মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৫:৫২ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
শামছুর রহমান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বৃক্ষ রোপণ উদ্বোধন করেন মেজর অব. মেসবাহুল ইসলাম ইলন মাস্কের রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্যোগ ‘হাস্যকর’ : ট্রাম্প ফ্রান্সে বাংলাদেশ দেশ কমিউনিটির সমাবেশ ও মেধাবীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ এবার ভারতীয় মিডিয়ায় ড. ইউনূস বন্দনা! নেপথ্যে কী? অগ্রগতি ছাড়াই শেষ ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের আলোচনা সেন্টমার্টিন-টেকনাফে পানিবন্দি দুই হাজার মানুষ কেউ কেউ সীমা লঙ্ঘন করেছেন, সেটা হয়তো ভিন্নভাবে দেখা হবে রাষ্ট্র সংস্কারের সব বিষয়ে আমরা একমত হবো না: আলী রীয়াজ নির্বাচন যত দেরি হবে, দেশ তত পিছিয়ে যাবে: মির্জা ফখরুল শুধু এশিয়া না, বাংলাদেশকে বিশ্বমঞ্চে নিতে চাই: ঋতুপর্ণা

আজ পবিত্র আশুরা

ইসলাম ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫

পবিত্র আশুরা আজ। আশুরা শব্দের অর্থ দশম। সৃষ্টির শুরু থেকে নানা ঘটনার কারণে হিজরি মহররম মাসের দশম দিনটি তাৎপর্যপূর্ণ। সবশেষ ফোরাত নদীর তীরে কারবালার প্রান্তরে শেষ নবি হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হজরত হোসাইন (রা.)-এর শাহাদত বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের কাছে শোক ও ত্যাগের মহিমাময় অনুষজ্ঞ। এ দিনটিতে বিশ্বের মুসলমানদের মতো বাংলাদেশের মুসলমানরাও নামাজ-রোজাসহ বিভিন্ন নফল ইবাদত করে থাকেন। শিয়া সম্প্রদায় তাজিয়া মিছিল বের করে থাকে। দিনটি উপলক্ষ্যে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশন আয়োজন করেছে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল। আজ সরকারি ছুটির দিন।
আরবি বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস মহররম। এটি একটি বরকতময় মাস। আরবি বার মাসের মধ্যে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন চারটি মাসকে পবিত্র বলে ঘোষণা করেছেন। তার মধ্যে অন্যতম মাস মহররম। পবিত্র কোরআনে সুরায়ে তাওবার ৩৬তম আয়াতে আল্লাহ বলেন-
‘আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকেই আল্লাহর বিধানে আল্লাহর কাছে নিশ্চয়ই মাসসমূহের সংখ্যা হল বারো মাস। এর মধ্যে চারটি মাস হল নিষিদ্ধ (পবিত্র)।’
আশুরা শব্দের অর্থ দশম। মোবারক এ মাসের দশ তারিখকে আশুরা বলে। আল্লামা নববি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, তাসুআ, আশুরা দুটি মদ্দযুক্ত নাম। অভিধানের গ্রন্থাবলিতে এটিই প্রসিদ্ধ। আশুরা হচ্ছে মহররম মাসের দশম দিন। আর তাসুআ সে মাসের নবম দিন। জমহুর ওলামারাও তা-ই বলেছেন। হাদিসের আপাতরূপ ও শব্দের প্রায়োগিক ও ব্যবহারিক চাহিদাও তাই। ভাষাবিদদের নিকট এটিই প্রসিদ্ধ।
বছরের ফজিলতপূর্ণ দিনগুলোর মধ্য থেকে আশুরা অনন্য। এ দিন রোজা রাখার ফজিলত সম্পর্কে হাদিসের কিতাবাদিতে বেশ কিছু বর্ণনা পাওয়া যায়। রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার আগে আশুরার রোজা রাখা সবার জন্যে জরুরি ছিল। এব্যাপারে বুখারির বর্ণনা এমন-
হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, জাহিলিয়াতের যুগে কুরাইশগণ আশুরার রোজা পালন করতো এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও এদিন রোজা রাখতেন। যখন তিনি মদিনায় আগমন করেন তখনও এ রোজা পালন করেন এবং তা পালনের নির্দেশ দেন। যখন রমজানের রোজা ফরজ করা হলো তখন আশুরার রোজা ছেড়ে দেওয়া হলো, যার ইচ্ছা সে পালন করবে আর যার ইচ্ছা পালন করবে না।’
এরপর থেকে এদিন রোজা রাখা যদিও জরুরি নয় কিন্তু অধিক ফজিলতপূর্ণ। এ ব্যাপারে হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে- ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনায় আগমন করে দেখতে পেলেন যে, ইহুদিগণ আশুরার রোজা পালন করে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, কি ব্যাপার? (তোমরা এ দিনে সাওম পালন কর কেন?) তারা বলল, এ অতি উত্তম দিন, এ দিনে আল্লাহ তাআলা বনি ইসরাইলকে তাদের শত্রুর কবল থেকে নাজাত দান করেন, ফলে এ দিনে মুসা (আলাইহিস সালাম) রোজা পালন করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আমি তোমাদের অপেক্ষা মুসার বেশি কাছাকাছি। এরপর তিনি এ দিনে রোজা পালন করেন এবং রোজা পালনের নির্দেশ দেন।’ (বুখারি)
আশুরার রোজা দ্বারা পেছনের এক বছরের গুনাহ মাফ হয়। এ ব্যাপারে হজরত কাতাদা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে-‘আশুরার রোজা সম্পর্কে আমি আল্লাহর কাছে আশাবাদী যে, তাতে পূর্ববর্তী বছরের গুনাহসমূহের কাফফারাহ হয়ে যাবে।’ (মুসলিম)
যেহেতু এদিনে ইহুদি এবং মুশরিকরাও রোজা রাখে তাই আমাদের জন্য উচিত, তাদের সঙ্গে সামঞ্জস্যতা এড়িয়ে চলা। সুতরাং আশুরার দিনের সঙ্গে আগের দিন অর্থাৎ মহররমের ৯ তারিখ অথবা পরের দিন অর্থাৎ ১১ তারিখের রোজা রাখা উত্তম।
আশুরার রোজা রাখার পদ্ধতি সম্পর্কে হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে-‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন আশুরার দিন রোজা পালন করেন এবং লোকদেরকে রোজা পালনের নির্দেশ দেন। তখন সাহাবিগণ বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! ইহুদি এবং নাসারা এ দিনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে থাকে। এ কথা শুনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ইন শা আল্লাহ আগামী বছর আমরা নবম তারিখেও রোজা পালন করবো। বর্ণনাকারী বলেন, এখনও আগামী বছর আসেনি, এমতাবস্থায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইন্তেকাল হয়ে যায়।’ (মুসলিম)
পাশাপাশি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইচ্ছানুযায়ী রোববার সঙ্গে শনিবার অর্থাৎ মুহররামের ৯ তারিখও রোজা রাখবো। আর শনিবার সম্ভব না হলে আশুরার পরদিন সোমবার অর্থাৎ ১১ তারিখ রোজা পালনে সচেষ্ট থাকবো। যাতে করে ইহুদি ও নাসারাদের সঙ্গে সাদৃশ্য না হয়। আল্লাহ আমাদের সবাইকে আশুরার রোজা পালনের তাওফিক দান করুন। আমাদের এ রোজাকে কবুল করে সবাইকে উত্তম বিনিময় দান করুন। আমিন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com