মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:১৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড ‍আদেশ একটা সময় ক্লান্তি চলে আসে, মুশফিকের সেটা হয়নি: বাশার আসল নাকি এআইয়ের বানানো ভিডিও বুঝবেন কীভাবে? চুল কালো রাখতে তামার গ্লাসে পানি পান করতে পারেন প্রথমবার সিনেমায় রিচি সোলায়মান, নায়ক কে? পরিবারে নারী-পুরুষের পারস্পরিক দায়িত্ব ও ইসলামী ভারসাম্য সম্মিলিত ইসলামী ঐক্যজোটের নেতৃবৃন্দের বিএনপি’র মহাসচিবের সাথে জরুরী সভায় অংশগ্রহণ চকরিয়ায় পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযান কাফনের কাপড় পরে শ্রমিকদের বিক্ষোভ সুনামগঞ্জ সদর আসনে বিএনপি জোটের প্রার্থী হিসেবে ব্যারিস্টার আবিদকে চান সকল ভোটাররা অধ্যক্ষ মোঃ সেলিম ভূঁইয়া সহ ১০ জন শিক্ষককে বিএনপি থেকে মনোনয়নের দাবীতে মানববন্ধন

বড়শির টানে বর্ষার জলাশয়ে কালীগঞ্জে শখের মাছ শিকারিদের উৎসব

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫

বর্ষা মানেই শুধু বৃষ্টি নয়-এ সময়টা মাছ শিকারিদের কাছে আনন্দেরও মৌসুম। কেউ জীবিকার তাগিদে, কেউবা নিছক শখে ছুটে যান জলাশয়ের ধারে। গাজীপুরের কালীগঞ্জের বিল-ঝিল, নদী-নালা আর খালের পাড়ে এখন জমে উঠেছে বড়শি ধরার উৎসব। আষাঢ়-শ্রাবণের শুরুতেই যখন চারদিক জলময় হয়ে ওঠে, তখন প্রাণ ফিরে পায় কালীগঞ্জের বিল ও নদীগুলো। সঙ্গে জেগে ওঠে শখের মাছ শিকারিদের দল। কেউ পেশায় ব্যবসায়ী, কেউ শিক্ষক, কেউ চাকরিজীবী-তবে সবারই এক পরিচয়, তারা বড়শির টানে ছুটে আসেন এই জলভরা মাঠে। জেলেরা যেখানে সারা বছর মাছ শিকারেই ব্যস্ত, সেখানে এই শৌখিন শিকারিরা মৌসুমি অভিযানে নামেন। কেউ বড়শি ফেলে নদীর ধারে বসে থাকেন, কেউ আবার ডিঙি নৌকা ভাড়া করে চলে যান জলাশয়ের গভীরে। মাছ ধরার আনন্দটাই আলাদা, বলছিলেন বেলাই বিলের এক নিয়মিত শিকারি। দিনভর বসে থেকেও যদি একটা বড় মাছ পাই, তাতেই সারাদিনের ক্লান্তি মুছে যায়। টাকা-পয়সা ওঠে কি না, সেটা ভাবি না। অনেকে জানান, টোপ বানাতে কেউ কেউ শত-হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ করেন। কারও কাছে এটা প্রতিযোগিতা, কারও কাছে ধ্যানের মতো এক অভ্যাস। কালীগঞ্জ উপজেলার বেলাই বিল, আফাইন্নার বিল, অন্যান্য জলাশয় ও শীতলক্ষা নদীতে অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত চলে এই “বড়শি মৌসুম”। সকাল থেকেই ডিঙি নৌকা, বাঁশের চেয়ার, ছাতা, টিফিনবক্স-সব নিয়ে হাজির হন শিকারিরা। বিকেল গড়ালে পাড়ে ভিড় জমে দর্শকদেরও। কেউ কৌতূহল নিয়ে দেখেন, কেউ পরামর্শ দেন, আবার কেউ মাছ ধরার মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করেন। কালীগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া বলেন, শখের মাছ শিকার আমাদের গ্রামীণ সংস্কৃতির অংশ। এতে মানুষ প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যায়। আমরা চাই, সবাই নিয়ম মেনে শিকার করুক-ছোট মাছ ছেড়ে দিক, জলাশয়ের ভারসাম্য বজায় থাকুক। মাছ ধরা এখন শুধু জীবিকার বিষয় নয়-এটা হয়ে উঠেছে গ্রামীণ বিনোদনের এক অনন্য মাধ্যম। ছুটির দিনে অনেকে পরিবার নিয়ে আসেন, কেউ রান্না করেন ধরা মাছ দিয়েই, কেউবা বন্ধুর সঙ্গে ছোটখাটো প্রতিযোগিতা আয়োজন করেন। বৃষ্টি থামলে, সূর্যের আলো ঝলমল করলে আর জলের ওপর বাতাস দোলে-তখন শুরু হয় বড়শির খেলা। হঠাৎ বড় মাছ টোপে ধরা পড়লে পাড়ে ছড়িয়ে পড়ে উচ্ছ্বাস। কেউ হাসে, কেউ চিৎকার দেয়, আবার কেউ বলে-“এই আনন্দের দাম টাকায় মাপা যায় না! বর্ষা শেষে জল কমে এলেও শিকারিদের মন থেকে বড়শির টান যায় না। তারা বলে, মাছ না ধরলে দিনটা অসম্পূর্ণ লাগে। কালীগঞ্জের জলাশয়গুলো তাই শুধু জীবিকার উৎস নয়-এগুলো এখন মানুষ ও প্রকৃতির সংযোগের প্রতীক। বড়শির ফাঁদে ধরা পড়ে শুধু মাছ নয়, ধরা পড়ে আনন্দ, ধৈর্য আর জীবনের রঙ।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com