বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হঠানোর জন্য অতি বাম, অতি ডান মিলে মিশে একাকার হয়েছে। তাদের লক্ষ্য একটাই হটাও শেখ হাসিনা। তিনি শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে ফেনী গার্লস ক্যাডেট কলেজ ক্যাম্পাসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আন্দোলনের নামে মাঠে সংঘাত করে লাভ নেই। নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে।সরকার শুধু রুটিন ওয়ার্ক করবে। নির্বাচনে সরকারের কোন প্রকার হস্তক্ষেপ থাকবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো সুযোগ নেই। সরকার পতনের দিবা স্বপ্ন সফল হবেনা। আমরা বিশ্বাস করি বিএনপি নির্বাচনে আসবে সব নিবন্ধিত দলকে আমরা স্বাগত জানাই। তিনি আরও বলেন, আমরা বৈশ্বিক পরিস্থিতির প্রতিক্রিয়ার সম্পর্কে বলেছি। সম্পদকে সম্ভাবনায় রুপ দিতে কাজ করছি। আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ। বিশ্ব সংকটকালে জ্বালানী, ডলার, রিজার্ভ নিয়ে আমরা ভাবছি। পাকিস্তানে রিজার্ভ ৯ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে সে তুলনায় আল্লাহর রহমতে ভালো আছি সংকটেও দিশেহারা হইনি আমরা ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছি। লোডশেডিংয়ের সংকট সরকার সুন্দরভাবে কাটিয়ে উঠেছে। তার প্রমাণ মানুষ নির্বিঘেœ বিশ্বকাপ দেখেছে কোনো ধরনের প্রতিবাদ দেখিনি। জিনিসপত্রের দাাম কমছে। আরও কমবে। জ্বালানি সংকট মিটছে। অনেক উন্নত দেশ থেকেও আমরা ভালো আছি?সে হিসেবে বাংলাদেশ খুব ভালো আছে। বিরোধী দলের আন্দোলন মোকাবিলা করছি ঠান্ডা মাথায়। আমরা অশান্তি চাই না। খারাপ পরিস্থিতি উসকানি দিতে চাই না। যারা আন্দোলনের নামে সংঘাত করতে চেয়েছে তাদের প্রতিরোধের জন্য আমরা সতর্ক পাহারায় ছিলাম। আমরা আক্রমণ করবো না, আক্রান্ত হলে পরিস্থিতি বলে দিবে কি করতে হবে। গত কালকের বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের গণমিছিলের বিষয়ে তিনি বলেন ৩৩ দল গণমিছিল করেছে। বেশির ভাগের ঢাল নাই তলোয়ার নাই। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন নিরপেক্ষ হওয়ার বিষয়ে মাথা ব্যথার কারণ নেই। ঠিক সময়ে নির্বাচন কমিশনের অধীনেই হবে। আমরা পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল করেছি। এগুলোর উপকারভোগী দেশের জনগণ। দেশ বিরোধী অপশক্তি এতেও অখুশি। তারা উন্নয়নের এসব যজ্ঞেও দুর্নীতির কথা বলছে। কাদের বলেন, কালো মেঘ কেটে যাবে, সবার শুভবুদ্ধির উদয় হবে। কূটনৈতিকদের বিষয়ে তিনি বলেন, জেনেভা কনভেনশনের আলোকে কূটনৈতিকরা দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মাথা ঘামাতে পারেন না। আমরাতো কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মাথা ঘামাই না। আমাদের দেশের বিষযে বলার আগে তারা নিজেদের দিকে তাকানো উচিত। ওবায়দুল কাদের বলেন, গণতন্ত্র পৃথিবীর কোথাও ত্রুটিমুক্ত নয়, তবে আওয়ামী লীগ চেষ্টা করছে।বিএনপিতো এক কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার তৈরি করেছিলো। তারা কিভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে। রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, রংপুরের কথাটা আলাদা, সেখানে এরশাদ সাহেবের প্রভাব আছে। তাদের প্রার্থীও প্রভাবশালী। আমরা একজন নারীকে মনোনয়ন দিয়েছি। সবকিছু মিলিয়ে আমাদের প্রার্থী কম ভোট পেয়েছে। শোচনীয় পরাজয় হয়েছে। এটা নিয়ে আমরা তদন্ত কমিটি করেছি। আমরা বলব গণতন্ত্রের বিপ্লব হয়েছে। রংপুরের বিষয় এনে জাতীয় নির্বাচনের ভবিষ্যতবাণী করা যাবে না। হারজিত থাকবে। এটা ভোটের প্রক্রিয়া। হঠাৎ মাঠে জামায়াতের সক্রিয়তার বিষয়ে তিনি বলেন, সহিংসতা হলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা জবাব দিবে। সর্বশেষ ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন সরকারের এজেন্ডা একটাই মানুষকে বাঁচানো। বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলা করে দেশকে এগিয়ে নেওয়া। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট হাফেজ আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, ফেনী জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল-হাসান হাসান, পুলিশ সুপার জাকির হাসান, ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী এবং ফেনী সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীল, ছাগলনাইয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মেসবাহুল হায়দার চৌধুরী সোহেল, ছাগলনাইয়া পৌর মেয়র মোহাম্মদ মোস্তফা সহ দলীয়বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ। তিনি শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওবায়দুল কাদের হেলিকপ্টারযোগে ফেনী গার্লস ক্যাডেট কলেজে অবতরণ করেন। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করে ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংবর্ধনা নিয়ে নোয়াখালীর উদ্দেশে রওনা করেন।