মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৯:১৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
শামছুর রহমান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বৃক্ষ রোপণ উদ্বোধন করেন মেজর অব. মেসবাহুল ইসলাম ইলন মাস্কের রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্যোগ ‘হাস্যকর’ : ট্রাম্প ফ্রান্সে বাংলাদেশ দেশ কমিউনিটির সমাবেশ ও মেধাবীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ এবার ভারতীয় মিডিয়ায় ড. ইউনূস বন্দনা! নেপথ্যে কী? অগ্রগতি ছাড়াই শেষ ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের আলোচনা সেন্টমার্টিন-টেকনাফে পানিবন্দি দুই হাজার মানুষ কেউ কেউ সীমা লঙ্ঘন করেছেন, সেটা হয়তো ভিন্নভাবে দেখা হবে রাষ্ট্র সংস্কারের সব বিষয়ে আমরা একমত হবো না: আলী রীয়াজ নির্বাচন যত দেরি হবে, দেশ তত পিছিয়ে যাবে: মির্জা ফখরুল শুধু এশিয়া না, বাংলাদেশকে বিশ্বমঞ্চে নিতে চাই: ঋতুপর্ণা

মেহেরপুরে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে দেশী মাছের চাষ বাড়ছে

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ১৫ জুন, ২০২৫

কৃত্রিমভাবে দেশীয় প্রজাতির মাছ চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় জেলায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে দেশী মাছ চাষ বাড়ছে। শিং, মাগুর, কৈ, টেংরা, পুঁটি ইত্যাদি জাতের মাছ স্বাদে ও গুণে উন্নত। ভোক্তাদের কাছে এর চাহিদাও বেশি। ফলে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে দেশী মাছ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন মাছ চাষিরা।
মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, দেশী মাছ সাধারণত কম রাসায়নিক ব্যবহারে চাষ করা যায়। এগুলো অধিক স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ। দেশী জাতের মাছ পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও তুলনামূলকভাবে বেশি। দেশী মাছ চাষে রোগের প্রকোপ তুলনামূলক কম এবং খাদ্য, ওষুধ বা রক্ষণাবেক্ষণের খরচও অনেকটাই সহনীয়। এ কারণে মেহেরপুরে প্রতিবছরই দেশী মাছ চাষ বাড়ছে। এতে লাভবান হচ্ছেন মাছ চাষিরা।
মেহেরপুর জেলা মৎস্য বিভাগের উদ্যোগে মেহেরপুর সদর, মুজিবনগর ও গাংনী উপজেলায় রাজস্ব খাতের আওতায় দেশী মাছ চাষের জন্য ৩টি প্রদর্শনী প্লট তৈরি করা হয়েছে। জেলাতে ১৯ জন মৎস্য চাষি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে দেশী জাতের মাছ চাষের সাথে জড়িত।
জেলার সবচেয়ে বড় মৎস্য খামারি শাহিন মল্লিক সদর উপজেলার ঝাউবাড়িয়া গ্রামে ২৪ বিঘা জমিতে ৬টি পুকুরে মাগুর, শিং, ট্যাংরা, পাবদা, পুটিসহ দেশী মাছের চাষ করেছেন।
সরেজমিনে শাহিন মল্লিকের মৎস্য খামারে গিয়ে দেখা যায়, পারিবারিক প্রয়োজনেও নিজস্ব পুকুর থেকেই টেংরা মাছ সংগ্রহ করছেন। এভাবেই নিজের পরিবারের মাছের চাহিদা মিটিয়েও তিনি সফলভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছেন।
বাসসের সাথে আলাপকালে শাহিন মল্লিক জানান, ২০১১ সালে প্রথম তিনি ক্যাটফিস জাতের মাছ চাষ শুরু করেন। বছরে কোটি টাকার বেচাকেনায় এ পর্যন্ত গড়ে বার্ষিক ২০ লাখ টাকা লাভ করে আসছেন। তবে মাছের খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে লাভ কিছুটা কমে গেছে। তিনি জানান, এই মাছ বছরে একবার চাষ করা যায়।
শাহীন আরও জানান, বাড়ির পাশে ছোট পুকুর, ডোবা বা খালেও দেশী মাছ চাষ করে লাভবান হওয়া যায়। অল্প জায়গায়ও দেশী মাছ চাষ করে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে আয় করা সম্ভব। ভবিষ্যতে শাহিন মল্লিক তার চাষের পরিসর আরও বাড়ানোর পাশাপাশি একটি নিজস্ব হ্যাচারি স্থাপনের পরিকল্পনা করছেন। এতে তিনি নিজেই পোনা উৎপাদন করে কম খরচে মাছ চাষ করতে পারবেন এবং অন্যান্য চাষিদেরও সহায়তা করতে পারবেন বলে আশা করছেন।
তার সাফল্য দেখে বর্তমানে জেলার অনেক তরুণ এবং শিক্ষিত যুবকও বাণিজ্যিকভাবে দেশি মাছ চাষে যুক্ত হচ্ছেন।
মেহেরপুরের মাছ ব্যবসায়ী ভক্ত হালদার বাসসকে বলেন, ইলিশ ও হাইব্রিড জাতের বিভিন্ন ধরনের মাছ বিক্রি করি। ইলিশের পরেই দেশীয় জাতের মাছের চাহিদা। অতিথি আপ্যায়নে ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এখন ছোট মাছের চাহিদা বেড়েছে। ফলে ভালো দাম পাওয়া যায়।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সাধন চন্দ্র সরকার বাসসকে বলেন, দেশী প্রজাতির মাছ খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত, স্বাস্থ্যকর প্রোটিনের চাহিদা পূরণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বড় ভূমিকা রাখছে।
তিনি বলেন, জেলায় ১৯ জন মৎস্য চাষি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে দেশী প্রজাতির মাছ চাষ করছেন। দেশী মাছের চাষ আমাদের জলজ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সহায়তা করে, যা পরিবেশের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। একজন সফল চাষি বার্ষিক ১৫ টন দেশী মাছ উৎপাদন করে লক্ষাধিক টাকা আয় করতে পারেন। প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি ব্যবহার ও সরকারি সহায়তার মাধ্যমে এই খাত আরও সম্প্রসারিত হচ্ছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com