সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:১০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
আজ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) নিপুন-নওশাবা-কনকচাঁপাসহ শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য হলেন যারা হযরত মুহাম্মদ (সা.) বিশ্ব মানবতার জন্য অনুসরণীয় আদর্শ রেখে গেছেন : প্রধান উপদেষ্টা শিগগিরই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন হবে : চিফ প্রসিকিউটর দেশ পুনর্গঠনে মার্কিন সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা এমপি আনার হত্যা মামলা: প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পেছালো এই চিঠি চাটুকারিতার মধ্যে পড়ে, এর জন্য অপমান আমার প্রাপ্য: শাহরিয়ার নাজিম জয় পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চেয়ে আলোচনা হয়েছে : উপদেষ্টা বিএনপি-জামায়াত-হেফাজতের ঐক্য চাইলেন মামুনুল হক মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা কেজরিওয়ালের

ভালোবাসা আসে আসমান থেকে

মুফতি মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

ভালোবাসা হলো কারো প্রতি অন্তরের আকর্ষণ। ইমাম গাজ্জালী বলেন, ভালোবাসা হলো কোনো প্রিয় ও স্বাদের জিনিসের প্রতি স্বভাবের আকর্ষণ। ভালোবাসা চার প্রকার, যেমন- ১. ওয়াজিব ভালোবাসা; ২. হারাম ভালোবাসা; ৩. প্রশংসনীয় ভালোবাসা ও ৪. নিন্দনীয় ভালোবাসা। আল্লাহ তায়ালা, রাসূলুল্লাহ সা:, আহলে বাইয়াত ও নেককার মুত্তাকি-পরহেজগার ব্যক্তিদের ভালোবাসা ওয়াজিব। মুমিনের জন্য দেবদেবী ইত্যাদিকে ভালোবাসা হারাম। স্বভাবগতভাবে ভালোবাসা, যেমন- পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি, স্ত্রী, আত্মীয়স্বজন প্রমুখকে ভালোবাসা এবং নেক কাজের প্রতি আকর্ষণ ইত্যাদি প্রশংসনীয় ভালোবাসা। গুনাহের কাজের প্রতি আকর্ষণ ও প্রীতি নিন্দনীয় ভালোবাসা।
ভালোবাসা আসে আসমান থেকে : আল্লাহর ওলি, নেককার, পরহেজগার ও মুত্তাকি লোকদের ভালোবাসা আবশ্যক। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন- ‘মুমিনগণ অপর মুমিন ব্যতীত কাফিরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করবে না। যে এরূপ করবে, আল্লাহর সাথে তার কোনো সম্পর্ক থাকবে না’ (সূরা আলে ইমরান-২৮)। এ আয়াতে বন্ধুরূপে গ্রহণ করার অর্থ ভালোবাসা, কারণ ভালোবাসা ছাড়া বন্ধুত্ব হয় না। হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘আল্লাহ তায়ালা যখন কোনো বান্দাহকে ভালোবাসেন, তখন জিবরাইল আ:-কে ডেকে বলেন, আমি দুনিয়ার অমুক বান্দাহকে ভালোবাসি, তুমিও ভালোবাস। ফলে হজরত জিবরাইল আ: আকাশে ফেরেশতাদের সামনে এ ঘোষণা দেন যে, দুনিয়ার অমুক ব্যক্তিকে আল্লাহ তায়ালা ভালোবাসেন তোমরাও তাকে ভালোবাস। অতঃপর আকাশের ফেরেশতারা তাকে ভালোবাসতে শুরু করে। এর ফলে জমিনে তার একটি গ্রহণযোগ্যতা সৃষ্টি হয় এবং দুনিয়ার মানুষ তাকে ভালোবাসতে শুরু করে। আর যখন আল্লাহ কোনো মানুষকে ঘৃণা করেন, তখন হজরত জিবরাইল আ:-কে ডেকে বলেন, আমি অমুককে ঘৃণা করি, তুমিও তাকে ঘৃণা করো। অতঃপর জিবরাইল আ: তাকে ঘৃণা করেন এবং আকাশের ফেরেশতাদের ডেকে বলেন, আল্লাহ তায়ালা অমুক ব্যক্তিকে ঘৃণা করেন, আমিও ঘৃণা করি, তোমরাও তাকে ঘৃণা করো। অতঃপর ফেরেশতারা তাকে ঘৃণা করেন। এ ঘৃণার একটি প্রভাব পৃথিবীতে পড়ে। ফলে দুনিয়ার মানুষ তাকে ঘৃণা করে’ (মুসলিম, মিশকাত পৃষ্ঠা-৪২৫)। সুতরাং দুনিয়ার মানুষগুলোর কারো প্রতি ভালোবাসা আসমান থেকে আগত।
ভালোবাসার গুরুত্ব : হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত- রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘বিচার দিবসে আল্লাহ তায়ালা বলবেন, আমার সম্মানে যারা একে অন্যকে ভালোবেসেছ তারা কোথায়? আজ আমি আমার আরশের ছায়ায় তাদেরকে ছায়া দান করব, সে দিন আমার আরশের ছায়া ছাড়া কোনো ছায়া থাকবে না’ (মুসলিম, মিশকাত পৃষ্ঠা-৪২৫)। হজরত আনাস রা: থেকে বর্ণিত- জনৈক সাহাবি আরজ করেন, হে আল্লাহর রাসূল! কিয়ামত কখন সংঘটিত হবে? রাসূল সা: বলেন, ‘তুমি কিয়ামতের জন্য কী প্রস্তুতি নিয়েছ?’ প্রশ্নকারী বলেন, আমি এ জন্য কোনো প্রস্তুতি নেইনি, তবে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সা:-কে ভালোবাসি। রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘তুমি যাকে ভালোবাস তার সাথেই তোমার হাশর হবে।’ হজরত আনাস রা: বলেন, এ কথা শুনার পর সাহাবিদের যেরূপ খুশি দেখেছি, অন্য সময় এত খুশি হতে দেখিনি (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত পৃষ্ঠা-৪২৬)।
হাদিসে কুদসিতে রয়েছে- আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আমার সম্মানে যারা একে অন্যকে ভালোবাসে তাদেরকে ভালোবাসা আমার দায়িত্ব হয়ে যায়’ (মুয়াত্তা মিশকাত পৃষ্ঠা-৪২৬)। তিরমিজির আরেক বর্ণনায় রয়েছে, আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘যারা আমার সম্মানে একে অন্যকে ভালোবেসেছে তাদের মধ্যে এমন নূর চমকাবে যা দেখে নবী ও শহীদরাও অবাক হবেন’ (মিশকাত পৃষ্ঠা-৪২৬)। রাসূল সা: বলেছেন, ‘তুমি তার সাথেই (পরকালে) থাকবে যাকে তুমি দুনিয়ায় ভালোবাস।’ (বায়হাকি) এক সাহাবি আরজ করেন, হে আল্লাহর রাসূল সা:! আপনি ওই ব্যক্তি সম্পর্কে কী বলেন, যে এক সম্প্রদায়কে ভালোবাসে, কিন্তু তাদের সাথে তার দেখা-সাক্ষাৎ হয়নি। রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘ব্যক্তি ওই ব্যক্তির সাথেই (পরকালে) থাকবে যাকে সে ভালোবাসে’ (বুখারি ও মুসলিম, মিশকাত পৃষ্ঠা-৪২৬)। রাসূলুল্লাহ সা: আরো বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালার কাছে সর্বাধিক প্রিয় আমল হলো- আল্লাহর জন্য কাউকে ভালোবাসা এবং আল্লাহর জন্য কাউকে ঘৃণা করা’ (মুসনাদে আহমদ, আবু দাউদ)। রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘আল্লাহর সাথে সম্পর্কের নিদর্শন হলো, আল্লাহর জন্য কাউকে ভালোবাসা এবং কাউকে ঘৃণা করা’ (বায়হাকি)। লেখক : প্রধান ফকিহ, আল-জামেয়াতুল ফালাহিয়া কামিল মাদরাসা, ফেনি




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com