রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
আমার কথা বলে চাঁদা-সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করলে পুলিশে দিন : আসিফ নজরুল তিস্তার পানি দ্রুত বাড়ছে আজ আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন মাহমুদুর রহমান ঢাকার খাল দিয়ে ব্লু নেটওয়ার্ক তৈরির পরিকল্পনা করছে সরকার : পানিসম্পদ উপদেষ্টা শিক্ষাব্যবস্থায় হিন্দুত্ববাদ ও নাস্তিক্যবাদ বরদাস্ত করা হবে না : মামুনুল হক নৌকা থাকায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন হতে পারে : উপদেষ্টা আদর্শিক ভিন্নতা থাকলেও সবাই একসঙ্গে জাতি গঠনে কাজ করবে: মঞ্জুরুল ইসলাম জাতিসংঘে ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সমালোচনা মাহমুদ আব্বাসের মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে ভাষাসৈনিক অধ্যাপক আব্দুল গফুরের দাফন ছাত্র-জনতার অদম্য সংকল্প ও প্রত্যয় স্বৈরাচার থেকে আমাদের মুক্তি দিয়েছে

হজের ইতিহাস ও শিক্ষা

মুফতি আরিফ খান সাদ
  • আপডেট সময় শনিবার, ১ জুন, ২০২৪

পৃথিবীর বুকে মুসলমানদের প্রথম পবিত্রভূমি ও প্রাণকেন্দ্র মক্কা নগরীর কাবাঘর। প্রতিটি মুসলমানের অন্তরে এ ঘরের প্রতি রয়েছে অকৃত্রিম ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও সম্মান। কারণ কাবাঘরের দিকে মুখ করে গোটা মুসলিম উম্মাহ প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে। আবার প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন অ ল থেকে হজব্রত পালনের উদ্দেশ্যে কাবাঘর জিয়ারতে আসে মুসলিমরা। আল্লাহতায়ালা কাবাকে নিজের ঘর বলে ঘোষণা করেছেন এবং সে সঙ্গে তার আশপাশে কিছু স্থান ও বিষয়কে ‘শাআইরুল্লাহ’ তথা ‘আল্লাহর নিজস্ব পরিচয়-চিহ্ন’ বলে নির্ধারণ করেছেন। ভৌগোলিকভাবে গোলাকার পৃথিবীর মধ্যস্থলে কাবার অবস্থান, যা পৃথিবীর নাভি হিসেবে বিবেচিত। হাদিসের ভাষ্যমতে, কাবার নিচের অংশ পৃথিবীর প্রথম জমিন। হজরত আদম (আ.)-এর সৃষ্টির দুই হাজার বছর আগে সেখানে পৃথিবীর প্রথম ঘর কাবা নির্মাণ করা হয়। আল্লাহর নির্দেশে কাবাঘরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন ফেরেশতারা। এ মর্মে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘নিঃসন্দেহে সর্বপ্রথম ঘর, যা মানুষের জন্য নির্ধারিত হয়েছে, সেটাই হচ্ছে এই ঘর, যা বাক্কায় (মক্কা নগরীতে) অবস্থিত এবং বিশ্ববাসীর জন্য হেদায়েত ও বরকতময়।’ (সুরা আলে-ইমরান : ৯৬)
পৃথিবীর প্রথম মানুষ হজরত আদম (আ.)-এর সৃষ্টির দুই হাজার বছর আগে আল্লাহর হুকুমে ফেরেশতারা এ ঘর নির্মাণ করেন। আদম (আ.) পৃথিবীতে আসার পর আল্লাহতায়ালার হুকুমে পুনরায় কাবাগৃহ নির্মাণ করেন এবং কাবাকেন্দ্রিক বিভিন্ন ইবাদত-বন্দেগির নির্দেশ পান। হজরত নুহ (আ.)-এর যুগে মহাপ্লাবনে এ ঘর নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলে আল্লাহতায়ালার নির্দেশে কাবাঘর পুনর্র্নিমাণ করেন হজরত ইবরাহিম (আ.) ও তার পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.)। নির্মাণের পর আল্লাহতায়ালা হজরত ইবরাহিম (আ.)-কে বিশ্ববাসীকে এ ঘর জিয়ারতের আহ্বান জানানোর নির্দেশ দেন। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘মানুষের মধ্যে হজের ঘোষণা দাও। তারা দূর-দূরান্ত থেকে হেঁটে এবং সব ধরনের কৃশকায় উটে সওয়ার হয়ে তোমার কাছে আসবে।’ (সুরা হজ : ২৭)। হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর আহ্বানের পর থেকে আজ পর্যন্ত কাবাকেন্দ্রিক ইবাদত ও জিয়ারত বন্ধ হয়নি।
ঐতিহাসিক তথ্যমতে, পবিত্র কাবাগৃহ এ পর্যন্ত ১২ বার পুনর্র্নিমাণ করা হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও শত্রুদের আক্রমণের কারণে বিভিন্ন সময় সংস্কার করার প্রয়োজন দেখা দেয়। যারা এ মহান কাজে অংশগ্রহণ করেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন—হজরত আদম (আ.), হজরত ইবরাহিম (আ.) ও সহযোগী হিসেবে হজরত ইসমাইল (আ.), আমালিকা সম্প্রদায়, জুরহুম সম্প্রদায়, বিখ্যাত কুরাইশ বংশ, যারা নবীজি (সা.)-এর বংশধর ছিলেন। নবুয়ত প্রাপ্তির পাঁচ বছর আগে এর পুনর্র্নিমাণ করা হয়। এ কাজে হাজরে আসওয়াদ স্থাপন নিয়ে মতভেদ দেখা দিলে সবার সম্মতিক্রমে নবীজি (সা.) কাবাগৃহে তা স্থাপন করেন। এরপর যথাক্রমে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়ের ও হাজ্জাজ বিন ইউসুফ এবং ওসমানিয়া খেলাফতের বাদশা মুরাদের নাম উল্লেখযোগ্য। সর্বশেষ ১৯৯৬ সালে কাবাগৃহে বিভিন্ন ইবাদত ও তাওয়াফ আরামদায়ক করার লক্ষ্যে আধুনিক ও উন্নত পাথরের ব্যবহারে কাবা চত্বরসহ বেশ কিছু উন্নয়নের কাজ করা হয়। পবিত্র কাবা বর্গাকৃতির একটি ঘর। উচ্চতা ৪৫ ফুট। পূর্ব দেয়াল ৪৮ ফুট ৬ ইি , পশ্চিম দেয়াল ৪৬ ফুট ৫ ইি , উত্তর দেয়াল (হাতিমের পাশ) ৩৩ ফুট এবং দক্ষিণ দেয়ালে (কালো পাথর কর্নার থেকে ইয়েমেনি কর্নার) ৩০ ফুট। কাবাঘরের দুটি দরজা ও একটি জানালা ছিল। বর্তমানে শুধু একটি দরজা রাখা হয়েছে। ভূমি থেকে ২.৫ মিটার (৪.২ ফুট) উচ্চতায় যার দৈর্ঘ্য ৩.৬ মিটার (১১.৮ ফুট) ও প্রস্থ ১.৬৮ মিটার (৫.৫ ফুট)। দরজাটি বাদশা খালিদ ২৮০ কেজি স্বর্ণ দ্বারা তৈরি করেন। কাবাগৃহের চাবি বহন করছেন মক্কার বনি শায়বাহ গোত্রের উসমান ইবনে তালহা (রা.)-এর বংশধর। মক্কা বিজয়ের পর নবীজি (সা.) কাবাঘরের চাবি তার দায়িত্বে হস্তান্তর করেন। বংশপরম্পরায় এখনো তারাই কাবাঘরের চাবির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বছরে দুবার এ ঘর খোলা হয় পরিষ্কার করার জন্য। একবার রমজান মাসে, অন্যবার ঈদুল আজহার ১৫ দিন আগে।
কাবাকেন্দ্রিক ইসলামের অনেক ইবাদতের বিধান দেওয়া হয়েছে। নামাজ, হজ, কোরবানি, পশু জবাই ও মৃত ব্যক্তির দাফনসহ অনেক ইবাদত আদায় করতে হয় কাবার দিকে ফিরে। কাবা চত্বরে রয়েছে বরকতময় বহু নিদর্শন। মাকামে ইবরাহিম, মুলতাজিম, হাজরে আসওয়াদ, মিজাবে রহমত, হাতিম, মাতাফ, রুকনে ইয়েমেনি; প্রত্যেকটি বরকতের আধার। এগুলোর কাছে গিয়ে দোয়া করলে তা কবুল হয়। কাবা শরিফের উত্তর পাশের অর্ধবৃত্তাকার দেয়ালঘেরা স্থানকে ‘হাতিম’ বলা হয়। এ স্থানটুকু আগে কাবাঘরের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এখানে নামাজ পড়া মানে কাবাঘরের ভেতরে নামাজ পড়া। দোয়া কবুলের জন্য হাতিম উত্তম স্থান। হাতিমের ঠিক ওপরে কাবা শরিফে ঘরের ছাদের সঙ্গে একটি স্বর্ণের পরনালা আছে। বৃষ্টির সময় এ পরনালা দিয়ে ছাদের পানি পড়ে। সেজন্য এর নাম মিজাবে রহমত। মিজাবে রহমতের নিচে বসে দোয়া করলে কবুল হয়।
প্রতি বছরই পৃথিবীর সব দেশ থেকে ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের আগমনে মুখরিত হয় পবিত্র মক্কা নগরী। মুসলিম জাতির প্রাণের মিলনমেলা ঘটে হজ কেন্দ্র করে। মানবসভ্যতার ইতিহাসের সূচনাকাল থেকেই যুগ যুগ ধরে এ পবিত্র জনস্রোত চলে আসছে। কাবাঘরে সর্বপ্রথম হজ আদায় করেন মানবজাতির পিতা হজরত আদম (আ.)। তারপর হজরত নুহ (আ.)-সহ অন্যান্য নবীও হজ আদায় করেন। তবে হজের আমল পরিপূর্ণতা ও ব্যাপকতা লাভ করে হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর মাধ্যমে। হজ মূলত হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর জীবনের ত্যাগ-তিতিক্ষার স্মৃতির স্মরণিকা। একই সঙ্গে তার স্ত্রী হাজেরা (আ.) এবং পুত্র ইসমাইল (আ.)-এর আত্মত্যাগের স্মৃতিবিজড়িত আমল। হজরত ইবরাহিম (আ.) আল্লাহর নির্দেশে তার স্ত্রী হাজেরা (আ.)-কে সিরিয়া থেকে মক্কার ধু-ধু মরুভূমিতে রেখে আসেন। সঙ্গে সদ্যভূমিষ্ঠ শিশুসন্তান হজরত ইসমাইল (আ.)। জনমানবহীন মরুপ্রান্তরে খাদ্য-পানীয় ছিল অপ্রতুল। ইবরাহিম (আ.) যখন স্ত্রী হাজেরা ও শিশু ইসমাইলকে মক্কায় রেখে যান তখন কাবার দৃশ্যমান কোনো চিহ্নও ছিল না। এরপর ইসমাইল (আ.) পিতার কাজে সহযোগিতা করার মতো বয়সে পদার্পণ করার পর আল্লাহর পক্ষ থেকে ইবরাহিম (আ.)-এর প্রতি কাবাগৃহ নির্মাণের নির্দেশ আসে। আল্লাহর নির্দেশনায় তিনি পুত্র ইসমাইল (আ.)-কে নিয়ে কাবা পুনর্র্নিমাণ করেন। সে কাবাই মুসলিম উম্মাহর কিবলা ও হজের মূলকেন্দ্র। আল্লাহ বলেন, ‘স্মরণ করো, যখন ইবরাহিম ও ইসমাইল কাবাগৃহের প্রাচীর তুলছিল, তখন তারা বলেছিল, হে আমাদের প্রতিপালক, আমাদের এই কাজ গ্রহণ করো, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১২৭)। যে পাথরের ওপর দাঁড়িয়ে ইবরাহিম (আ.) কাবাগৃহ নির্মাণ করেছিলেন সেটাকে বলা হয় মাকামে ইবরাহিম। কাবাগৃহ নির্মাণকালীন পদচিহ্নবিশিষ্ট সেই পাথর আজও সেখানে বিদ্যমান রয়েছে। তাওয়াফের পর সেখানেই দুই রাকাত নামাজ আদায় করতে হয়। আল্লাহ বলেন, ‘এবং সে সময়কে স্মরণ করো, যখন কাবাগৃহকে মানবজাতির মিলনকেন্দ্র ও নিরাপত্তাস্থল করেছিলাম এবং বলেছিলাম, তোমরা মাকামে ইবরাহিমকে নামাজের স্থানরূপে গ্রহণ করো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১২৫)
হজের অন্যতম আমল সাফা-মারওয়া পাহাড়ে দৌড়ানো। ইবরাহিম (আ.) আল্লাহর নির্দেশে স্ত্রী হাজেরাকে পুত্র ইসমাইলসহ মক্কায় রেখে যাওয়ার পর মা হাজেরা দুগ্ধপোষ্য শিশুকে নিয়ে জনশূন্য এই প্রান্তরে অবস্থান করতে থাকেন। একসময় কঠিন পিপাসা তাকে পানির খোঁজে বের হতে বাধ্য করে। তিনি শিশুকে রেখে সাফা-মারওয়া পাহাড়ে বারবার দৌড়ান। সাতবার ছোটাছুটি করেও পানির সন্ধান না পেয়ে শিশুর কাছে ফিরে আসেন। হাজেরা (আ.)-এর সেই সাফা-মারওয়া পাহাড়ে সাতবার দৌড়ানোই হাজিদের ‘সাঈ’। যে পাহাড়দ্বয়কে মহান আল্লাহ নিদর্শন হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই সাফা-মারওয়া আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্যতম। সুতরাং যে কেউ কাবাগৃহের হজ বা ‘ওমরাহ সম্পন্ন করে এ দুটির মধ্যে সাঈ করলে তার কোনো পাপ নেই’। (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৫৮)।
হাজেরা (আ.) সাফা-মারওয়া পাহাড়ে সাতবার ছোটাছুটি করে পানির সন্ধান না পেয়ে ফিরে আসার পর আল্লাহর রহমত অবতীর্ণ হয়। জিবরাইল (আ.) এসে শুষ্ক মরুভূমিতে পানির একটি ঝরনাধারা বইয়ে দেন। এ ধারাই জমজম কূপ। পানির সন্ধান পেয়ে জীবজন্তু আসতে থাকে। জীবজন্তু দেখে মানুষ এসে বসতি গড়তে থাকে। এভাবে একদিন গড়ে ওঠে মক্কা নগরী। হাজিদের পানীয় হিসেবে স্বীকৃতি পায় সেই জমজমের পানি। একজন নারী ও শিশুর অবিস্মরণীয় ত্যাগের স্মৃতি আজও বয়ে চলেছে মুসলিম উম্মাহ।
একদিন ইবরাহিম (আ.) স্বপ্নে দেখেন, তিনি নিজ পুত্র ইসমাইলকে জবাই করছেন। তিনি বুঝতে পারলেন—ইসমাইলকে কোরবানি করতে হবে। তিনি পুত্র ইসমাইল (আ.)-কে স্বপ্নের কথা অবহিত করলেন এবং তার অভিমত জানতে চাইলেন। ইসমাইল (আ.) জবাব দিলেন, ‘হে আমার পিতা, আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে তাই করুন। আল্লাহর ইচ্ছায় আপনি আমাকে ধৈর্যশীলদের অন্তর্ভুক্ত পাবেন। (সুরা সাফফাত, আয়াত : ১০২)। এবার পিতা পুত্রকে জবাই করতে এবং পুত্র জবাই হতে প্রস্তুত হলেন। যখন তারা দুজন আল্লাহর নির্দেশ পালনে এগিয়ে চললেন, পথিমধ্যে শয়তান তিনবার ইবরাহিম (আ.)-কে প্রতারিত করার চেষ্টা করে। ইবরাহিম (আ.) প্রতিবারই শয়তানকে সাতটি করে কংকর নিক্ষেপের মাধ্যমে তাড়িয়ে দেন। প্রশংসনীয় এ কাজের স্মৃতিস্মরণ করে হাজিরা মিনায় তিনবার তিন স্থানে সাতটি করে কংকর নিক্ষেপ করেন। আয়েশা (রা.) হতে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, ‘কংকর নিক্ষেপ ও সাফা-মারওয়ার মধ্যে দৌড়ানোকে আল্লাহর স্মরণের মাধ্যম সাব্যস্ত করা হয়েছে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৯০২)
ইবরাহিম (আ.) পুত্র ইসমাইল (আ.)-কে নিয়ে কোরবানির স্থান মিনায় গিয়ে কোরবানির উদ্দেশ্যে ছুরি চালাতে লাগলেন। কিন্তু ছুরিতে কাটছিল না। আর তখনই অদৃশ্য থেকে আওয়াজ আসে—‘হে ইবরাহিম, তুমি তো স্বপ্নদেশ সত্যই পালন করলে। এভাবেই আমি সৎকর্মপরায়ণদের পুরস্কৃত করে থাকি। নিশ্চয়ই এটা এক সুস্পষ্ট পরীক্ষা।’ (সুরা সাফফাত, আয়াত : ১০৪-১০৬)। সেই আওয়াজ শুনে ইবরাহিম (আ.) তাকালে জিবরাইল (আ.)-কে একটি দুম্বা নিয়ে দাঁড়ানো দেখতে পান। তিনি আল্লাহর নির্দেশে পুত্রের পরিবর্তে সেটি কোরবানি করেন। আল্লাহ বলেন, ‘আমি তাকে মুক্ত করলাম এক কোরবানির বিনিময়ে।’ (সুরা সাফফাত, আয়াত : ১০৭)। সেই ধারাবাহিকতায় মিনার প্রান্তরে হাজিরা কোরবানি করেন। আর পৃথিবীজুড়ে সমগ্র মুসলিম উম্মাহ নিজ নিজ জায়গায় (ঈদুল আজহায়) দাঁড়িয়ে কোরবানি করে। আল্লাহতায়ালা ইবরাহিম (আ.)-এর ঐতিহাসিক কোরবানি প্রসঙ্গ বর্ণনা করার পর বলেন, ‘আমি এটা পরবর্তীদের স্মরণে রেখেছি। ইবরাহিমের প্রতি সালাম বর্ষিত হোক।’ (সুরা আস-সাফফাত, আয়াত : ১০৮-১০৯)। হজরত ইবরাহিম (আ.) ও তার পরিবারের আত্মত্যাগ, আল্লাহর প্রতি আনুগত্য ও ভালোবাসার যে অমর কাব্য মক্কা নগরীর ভাঁজে ভাঁজে রচিত হয়েছে, সেই ইতিহাসের স্মৃতিই পুনরাবৃত্তি হয় প্রতি বছর হজে ও কোরবানিতে। লেখক: মুফতি আরিফ খান সাদ. মুহাদ্দিস ও ইসলামী চিন্তাবিদ




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com