রীতিকর আক্রমণের মুখে এই আখ্যানে অনুপ্রাণিত হয়েই মূলত লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেনীয়রা। এবং এখন পর্যন্ত চরম সাহসিকতার সঙ্গে রুশ আক্রমণকে কার্যকরভাবে প্রতিহত করে চলেছে ইউক্রেনের জনগণ। এমনকি যুদ্ধক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্যভাবে সফলতা পাচ্ছে ইউক্রেনের যোদ্ধারা। যদিও পুতিনের স্বপ্নের কার্চ ব্রিজে হামলা ও বিস্ফোরণের পর রাজধানী কিয়েভসহ সারা দেশে হামলা বাড়িয়েছে মরিয়া পুতিন বাহিনী।
এখন প্রশ্ন হলো, ঠিক যেমনটা নিজেদের আখ্যানে উল্লেখ করে আসছে রাশিয়া, ইউক্রেন কী তাদের জন্য সত্যিকার অর্থেই মারাত্মক হুমকি ছিল? এর সোজাসাপটা উত্তর হবেÍকখনই না। আসল সত্য হলো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটোর সঙ্গে নিজেদের ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব হারানোর আশঙ্কা এবং পশ্চিমের প্রতি ইউক্রেনের সমর্থন ও দুর্বলতার কারণে পুতিন ও তার সমর্থকরা দীর্ঘকাল ধরে এমন এক অন্ধকার ভবিষ্যতের আঁচ পাচ্ছিলেন যে, তাদের বিশ্বাস ছিল, ইউক্রেনকে যে কোনো ভাবেই হোক আটকাতে না পারলে নিজেদের অস্তিত্ব টালমাটাল হয়ে পড়বে। বাস্তবিক অর্থে ঠিক এই ধারণাই পুতিনকে ইউক্রেন যুদ্ধের পথে পা বাড়াতে প্ররোচিত করেছে। আর এ কারণেই তিনি ইউক্রেন সংঘাতকে ‘একটি প্রতিরোধমূলক যুদ্ধ’ হিসেবে দেখে থাকেন। তাই এটা স্পষ্ট, ভবিষ্যৎ বিপদ সম্পর্কে পুতিনের উদ্বেগের কারণের ওপরই ইউক্রেন যুদ্ধের পটভূমি রচিত হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনীয়দের এমন যুক্তিযুক্ত গল্প হাজির করতে হবে যা সত্যের মুখে উড়ে না যায়। যদিও এ কথা মানতেই হবে, যুদ্ধের সময় সবকিছুতেই অতিরঞ্জন প্রায় অনিবার্য। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এবং সেই সঙ্গে পশ্চিমা নেতারা দাবি করেন, চলমান যুদ্ধ ইউক্রেনীয় জাতির অস্তিত্বের সংগ্রামে পরিণত হয়েছে। ইউক্রেনীয়দের ‘ইউক্রেনীয় পরিচয়’ মুছে ফেলতে বদ্ধপরিকর পুতিনের বিরুদ্ধে এটি এমন এক সংগ্রাম যা সর্বজনীনতা লাভ করেছে ইতিমধ্যে।
এ ধরনের বর্ণনা শতভাগ সত্যÍআমি এমন কথা বলছি না। কারণ তাহলে তো রাশিয়ার সঙ্গে কোনো ধরনের আপস হওয়ার সুযোগই আর অবশিষ্ট থাকে না। এমনকি পুতিনের আখ্যানও তো ইউক্রেনের গল্পের মতোই অস্তিত্বশীল। দেশটি পশ্চিমের ‘নব্য-ঔপনিবেশিকতা’ হঠাতে সংগ্রামে লিপ্ত হয়েছে বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। পুতিন বিশ্বাস করেন, রাশিয়াকে টুকরো টুকরো করতে চাইছে পশ্চিমা শক্তি। পুতিনের বর্ণনা অনুযায়ী, ইউক্রেনের সঙ্গে সংঘাত আমেরিকার বৈশ্বিক আধিপত্যের দাবিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। একই সঙ্গে চলমান যুদ্ধ রাশিয়াকে আঞ্চলিক শক্তিতে পরিণত করার মতো অপমানজনক চেষ্টাকে নস্যাৎ করেছে।
যাহোক, চলমান সংঘাত থামনো যায়নি। যুদ্ধ এগিয়ে চলেছে। হুমকি বাড়ছে প্রতিনিয়ত। ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন এবং জাপোরিঝিয়া রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত করার মধ্য দিয়ে পুতিন তার সাম্রাজ্য দখলকে বৈধতা-ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য ইতিহাসের প্রসঙ্গ টানেন। তিনি অধিকৃত ভূখ-গুলোকে ‘নতুন রাশিয়া’ হিসেবে উল্লেখ করেন, যা কি না অষ্টাদশ শতাব্দীতে রাশিয়ান বীরদের বিজয়ের মধ্য দিয়ে পবিত্র হয়।
বারবার ১৯৯১ সালের বেদনাদায়ক বছরের প্রসঙ্গও তুলছেন পুতিন। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে সোভিয়েত ইউনিয়নের পুনরুদ্ধারের বিষয়টি সরাসরি প্রত্যাখ্যানও করছেন তিনি! এমনকি তাকে এ কথাও বলতে শোনা গেছে, ‘রাশিয়ার আজ আর এটির কোনো প্রয়োজন নেই; এটা আমাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা নয়।’ আবার তিনি এও বিশ্বাস করেন যে, ঐতিহাসিক জন্মভূমি থেকে বিছিন্ন হয়ে পড়া বাসিন্দাদের সাহায্য করা উচিত। পুতিনের বর্ণনা অনেকটা এ রকমÍইউক্রেনকে পশ্চিমা ও পশ্চিমা সংস্কৃতির কবল থেকে বাঁচাতে হবে। এবং অবশ্যই রাশিয়ার অনন্য সংস্কৃতিতে ফিরে যেতে হবে। এক বক্তৃতায় পুতিন ঘোষণা করেছিলেন, ‘রাশিয়ায় একক পিতামাতার পরিবর্তে দেশটির একাধিক অভিভাবক তথা পিতামাতা-১, পিতামাতা-২, পিতামাতা-৩ থাকতে পারে না। এসব আমাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য। কেননা, আমাদের লক্ষ্য ও ভবিষ্যৎ অভিন্ন।’
পুতিনের এই ‘মহান শক্তি’ হয়ে ওঠার বিপক্ষে অবস্থান রয়েছে অনেকের। তার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধাচরণ ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। পশ্চিমের কল্পিত হুমকিকে সামনে রেখে যে সংঘাতকে তিনি সামনে টেনে নিয়ে যাচ্ছেনÍতার বিরুদ্ধে সোচ্চার অনেকেই। এর কারণ অনেকেই মনে করেন, যখন প্রমাণিত হবে যে মস্কোর গল্পগুলো পুরোপুরি মিথ্যা তখন ব্যর্থ পুতিন তুলোধুনা হবেন সব জায়গা থেকে। বস্তুত এমন ধারণা থেকেই রাশিয়ার অভ্যন্তরে বাড়ছে অস্থিরতা। দেশটির বৃহৎ শহরগুলোতে, দাগেস্তানের মতো অরাশিয়ান অঞ্চলে এমনকি রাশিয়ান-অধিকৃত ক্রিমিয়াতেও যুদ্ধের বিরুদ্ধে ঘরোয়া প্রতিরোধ ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষিপ্তভাবে। সেনাবাহিনীতে যোগদানের বাধ্যবাধকতা এড়াতে রুশ যুবারা ফিনল্যান্ড, জর্জিয়া, আর্মেনিয়া এবং মধ্য এশিয়ায় পালাচ্ছে। সব মিলিয়ে রাশিয়ার জনগণের মধ্যে এ ধারণা জেঁকে বসছেÍখুব কম লোকই এমন যুদ্ধের জন্য লড়াই করতে ও মরতে চাইবে, যে যুদ্ধের কোনো মানেই হয় না। সুতরাং অতীতের দিকে দৃষ্টিপাত করে ইতিহাসবিদদের এখন একটা পক্ষকে বেছে নিতে হবে। ফিরে যেতে হবে একটি কোণে। অতীত খুঁজে এটা বের করতে হবে যে, আমরা বর্তমানের কোন জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছি। অতীতের এই তদন্ত আমাদের বুঝতে সাহায্য করবে কেনই-বা ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলো এবং এই সংঘাত থেকে বেরিয়ে আসার সঠিক পথটাই-বা কী? ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করলে দেখা যাবে, যুদ্ধের প্রকৃত কারণ বা সম্ভাব্য ফলাফলের একটা রূপ টানতে না পারার কারণেই বাস্তবিক পক্ষে চলমান দ্বন্দ্বে উভয় পক্ষ যে যার মতো করে মনগড়া গল্প বলে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।
সত্যিকার অর্থেই ‘ভবিষ্যতের উজ্জ্বল সোভিয়েত সাম্রাজ্য’ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে পুতিন এমনভাবে এগিয়ে চলেছেন যে, তিনি ভুলেই গেছেন তা এখন সুদূরপরাহত। এই সত্য ইতিহাস তিনি নিজেও জানেন ভালোমতোই। অথচ দেশবাসীকে মিথ্যা বীরত্বপূর্ণ বর্ণনা দিয়ে বিভ্রান্ত রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। কিন্তু সত্য হলো, তার ধাপ্পাবাজির প্রতিটি গল্প বাস্তবতার সামনে মিথ্যা প্রমাণিত হচ্ছে। তার গল্প নিছক গল্পই, যা মিথ্যায় পরিপূর্ণ। লেখক : মিশিগান ইউনিভার্সিটির ইতিহাস ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক,এশিয়া টাইমস থেকে ভাষান্তর : সুমৃৎ খান সুজন ( দৈনিক ইত্তেফাকের সৌজন্যে)




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com