রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ০৫:৩০ অপরাহ্ন

দিনাজপুরের হিলিতে বিদেশি ফল মালবেরি চাষে রোকনুজ্জামানের সফলতা

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫

জেলার হাকিমপুর উপজেলার হিলিতে বিদেশি উচ্চ পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ মালবেরি ফল চাষে সফলতা অর্জন করেছেন যুবক রোকুনুজ্জামান সরকার। সরেজমিনে গিয়ে জেলার হাকিমপুর উপজেলার হিলি সীমান্তের বালিপুকুর গ্রামের আব্দুর রহিমের পুত্র রোকনুজ্জামানের (৩০) সঙ্গে কথা হয়। মা রোকেয়া বেগম, স্ত্রী লায়লা বেগম এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে তার সংসার। ছোট ভাই রাতুল সেনাবাহিনীতে কর্মরত রয়েছেন।
রোকনুজ্জামান জানান এস এস সি পাস করার পর চাকরির পিছনে না ছুটে তিনি কৃষি কাজে মনোনিবেশ করেন। বিদেশি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ মালবেরি ফলের চাষ সম্পর্কে জানান, শখের বসে ইউটিউব দেখে এ পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ মালবেরি ফল স্থানীয় কৃষি বিভাগের সহায়তায় চাষ শুরু করেন। এখন বাণিজ্যিক ভাবে প্রথম বারের মতো ফলটির চাষ শুরু করেছেন তিনি।
হাকিমপুর উপজেলা কৃষি বিভাগের মাঠ কর্মকর্তা সাইদুর রহমান বলেন, তুঁত ফলের ইংরেজি নাম মালবেরি। এটি মিষ্টি ও পুষ্টিকর ফল হিসেবে পরিচিত। তুঁত গাছের বিভিন্ন প্রজাতি রয়েছে এবং এর ফল সাধারণত কালো, লাল বা সাদা রঙের হয়ে থাকে। মালবেরি নামটি পরিচিত না থাকলেও গ্রামাঞ্চলে ফলটিকে তুঁত ফল হিসেবে চেনে সবাই। তুঁত গাছের পাতা রেশম উৎপাদনের গুটি পোকার প্রিয় খাদ্য। সে হিসেবে এটি তুঁত ফল হিসেবেই বেশি পরিচিত।
দিনাজপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালে পুষ্টিবিদ নাইমা ফেরদৌস বলেন, মালবেরি ফল ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ফাইবার এবং বিভিন্ন অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, যা স্বাস্থ্যকর খাদ্যের একটি অংশ হিসেবে বিবেচিত। মালবেরি আয়রন সমৃদ্ধ, তাই এ ফল গ্রহণে শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ফলে রক্ত স্বল্পতা রয়েছে এমন মানুষের জন্য এ ফলটি অত্যন্ত উপকারী। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য পাকা তুঁত ফল উপকারী। এছাড়া পাকা ফল বায়ু ও পিত্তনাশক, দাহনাশক, কফনাশক ও জ্বর নাশক। তুঁত গাছের ছাল ও শিকড়ের রস কৃমিনাশক।
উদ্যোক্তা রোকনুজ্জামান জানান, জেলার হাকিমপুর জেলার হিলির খট্টামাধবপাড়া ইউনিয়নের বালিপুকুর গ্রামের তার লিচুর বাগানে দু’বছর আগে একটি মালবেরি গাছের চারা রোপণ করেন। পরের বছরই গাছে ফল আসতে শুরু করে। গত বছর ৩৬ হাজার টাকার মালবেরি ফল ও ২৮ হাজার টাকার মালবেরি ফলের চারা গাছ বিক্রি করেছেন। ফলটির আবাদ ছড়িয়ে দিতে চারা উৎপাদন করছেন উদ্যোক্তা রোকনুজ্জামান।
রোকনুজ্জামান সরকার বলেন, ‘দু’বছর আগে সিলেটে মালবেরি ফলের গাছ দেখে ছিলাম। ফলটি দেখতে সুন্দর ও সুস্বাদু হওয়ায় একটি চারা সংগ্রহ করে আমার লিচু বাগানে রোপণ করেছি। পরের বছরই গাছে ফল আসতে শুরু করে। প্রথমে ফলটি সবুজ আকার ধারণ করে, এরপর লাল বর্ণের হয়। পুরোপুরি পেকে কালো হয়।
কাঁচা অবস্থায় সবুজ বর্ণের মালবেরি একটু টক। হালকা পাকা ধরলে লাল বর্ণের হয়, তখন টক-মিষ্টি। আর পুরোপুরি পেকে কালো বর্ণের হলে প্রচুর মিষ্টি লাগে ফলটি। হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজেনা বেগম জানান, হিলির বালিপুকুর গ্রামের কৃষক রোকনুজ্জামান সরকার প্রথমবারের মতো মালবেরি ফলের আবাদ করেছেন। এরই মধ্যে তার গাছে ফল আসতে শুরু করেছে। ফল বিক্রিও করছেন তিনি। মালবেরির চারাও উৎপাদন করছেন। তবে যারা এ ফল চাষে আগ্রহী তারা প্রথমবার একটি বা দু’টি গাছ দিয়ে শুরু করবেন। সফল হলে পরবর্তী সময় বড় পরিসরে চাষের পরামর্শ দেন তিনি। পাশাপাশি ফলের আবাদ বাড়াতে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলেও জানিয়েছেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com