গাজীপুরের শ্রীপুরে শত শত মানুষের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেন স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল। রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়ার পর আয়েশা সুলতানা নামে একজন নারী এর প্রতিবাদ করেন। রাস্তাটি খোলে দেওয়ার জন্য বার বার অনুরোধ করেন আয়েশাসহ স্থানীয় ভোক্তভুগিরা। এরই সূত্র ধরে গত শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে ওই প্রতিবাদী নারী ও তার পরিবারের ওপর অতর্কিত হামলায় চালায় তোফাজ্জল গং। এ ঘটনায় পাঁচ জনকে অভিযুক্ত করে গত রোববার রাতে শ্রীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন আয়েশা সুলতানা। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, তোফাজ্জল গংরা আয়েশা সুলতানা, তার স্বামী ও মায়ের ওপর হত্যার উদ্দেশ্যে চাইনিজ কুড়াল ও দা দিয়ে হামলা চালায়। এতে তারা গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে তাদের গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয় এবং পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় একটি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। গত শুক্রবার গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের ফুলানির ছিট গ্রামে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি ঘটে। অভিযুক্তরা হলেন তোফাজ্জল হোসেন, জোনায়েদ হোসেন,, জুবায়ের হোসেনসহ দুইজন নারী। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় রাস্তা নিয়ে তোফাজ্জলদের সঙ্গে এলাকাবাসীর বিরোধ চলছিল। আয়েশা সুলতানা স্থানীয়দের পক্ষ নিয়ে রাস্তাটি উন্মুক্ত রাখার দাবি জানালে তোফাজ্জল গংরা ক্ষিপ্ত হয়ে তার ওপর হামলা চালায়। প্রথমে আয়েশাকে কুপিয়ে জখম করা হয়, পরে তার মাকে মারধর করা হয়। অভিযুক্তরা তাদের পাশে বাগান বাড়ির বাউন্ডারি ও গাছপালা কেটে ফেলে। এসব বাধা দিতে গেলে আয়েশার স্বামীকেও বেধড়ক মারধর করে তারা। চিকিৎসাধীন আয়েশা সুলতানা অভিযোগ করে বলেন, তোফাজ্জল ও তার লোকজন আমাদের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয়। আমি প্রতিবাদ করতে গেলে তারা আমাকে বেধড়ক মারধর করে। ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয়রা আমাকে উদ্বার না করলে সেখানেই মৃত্যু হত। আমাকে যে ভাবে কুপিয়ে আহত করেছে আমি যে বেচেঁ আছি এটা আল্লাহ আমাকে প্রাণ ভিক্ষা দিয়েছেন। তারা গায়ের জোরে আমার পৈত্রিক জমি দখল করে রাস্তা বন্ধ করে রেখেছে।
আমার পরিবারের সদস্যদেরও তারা নির্যাতন করে আসছে। আমি এই ঘটনার সঠিক বিচার ও প্রশাসনের কাছে তাদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি। এ বিষয়ে এলাকাবাসীর দাবি, তোফাজ্জল গংদের দৌরাত্ম্যে দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষ ভয়ে থাকে। তারা দ্রুত এই ঘটনার বিচার ও রাস্তা উন্মুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন। হামলার ঘটনাটি অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত তোফাজ্জল। শ্রীপুর থানার ওসি মহম্মদ আব্দুল বারিক জানান, এ ঘটনায় উভয় পক্ষ অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। দোষীদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।