পুঁজিবাজারে কোম্পানির শেয়ার বিক্রি থেকে অর্জিত মূলধনী মুনাফার ওপর করের হার কমিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত শেয়ার লেনদেন থেকে ৫০ লাখ টাকার বেশি অর্জিত মূলধনী মুনাফার ওপর করের হার কমিয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। গত সোমবার (৪ নভেম্বর) এনবিআর থেকে ইস্যু করা এক প্রজ্ঞাপন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম গণমাধ্যমকে বলেন, নতুন কর হার নির্ধারণ করে এনবিআর প্রজ্ঞাপন দিয়েছে। কমিশন (বিএসইসি) ক্যাপিটাল গেইনের ওপর কার হার যৌক্তিকীকরণের জন্য সরকার ও এনবিআরের কাছে অনুরোধ করেছিল।
তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীবান্ধব সরকার দ্রুত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করায় বিনিয়োগকারীরা আগের চেয়ে বেশি লাভবান হবেন। সরকার ও কমিশন পুঁজিবাজারের উন্নয়ন, বাজারের প্রতি আস্থা বৃদ্ধিতে আরো অনেক নীতি সহায়তা নিয়ে কাজ করছে।
এনবিআর সূত্র জানায়, বিদ্যমান আইনে শেয়ার ক্রয়ের ৫ বছরের মধ্যে ওই শেয়ার ১ জুলাই ২০২৪ থেকে ৩০ জন ২০২৫ সময়কালে বিক্রয় করে মূলধনী আয় অর্জন করলে তার ওপর সাধারণ হারে কর আরোপ করা হয়। বিদ্যমান আইন অনুসারে ৫০ লাখ টাকার অধিক মূলধনি আয়ের ওপর সর্বোচ্চ করের হার হলো ৩০ শতাংশ। অধিকন্তু, সম্পদশালী করদাতাদের প্রদেয় করের ওপর বিদ্যমান আইনে সর্বোচ্চ ৩৫ শতাংশ হারে সারচার্জ দিতে হয়। এতে শেয়ার বাজার থেকে অর্জিত মূলধনী মুনাফার ওপর বিদ্যমান আইন অনুসারে আয়কর ও সারসার্জ বাবদ মোট ৪০.৫০ শতাংশ হারে কর দিতে হয়।
নতুন প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী একজন করদাতার ৫০ কোটি টাকার অধিক নিট সম্পদ থাকলে, শেয়ার বাজার হতে অর্জিত ৫০ লাখ টাকার অতিরিক্ত আয়ের ওপর তাকে ১৫ শতাংশ হারে কর এবং প্রদেয় কর ১৫ শতাংশের ওপর ৩৫ শতাংশ অর্থাৎ ৫.২৫ শতাংশ সারচার্জসহ মোট ২০.২৫ শতাংশ কর ও সারচার্জ দিতে হবে। তবে করদাতার নিট সম্পদের পরিমাণ ৫০ কোটি টাকার কম হলে সারচার্জের হার ৩৫ শতাংশের পরিবর্তে কম হারে (১০%/২০%/৩০%) হতে পারে। সেক্ষেত্রে আয়কর ও সারসার্জের মোট হার নিট সম্পদের ভিত্তিতে ২০.২৫ শতাংশ হতে আরও কম হবে। স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতাসহ অন্যান্য সব করদাতার ১ জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ৩০ জুন সময়কালে (করবর্ষ-২০২৫-২০২৬) স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানির সিকিউরিটিজ লেনদেন থেকে ৫০ লাখ টাকার অধিক অর্জিত মূলধনী মুনাফার ওপর প্রদেয় আয়কর ও সারচার্জ বাবদ সর্বোচ্চ করের হার ৪০.৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০.২৫ শতাংশ করায় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে আগ্রহী হবেন বলে মনে করে এনবিআর।