রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদী এখন জলশূন্য। জেগে উঠেছে চর। বর্ষা মৌসুমে তিস্তার রুদ্ররূপ ভুলে যাওয়া চরের বাসিন্দারা এখন ব্যস্ত হয়ে পড়েছে তিস্তার বুকে ফসল ফলানোয়। নানা ধরনের শীতকালীন ফসলের চাষ হচ্ছে মাঠে মাঠে। খেতে সার দেওয়া, আগাছা পরিষ্কার করা, পানি দেওয়া, ফসলের যত্ন নেওয়াসহ নানা কাজে সময় পার করছে চরের কৃষকেরা। বর্ষা এলে ক্ষতিগ্রস্থ হয় চরের মানুষ। নদী ভাঙনের শিকার হয় শত শত ঘরবাড়ি । মাছ ধরা, পশু পালন ও কৃষিকাজের উপরই নির্ভর এই চরাঞ্চলের বেশির ভাগ পরিবার। এখন তিস্তা তাদের কাছে আর্শীবাদ। তাই শুকনো মৌসুমে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ভালো ফসল ফলানোর সুযোগ নষ্ট করতে চায় না তারা। উপজেলার ধামুর বাঁধেরপাড়, গান্নারপাড়, বোল্লারপাড়, বুড়িডাংগি, শিঙ্গীমারী, মিয়াজী পাড়া, চিলাখাল চর, চর মটুকপুর, খলাইর চর, বিনবিনা, সাউদপাড়া, আলে কিশামত ও উত্তর কোলকোন্দ বাঁধেরধার, বাগডোহরা, মিনার বাজার, চর নোহালী, বৈরাতী,কচুয়া, শংকরদহ, চর ইচলী, বাগেরহাট, চর চল্লিশসাল, বাগেরহাট, কাশিয়াবাড়ি, চর ছালাপাক, রামদেব, কামদেব, মহিষাশুর, তালপট্টি, নরসিংহ, আলাল চর, পাইকান, হাজীপাড়া, ব্যাঙপাড়া এলাকাসহ বিভিন্ন চরে গিয়ে দেখা যায় কৃষকরা আলু, মিষ্টি কুমড়া, পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, সরিষা, কলাই, ধনিয়া, খিরা, লালশাক সহ বিভিন্ন সবজির চাষ শুরু করেছেন। সদর ইউনিয়নের গান্নারপাড় এলাকার কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান এ বছর ২ একর জমিতে আলু চাষ করেছেন তিনি। কেবল পাতা গজাচ্ছে খেতে। মাত্র ৭০ দিনে ঘরে আলু তোলা সম্ভব হবে। এতে তার খরচ হবে প্রায় ৮০ হাজার টাকা। ফলন ভালো ও বাজারে দাম ভালো হলে বেশ লাভ হবে বলে আশাবাদী তিনি। একই এলাকার কৃষক বাবলু মিয়া ৯০ শতাংশ জমিতে রসুন লাগিয়েছেন। তিনি জানান, রসুন উঠানোর পরে একই জমিতে ভুট্টা/বাদাম চাষ করবেন। এছাড়া ইরি ধানের চাষও করবেন তিনি। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শরিফুল ইসলাম বলেন, বর্ষার সময় বন্যার পানিতে এখানকার বেশির ভাগ জায়গাই তলিয়ে যায়। ফলে জমিতে পলিমাটি পড়ে প্রতি বছরই। এ কারণে ফসল ভালো হয়। পরিচর্যা করলে নানা ধরনের ফসল ফলানো সম্ভব। চরে শীতকালেই বেশি ব্যস্ত থাকে কৃষক। বেশির ভাগ মানুষের কাজই থাকে ফসলের মাঠে। এ মৌসুম থেকে শুরু হওয়া চাষবাদ চলে বর্ষা পর্যন্ত।