প্রথমে ক্রীড়া উপদেষ্টার অসন্তষ্টি, এরপর আট বোর্ড পরিচালকের অনাস্থা, শেষ পর্যন্ত পদ হারিয়ে ফারুক আহমেদের বিসিবি সভাপতি হিসেবে ৯ মাসের যাত্রাটা ছিল- ‘বিতর্কিত, ব্যর্থতায় ভরা ও বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য সবচেয়ে বাজে সময়ের একটি’। তার জায়গায় নতুন সভাপতি হয়েছেন- আমিনুল ইসলাম বুলবুল।
গত বৃহস্পতিবার রাতে ফারুক আহমেদের কাউন্সিলরশিপ বাতিলের পর বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম বুলবুল পেয়েছেন কাউন্সিলর হিসেবে অনুমোদন।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক এই অধিনায়ক, বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের হয়ে এশিয়া অঞ্চলে ডেভেলপমেন্ট অফিসার হিসেবে কাজ করেছেন আফগানিস্তান, চীন, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে।
অবশ্য সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেয়া ফারুক আহমেদ বিবিসিকে জানিয়েছেন, রাতে এমন তাড়াহুড়ো করে নেয়া সিদ্ধান্ত তিনি এত সহজে মেনে নেবেন না। ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপ ইস্যুতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল আইসিসি’র দ্বারস্থ হবেন বলেও গণমাধ্যমে জানিয়েছেন সাবেক এই
ক্রিকেটার ও প্রধান নির্বাচক।
গতকাল শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়েছে, ‘কাউন্সিলরশিপ বাতিলের পরে দেশত্যাগ করেছেন ফারুক আহমেদ’।
এই খবরের পাল্টা জবাব হিসেবে ফারুক আহমেদ সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ‘আমি কি ৫ আগস্টের ফ্যাসিস্ট নাকি? পলিটিশিয়ান নাকি যে দেশ ছেড়ে পালাবো।’
শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে রদবদলের ধারায় ২১ আগস্ট বোর্ড পরিচালক হন ফারুক।
পরে তিনি সভাপতি নির্বাচিত হন। ৯ মাস পর তার ওই মনোনয়ন বাতিল করে দিলো জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ- এনএসসি।
ক্রিকেট সাংবাদিক মাঝহারুল ইসলাম বলেন, ‘এই সময়টা ছিল বেশ বিতর্কিত, বিশেষ করে বিপিএল নিয়ে তামাশা ও চান্ডিকা হাথুরুসিংহের বিদায় ছিল উল্লেখযোগ্য, ব্যর্থতায় ভরা এই সময়েই বাংলাদেশ ওয়ানডে ক্রিকেটে আইসিসির র?্যাঙ্কিংয়ে দশ নম্বরে নেমে এসেছে- এটা বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য অন্যতম বাজে একটা সময়।’
এই সময়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়ে নেতিবাচক আলোচনাই বেশি হয়েছে। মাঝহারুল ইসলামের মতে, যেভাবে একজন কোচের বিদায় হয়েছে সেটা গ্রহণযোগ্য নয়।
তবে আর্থিক যেসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে সেগুলো নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে আলাপ করা উচিৎ বলেই মনে করছেন বিশ্লেষক ও পর্যবেক্ষকরা। মাঝহারুল ইসলাম বলেন, ‘কেবল অভিযোগের ভিত্তিতে আর্থিক বিষয়ে শেষ কথা বলাটা উচিৎ না, এখানে ডিফেমেশনের ব্যাপার আছে। সুনির্দিষ্ট তদন্ত প্রয়োজন এই ক্ষেত্রে।’
কী কী অভিযোগ ফারুক আহমেদের বিপক্ষে?
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনেছেন বোর্ডেরই আটজন পরিচালক।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বরাবর একটি চিঠি দিয়ে বোর্ড সভাপতির ওপর অনাস্থা জ্ঞাপন করেন এই আট পরিচালক।
নাজমূল আবেদীন, সাইফুল আলম স্বপন, ইফতেখার রহমান, মাহবুবুল আনাম, ফাহিম সিনহা, কাজী ইনাম আহমেদ, মনজুর আলম ও সালাহউদ্দিন চৌধুরী- এই আট পরিচালকের স্বাক্ষর ছিল চিঠিতে।
অভিযোগের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর ছিল- বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড কার্যক্রম পরিচালনা ও দায়িত্ব বণ্টনের ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাচারিতা ও একক আধিপত্য বিস্তার, যে কারণে বোর্ড পরিচালকেরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেননি।
একক সিদ্ধান্তে এক ব্যাংক থেকে আরেক ব্যাংকে টাকা সরানোর ব্যাপারটিও উঠে এসেছে।
বাংলাদেশের সাবেক কোচ চান্ডিকা হাথুরুসিংহের অপসারণের কথাও উঠে এসেছে এই অভিযোগের তালিকায়। ফারুক আহমেদ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের দায়িত্ব নেয়ার অনেক আগে থেকেই হাথুরুসিংহের কোচিং-এর কড়া সমালোচক ছিলেন, তবে সেটা মূলত গণমাধ্যমে।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের দায়িত্ব নেয়ার দিনই ফারুক আহমেদ চান্ডিকা হাথুরুসিংহেকে সরানোর বিষয়ে আগের অবস্থানে আছেন বলে উল্লেখ করেন গণমাধ্যমে।
২১ আগস্ট তিনি বলেন, ‘হাথুরুসিংহের সাথে চুক্তিটা কী, সেটা আমি ঠিক জানি না। আমি তাকে না রাখার বিষয়ে, আগের জায়গাতেই আছি। আমি যা বলেছি, সেটা থেকে সরে যাইনি। এখন আমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জিনিস দেখতে হবে।’
পরিচালকদের অভিযোগনামায় উল্লেখ করা হয়েছে, জাতীয় দলের প্রধান কোচ পরিবর্তনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে বিসিবির সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৪(ব) অনুযায়ী পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন নেয়া বাধ্যতামূলক।
কিন্তু সভাপতি ফারুক আহমেদ সেই বিধান উপেক্ষা করে এককভাবে প্রধান কোচকে অপসারণ করেন, যা বিসিবির সংবিধান লঙ্ঘনের শামিল। এছাড়াও, বিকল্প কোচ খুঁজে বের করার কোনো উদ্যোগ না নিয়েই বিসিবির সাথে চুক্তিভুক্ত বিভিন্ন বিশেষায়িত কোচদের অপসারণ করা হয়েছে। এই কোচদের অপসারণের ক্ষেত্রে পরিচালকদের কোনো মতামত বা সুপারিশ গ্রহণ করা হয়নি। সব সিদ্ধান্তই সভাপতির একক ইচ্ছায় নেয়া হয়েছে, যা সংবিধান পরিপন্থী এবং সভাপতির ক্ষমতার অপব্যবহার হিসেবে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, হাথুরুসিংহে বরখাস্ত হওয়ার আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে পাকিস্তানের মাটিতেই দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে এক ঐতিহাসিক জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।
২০২৪ সালের অক্টোবরে, অর্থাৎ ফারুক আহমেদ দায়িত্ব নেয়ার দুই মাসের মাথায় বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ চান্ডিকা হাথুরুসিংহেকে ‘অপেশাদার আচরণ’ এবং ‘চুক্তিভঙ্গের’ অভিযোগে বরখাস্ত করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
বিসিবি জানায়, হাথুরুসিংহেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয় এবং তার জবাব পাওয়ার পর জরুরি বোর্ড সভায় তার সাথে চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তাৎক্ষণিকভাবে এই বরখাস্ত কার্যকর হয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ভারতে অনুষ্ঠিত ক্রিকেট বিশ্বকাপের সময় এক জাতীয় ক্রিকেটারকে চড় মারার অভিযোগ ওঠে হাথুরুসিংহের বিরুদ্ধে। যদিও বিসিবির পক্ষ থেকে ওই অভিযোগ এখনো পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়নি। বিসিবির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সব দিক বিবেচনা করে বোর্ড মনে করেছে হাথুরুসিংহের ব্যাখ্যা অসন্তোষজনক ও গ্রহণযোগ্য নয়। তার কার্যক্রম অপেশাদার আচরণ ও দায়িত্বে অবহেলার শামিল। ফলে তাৎক্ষণিকভাবে তার চুক্তি বাতিল করা হয়েছে।’
এক সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ বলেন, ‘ঘটনাটা পত্রিকা থেকে জানার পর থেকেই আমি খুবই হতাশ। আমি কাউকে পক্ষপাত করতে চাই না, তবে মাঠে অনেক সময় আবেগে অনেক কিছু ঘটে যায়।’
‘তবে আপনি একজন জাতীয় দলের খেলোয়াড়কে মারতে পারেন না। এটি একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। সঠিক শাস্তিই হয়েছে। বরং আরো আগেই হওয়া উচিত ছিল।’
হাথুরুসিংহে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে অস্ট্রেলিয়ান গণমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘বিসিবি কর্তারা আমার ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দিয়েছে।’
তার দাবি তিনি কখনোই কোনো ক্রিকেটারের গায়ে হাত তোলেননি।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ টি-২০ টুর্নামেন্ট নিয়েও অভিযোগ রয়েছে ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে, বিপিএলে দুর্বার রাজশাহীসহ আরো একটি দুর্বল দলকে নিয়ম অনুযায়ী যাচাই-বাছাই না করেই খেলার সুযোগ দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ।
পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে তিনি এককভাবে এই সিদ্ধান্ত নেন।
এমনকি নিয়ম অনুযায়ী ব্যাংক গ্যারান্টির অর্থও গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
এনিয়ে পহেলা ফেব্রুয়ারি ২০২৫, গণমাধ্যমের কাছে দায় স্বীকার করেছিলেন ফারুক আহমেদ। বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ তখন সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, তিনি মনে করেন, এমন কর্মকা- বিপিএলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে। বিপিএলের এবারের আসরের আগে ফ্যাঞ্চাইজি দেয়ার সময় ঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করা হয়নি সেই দায়ও স্বীকার করে নিয়েছেন বিসিবি সভাপতি।
ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে অভিযোগের মধ্যে আরো ছিল-
বোর্ডের কমিটি পুনর্গঠনে গড়িমসি।
স্বেচ্ছাচারিতা ও একক আধিপত্যের কারণে পরিচালকদের স্বাভাবিক কাজে বিঘœ ঘটানো।
এককভাবে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ।
একেরপর এক দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজে বিসিবির অভ্যন্তরে অস্থিরতা ও দেশ ও বিদেশে ক্রিকেট বোর্ডের সুনাম নষ্ট করা।
দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছাঁটাই না করে বাড়তি সুবিধা দেয়া।
সব মিলিয়ে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অসন্তুষ্টি ও বিসিবির আট পরিচালকের লিখিত অভিযোগের পর ফারুক আহমেদ আরো বিপাকে পড়েন।
তবে তিনি গতকাল পর্যন্ত পদত্যাগ করতে অসম্মতি জানান, পরে রাত ১১টার দিকে এক প্রজ্ঞাপন দিয়ে জাতীয় ক্রীড়া কাউন্সিল তার মনোনয়ন বাতিল করে দিয়েছে।
ফারুক আহমেদ কী বলছেন?
সপ্তাহজুড়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে বড় রদবদলের নানা গুঞ্জনের মধ্যেই বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ আনুষ্ঠানিকভাবে তার পদ হারান।
বুধবার তিনি জানান, ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ তাকে আর দায়িত্বে দেখতে চান না।
এরপর আটজন পরিচালকের চিঠির ভিত্তিতে ফারুক আহমেদ জানিয়ে দেন, তিনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবেন না। একই রাতে, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এক বিবৃতিতে তার কাউন্সিলরশিপ বাতিল করে, যার ফলে সভাপতির পদ থেকেও তিনি অপসারিত হন।
এ বিষয়ে গণমাধ্যমে ফারুক আহমেদ বলেন, তিনি বিষয়টিকে সহজে মেনে নিচ্ছেন না এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) সাথেও যোগাযোগ করছেন।
বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে একটি সংঘবদ্ধ ষড়যন্ত্র চলছে। এতদিন বোর্ড মিটিংয়ে যেসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, তখন কেউ আপত্তি করল না কেন?’ বিসিবি সভাপতি হওয়ার আগেও ফারুক আহমেদ ছিলেন দেশের ক্রিকেট অঙ্গনের পরিচিত মুখ। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশের প্রথম ওয়ানডে বিশ্বকাপ দলে তিনি ছিলেন এবং সেই বিশ্বকাপেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানান। পরবর্তীতে তিনি প্রধান নির্বাচকসহ বিসিবির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন, যদিও বোর্ডের সাথে দ্বন্দ্বের কারণেই একপর্যায়ে প্রধান নির্বাচকের পদ থেকে সরে দাঁড়ান।
আইসিসির নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকি আছে?
ক্রিকেট বোর্ডের স্বাধীন কার্যপরিচালনায় সরকারি হস্তক্ষেপ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল বেশ গুরুত্বের সাথে দেখে, ২০২৩ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল শ্রীলঙ্কাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছিল দেশটির ক্রিকেট বোর্ডের ওপর সরকারের হস্তক্ষেপের অভিযোগে। আইসিসির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শ্রীলঙ্কা ‘একটি স্বাধীন ক্রিকেট সংস্থা হিসেবে নিজেদের পরিচালনার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে’ এবং সংবিধান অনুযায়ী কোনো সদস্য রাষ্ট্রের মতো ‘সরকারি হস্তক্ষেপ ছাড়াই’ কার্যক্রম পরিচালনার শর্ত ভঙ্গ করেছে।
তখন বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার হতাশাজনক পারফরম্যান্সের প্রেক্ষাপটে দেশটির ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ক্রিকেট বোর্ডের (এসএলসি) কর্ককর্তাদের বরখাস্ত করে, যদিও আদালতের রায়ে সেই সিদ্ধান্ত পরবর্তীতে বাতিল হয়। ক্রীড়ামন্ত্রী রোশান রানাসিংহে সংসদে এক বিবৃতিতে এসএলসি-কে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত ও দেশদ্রোহী’ বলে অভিহিত করেন এবং বোর্ডের সদস্যদের পদত্যাগের আহ্বান জানান। এরই ধারাবাহিকতায় বোর্ডের সচিব মোহন ডি সিলভা পদত্যাগ করেন এবং পুরো বোর্ডকে ভেঙে দেয়া হয়। আইসিসি জানিয়েছে, বরখাস্তের চূড়ান্ত পরিণতি ও সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা আগামী বোর্ড সভায় নির্ধারণ করা হবে।
তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি নেই বলছেন বিশ্লেষকরা। সিনিয়র ক্রিকেট সাংবাদিক মোহাম্মদ সেকান্দার আলী বলেন, ‘বিসিবি তার গঠনতন্ত্রে একটি আইন রেখে দিয়েছে- জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে পাঁচজন কাউন্সিলর ও দু’জন পরিচালক মনোনয়ন।’ এই বিধান অনুযায়ীই ফারুক আহমেদ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কাউন্সিলরশিপ পেয়েছিলেন এবং সভাপতি হয়েছিলেন, তখনো অনেকে আইসিসির নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কা করলেও এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক এই সংস্থা। সূত্র : বিবিসি