নড়াইলের কালিয়া উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের আক্তার মুন্সীর মেয়ে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী শিশু সুফিয়া খানমকে(৯) পৈশাচিকভাবে হত্যার পর নদীতে ফেলে দেয়ার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টায় এলাকাবাসীর আয়োজনে বারইপাড়া-কাঞ্চনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্ত্বরে অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে শতশত নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই শিশু সুফিয়া হত্যাকান্ডে জড়িতদের ফাঁসি চাই এমন শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে হত্যার শিকার শিশুটি যে স্কুলে পড়তো সেই স্কুল চত্ত্বর। সুফিয়ার সহপাঠীরা বিচারের দাবিতে প্লেকার্ড হাতে নিয়ে এ মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করে। মানববন্ধন চলাকালে বক্তৃতা করেন বারইপাড়া-কাঞ্চনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরিৎ বরণ সাহা,স্কুলের সভাপতি মো: শওকত হোসেন, শিশু সুফিয়ার পিতা আক্তার মুন্সী, জামিলা খানম প্রমূখ। স্কুলের সভাপতি বক্তব্যে বলেন, জঘন্যতম এ হত্যাকান্ডের পর এখানকার কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার হয়েছে। ভয়ে অনেকে স্কুলে আসতে চাচ্ছে না। না জানি আমার সন্তানের কি হয়, এমন অজানা আতংকে রয়েছেন অনেক অভিভাবক। সুফিয়া হত্যাকান্ডে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করা না হলে খুনীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠতে পারে।জামিলা খানম বক্তব্যে বলেন, শিশু সুফিয়ার খুনীরা নরপশু। এরা যেন আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে পার না পায়। এদের দ্রুত খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে আইন-শৃংখলা বাহিনীর প্রতি আহবান জানান। ঘটনার ৫দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও খুনের সঙ্গে জড়িতরা গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। মানববন্ধন শেষে হত্যাকান্ডের নিন্দা ও জড়িতেদের ফাঁসির দাবি করে বারইপাড়া-কাঞ্চনপুর সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেন শতশত নারী-পুরুষ। নিহত শিশুর চাচা বদরুল আলম মুন্সী জানান, গত বুধবার (১ মে) সকাল ৯টার দিকে স্থানীয় সুপার ব্রিক্স ইটভাটায় কর্মরত পিতা আক্তার মুন্সীকে খাবার দিয়ে বাড়িতে আসার পথিমধ্যে নিখোঁজ হয় সুফিয়া। অনেক খোঁজাখুঁজি করে তাকে না পাওয়ায় বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার ইসলামপুর এলাকায় নদীতে শিশুর লাশ ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয় লোকজন। শিশুটির গোপন অঙ্গ ক্ষতসহ শরীর এসিড দিয়ে পুড়িয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। সন্ত্রাসীরা শিশুটিকে পৈশাচিকভাবে হত্যার পর নদীতে ফেলে পালিয়ে যায় বলে তিনি জানান। নড়াইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী জানান,শিশু সুফিয়া হত্যাকান্ডটি মর্মস্পর্শী ঘটনা। পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে ঘটনাটি তদন্ত করছে। হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেফতারে জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে।ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর ঘটনার রহস্য পুরোপুরি জানা যাবে বলে তিনি জানান।